কৃষকদের স্বার্থে দ্বারকেশ্বর ও কানা মুণ্ডেশ্বরী নদীর খাল পরিদর্শনে হুগলি জেলা প্রশাসন

কৃষকদের স্বার্থে হুগলি জেলা পরিষদের কৃষি দপ্তরের আধিকারিকরা আরামবাগের মজে যাওয়া খালগুলি পরিদর্শন করলেন বৃহস্পতিবার। মহকুমার খাল সংস্কার ও স্লুইস গেটগুলো সংস্কার হলে উপকৃত হবেন লক্ষাধিক কৃষক। আরামবাগে কানা দ্বারকেশ্বর, কানা মুণ্ডেশ্বরী খালের আমূল সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আরামবাগ মাস্টার প্লানের প্রথম পর্যায়ের কাজে কানা দ্বারকেশ্বর ও আরোরা কালের বেশ কিছুটা অংশ সংস্কার করা হয়েছিল। যদিও সেই কাজ সম্পূর্ণ হয়নি। উল্টে সংস্কার হওয়া খালের অনেক জায়গা আবার নতুন করে মজে গিয়েছে। মহকুমার চাষিদের যার জেরে ক্ষতির মুখে পড়তে হয়েছে।
মিগজাউমের জেরে কিছুদিন আগে হঠাৎ করে টানা বৃষ্টি হয়। বৃষ্টির জমা জল বের হওয়ার পথ না পেয়ে মাঠের পর মাঠ ভাসিয়ে দেয়। ফসল নষ্ট হওয়ায় মহকুমার চাষিরা বিপুল ক্ষতির মুখে পড়েন। চাষিদের তরফে এরপরেই খাল সংস্কারের জোরালো দাবি ওঠে। বৃহস্পতিবার জেলা পরিষদের আধিকারিকরা মজে যাওয়া কানা দ্বারকেশ্বর ও কানা মুণ্ডেশ্বরী খাল পরিদর্শনে এসে মজে যাওয়া অংশগুলি সরেজমিনে খতিয়ে দেখেন। জেলা পরিষদের কৃষি, সেচ সমবায়ের কর্মাধ্যক্ষ মদন মোহন কোলে বলেন, আরামবাগ মাস্টার প্লানের মাধ্যমে ২০১৯ সাল থেকে মহকুমার খালগুলির সংস্কার চলছে। কানা দ্বারকেশ্বর ও কানা মুণ্ডেশ্বরী খাল সুপরিকল্পিতভাবে সংস্কার করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এছাড়াও ভেঙে যাওয়া স্লুইসগেটগুলো নতুন করে সংস্কার করা হবে। খাল সংস্কারের কাজ থমকে থাকা ও পরিকল্পনার সঠিক রূপায়ণ না হওয়া নিয়ে প্রশ্ন করা হলে আধিকারিকরা মুখ খুলতে চাননি।
আরামবাগে পুরসভার ৭, ৮, ১০, ১১, ১৭ নম্বর ওয়ার্ড ও মায়াপুর, হরিণখোলা এলাকা হয়ে কানা দ্বারকেশ্বর খানাকুলে অরোরা খালে মিশেছে। কানা মুণ্ডেশ্বরী খালটির বর্তমান অস্তিত্ব আরান্ডি-২ পঞ্চায়েতের হিয়াৎপুর হয়ে মায়াপুর-১ পঞ্চায়েতের বলরামপুর পর্যন্ত। দুটি খালের জল অরোরা খাল হয়ে রূপনারায়ণে মিশলে আরামবাগ ও খানাকুলের দুটি ব্লকের বিস্তীর্ণ কৃষি জমি প্লাবিত হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে না। একইসঙ্গে খালের জল পতিত এলাকায় পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হবে। জেলা পরিষদের সদস্য সুজাহান বেগম বলেন, হিয়াৎপুর থেকে কড়ুই পর্যন্ত কানা মুণ্ডেশ্বরী একদম মজে গিয়েছে। আরান্ডি, হরিণখোলার বিস্তীর্ণ নিচু জমি এলাকার জল বের হওয়ার কোন পথ নেই। বৃষ্টির জমা জল ফসল নষ্ট করে দেয়। বিষয়টি নিয়ে এলাকার চাষিরা সরাসরি নবান্নে জানিয়েছিলেন। এদিন জেলা পরিষদের কৃষি আধিকারিকরা খালের মজে যাওয়া অংশ পরিদর্শনে যান। সংস্কারের কাজ দ্রুত শুরু করার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
পুরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর স্বপন নন্দী বলেন, পশ্চিম বর্ধমানের মোগলমারী থেকে জমা জল ১৫ নম্বর ক্যানেল দিয়ে আরামাগ পুরসভার বেশ কয়েকটি ওয়ার্ডের ফসলি জমি ডুবিয়ে দেয়। ফসল নষ্ট হয়। এরপরেই বড় খালগুলির সঙ্গে ছোট খালগুলি সংস্কারের জন্য সর্বোচ্চ রাজ্য প্রশাসনের কাছে দরবার করা হয়েছিল। সবমিলিয়ে খালগুলো দ্রুত সংস্কার করার উদ্যোগ নেওয়ায় খুশি এলাকার চাষিরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

one × 1 =