খেলায় সাম্য আসুক, এমন দাবি প্রায়ই ওঠে। প্রাইজমানি থেকে সামাজিক, সব ক্ষেত্রেই ছেলে-মেয়েদের মধ্যে সাম্যের দাবি নতুন নয়। কোথাও মেনে নেওয়া হয়েছে। কোথাও আজও তা হয়নি। এই নিয়ে সোচ্চার হয়েছেন অনেকে মহিলা অ্যাথলিট। হয়তো ভবিষ্যতেও হবেন। খেলার দুনিয়ার পাশাপাশি সামাজিক ভাবে কতটা স্বীকৃতি পান মেয়েরা? উত্তরে বলতে হবে, প্রতি ৫জন মহিলা খেলোয়াড়ের মধ্যে একজনকে অনলাইনে নিগৃহীত হতে হয়। ফিফার সাম্প্রতিক সমীক্ষা তুলে ধরছে এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য। মেয়েদের বিশ্বকাপ ফাইনালে চুমু বিতর্কে মুখ পুড়েছিল ফিফার। সেই আগুন এখনও ধিকিধিকি জ্বলছে। মেয়েদের খেলার জগতে অগ্রাধিকার, নিরাপত্তা দেওয়ার বার্তা তখন থেকেই দিয়ে আসছে বিশ্ব ফুটবলের নিয়ামক সংস্থা। তারই মধ্যে এমন সমীক্ষা কিন্তু চাপে ফেলে দিতে পারে।
২০২২ সালে কাতার বিশ্বকাপে লিওনেল মেসি, ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো, কিলিয়ান এমবাপে সহ যাঁরা খেলেছেন, তাঁদের পাশাপাশি ২০২৩ সালে মেয়েদের বিশ্বকাপে খেলা ১৫২জন মহিলা ফুটবলারের উপর সমীক্ষা চালিয়েছে ফিফা। তাতে দেখা গিয়েছে, মেয়েদের বিশ্বকাপে খেলা ২৯ শতাংশ ফুটবলারকে, আরও ভালো করে বললে প্রতি ৫জনের মধ্যে একজনকে অনলাইনে বৈষম্যমূলক কথা থেকে শুরু করে কটুক্তির মুখে পড়তে হয়। অনেক ক্ষেত্রে হুমকিও দেওয়া হয় তাঁদের। মেয়ে হয়ে ফুটবল খেলা কি শাস্তি? এই প্রশ্ন উঠে যাচ্ছে। ওই সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, অধিকাংশ কটুক্তি যৌন উস্কানিমূলক।
ফুটবলারদের সংগঠন ফিপ্রোর প্রেসিডেন্ট ডেভিড আগাঞ্জোর কথায়, ‘অনলাইনে এই ধরনের যৌন উস্কানিমূলক কথা যে প্লেয়ারদের উপর মানসিক প্রভাব ফেলে, যা কোনও ভাবেই এড়িয়ে যাওয়া যায় না। এমন অনলাইন পরিবেশ কিন্তু যে কোনও প্লেয়ারের পক্ষে ভীষণ ভাবে ক্ষতিকারক। মানসিক ভাবে খারাপ ছাপ রেখে যাচ্ছে। প্লেয়ারকে নিরাপত্তা দেওয়া কিন্তু ফুটবলের দায়িত্ব।’
সোশ্যাল মিডিয়া প্রোটেকশন সার্ভিস বা এসএমপিএস ফিফা চালু করেছে গত বছর থেকে। ফিফার আটটা টুর্নামেন্ট চলাকালীন তা ব্যবহারও করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স ব্যবহার করা হয়েছে। যাতে অনলাইনে ক্ষতিকারক প্রভাব থেকে বাঁচানো যায় ফুটবলারদের। মেয়েদের বিশ্বকাপের সময় ৫১ লক্ষ পোস্ট ও ৩৫ ভাষায় করা কমেন্ট খতিয়ে দেখা হয়েছে। যৌন উস্কানিমূলক মন্তব্য করায় ৪ লক্ষ কমেন্টকে হাইড করা হয়েছে বা রিপোর্ট করা হয়েছে। যা কিন্তু ভাবিয়ে তোলার মতো বিষয়। ফিফা প্রেসিডেন্ট জিয়ান্নি ইনফান্তিনো স্পষ্ট ভাষায় বলেছেন, ‘যে সমস্ত লোক এটা দিনের পর দিন চালিয়ে যাচ্ছে, সোশ্যাল মিডিয়ায় তাদের কোনও জায়গা নেই। থাকতে পারে না। বৈষম্যেরও কোনও জায়গা নেই ফুটবলে, সমাজে।