প্রয়াত সাহারা কর্তা সুব্রত রায়

প্রয়াত সাহারা গ্রুপের কর্ণধার সুব্রত রায়। দীর্ঘদিন ধরে শারীরিক অসুস্থতায় ভুগছিলেন তিনি। মুম্বইয়ের এক বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। সেখানেই মঙ্গলবার রাত সাড়ে দশটা নাগাদ শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।

মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর। দীর্ঘ দিন ধরেই ক্যানসার-সহ একাধিক শারীরিক সমস্যায় ভুগছিলেন তিনি। গত ১২ নভেম্বর শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটায় তাঁকে মুম্বইয়ের কোকিলাবেন ধীরুভাই অম্বানী হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল। সেখানেই মঙ্গলবার তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। রেখে গেলেন তাঁর স্ত্রী স্বপ্না রায়, দুই পুত্র সুশান্ত এবং সীমান্ত রায়কে।

সাহারা ইন্ডিয়া পরিবারের পক্ষে বিবৃতি দিয়ে সুব্রতের মৃত্যুর খবর জানানো হয়েছে। বিবৃতিতে আরও জানানো হয়েছে, মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ তাঁর মৃত্যু হয়েছে। বহু দিন ধরেই ক্যানসার, উচ্চ রক্তচাপ, শ্বাসকষ্ট, মধুমেহ ছাড়াও হৃদযন্ত্রের সমস্যায় ভুগছিলেন তিনি। তাঁর মৃত্যুতে সমাজমাধ্যমে শোকপ্রকাশ করেছে সমাজবাদী পার্টি (সপা)। সাহারা ইন্ডিয়া পরিবার বিবৃতি জারি করে। বলা হয়, ‘অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে সাহারা ইন্ডিয়া পরিবার সুব্রত রায়ের প্রয়াণের খবর জানাচ্ছে। একজন দূরদৃষ্টিসম্পন্ন মানুষ, অনেকের কাছে ছিলেন অনুপ্রেরণা। আজ রাত ১০টা ৩০ মিনিটে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। দীর্ঘদিন হাইপারটেনশন, ডায়াবিটিস এবং মেটাস্টেটিক ক্যানসারে ভুগছিলেন। এদিন হৃদরোগে মৃত্যু হয়। সুব্রত রায়কে হারানোর যন্ত্রণায় শোকস্তব্ধ সাহারা ইন্ডিয়া পরিবার।’ আজ শেষকৃত্য।

১৯৪৮ সালের ১০ জুন বিহারের আরারিয়াতে জন্মগ্রহণ করেন সুব্রত। গোরক্ষপুর টেকনিক্যাল ইনস্টিটিউট থেকে তিনি মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতক হন। ১৯৭৬ সালে ধুকতে থাকা চিটফান্ড সংস্থা ‘সাহারা ফিনান্স’কে অধিগ্রহণ করেন। ১৯৭৮ সালে সেটি নাম বদলে হয় ‘সাহারা পরিবার’। ক্রমেই ভারতের মানচিত্রে নিজেকে এক জন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেন তিনি। তাঁর হাত ধরেই আর্থিক প্রতিষ্ঠান, আবাসন শিল্প, সংবাদমাধ্যম এবং হোটেল ব্যবসা-সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সাম্রাজ্য বিস্তার করেছিল সহারা। ১৯৯২ সালে ‘রাষ্ট্রীয় সাহারা’ নামে হিন্দি সংবাদপত্রের সূচনা করেন তিনি। এর কয়েক বছর পরেই হাত দেন তাঁর স্বপ্নের প্রকল্পে। পুণেতে ১০ হাজার একরেরও বেশি জায়গা জুড়ে শুরু করেন ‘অ্যাম্বি ভ্যালি প্রকল্প’। এর পরে তিনি একটি টিভি চ্যানেলও চালু করেন। লন্ডনের গ্রসভেনর হাউস হোটেল এবং নিউ ইয়র্কের প্লাজা হোটেলের মতো নামী হোটেলও অধিগ্রহণ করেন তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

three × three =