জিতল ম্যাক্সওয়েল (২০১*), অবিশ্বাস্য হার আফগানদের

অস্ট্রেলিয়া ড্রেসিংরুমে লেখা, ‘আই ক্যান ডু ইট, আই উইল ডু ইট’। লেখার এই ‘আই’ হয়ে উঠলেন গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। বিশ্বকাপের মঞ্চে অস্ট্রেলিয়া সর্বাধিক ২৮৬ রান তাড়া করে জিতেছিল অস্ট্রেলিয়া। আফগানদের হারাতে হলে রেকর্ড গড়তে হত। বোর্ডে ২৯২ রানের লক্ষ্য। নবীন উল হক এবং আজমতউল্লাহ ওমরজাইয়ের অনবদ্য বোলিং। সঙ্গে যোগ দেন স্পিনাররা। মাত্র ৯১ রানে ৭ উইকেট হারায় অস্ট্রেলিয়া। সেখান থেকে জয়! ছয় মেরে ডাবল সেঞ্চুরি এবং ম্যাচ ফিনিশ করেন গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। তাঁর অবিশ্বাস্য ইনিংসে সেমিফাইনালও নিশ্চিত অস্ট্রেলিয়ার।

ম্যাচের আগের দিন সচিন তেন্ডুলকরের পরামর্শ। মাস্টার ব্লাস্টারের উপস্থিতি বাড়তি প্রেরণা জুগিয়েছে আফগান শিবিরকে। মাঠের পারফরম্যান্সে সেটাই দেখা গেল। ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে আফগান ক্রিকেটের নতুন অধ্যায়। সামনে পাঁচ বারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন। এর আগে তিন সাক্ষাতে তিন বারই হার। গত দুটি ওডিআই বিশ্বকাপের মঞ্চে অস্ট্রেলিয়ার কাছে বড় ব্যবধানে হেরেছে আফগানরা। এ বারের বিশ্বকাপে অবশ্য নতুন আফগান টিমকে দেখা গিয়েছে। ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডকে হারিয়ে চমক দিয়েছিল তারা। অঘটন হিসেবেই দেখা হয়েছিল সেই ম্যাচ। তবে অঘটন বারবার হয় না।

প্রাক্তন চ্যাম্পিয়ন পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কাকেও হারায়। তিনটি চ্যাম্পিয়ন দলকে হারানো, গত ম্যাচে নেদারল্যান্ডসকে হারিয়ে সেমিফাইনালের স্বপ্ন আরও উজ্জ্বল করেছিল আফগানিস্তান। তবে টুর্নামেন্টের সবচেয়ে কঠিন ম্যাচে নেমেছিল তারা। গত তিন ম্যাচে রান তাড়া করে সাফল্য পেয়েছে আফগানিস্তান। অজিদের বিরুদ্ধে টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন আফগান অধিনায়ক। অধিনায়কের সিদ্ধান্ত সঠিক প্রমাণ করেন আফগান ব্যাটাররা। বিশেষ করে বলতে হয় ইব্রাহিম জাদরানের কথা। টুর্নামেন্টে দুর্দান্ত ছন্দে রয়েছেন ইব্রাহিম। অবশেষে বিশ্বকাপের মঞ্চে সেঞ্চুরিও করেন। ১২৯ রানে অপরাজিত থাকেন ইব্রাহিম জাদরান। শেষ দিকে ১৮ বলে ৩৫ রানের ক্যামিও ইনিংস রশিদ খানের।

অস্ট্রেলিয়াকে ২৯২ রানের বড় লক্ষ্য দেয় আফগানিস্তান। ওয়াংখেড়েতে স্পিনের জন্য বাড়তি সুবিধা নেই। আফগানিস্তান একাদশে চার স্পিনার। রশিদ খান, মুজিব উর রহমান, মহম্মদ নবিরা যে কোনও মাঠেই ভয়ঙ্কর। তাঁদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়তে পারতেন তিন ব্যাটার। ট্রাভিস হেড, ডেভিড ওয়ার্নার এবং গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। প্রথম দু-জন স্পিন আক্রমণ শুরুর আগেই প্য়াভিলিয়নে।

ব্যক্তিগত ৩৩ রানে ম্যাক্সওয়েলের ক্যাচ ফসকান মুজিব উর রহমান। একটি এলবির ক্ষেত্রে রিভিউতে বাঁচেন। এরপরই ম্যাক্সির তাণ্ডব। মাত্র ৭৬ বলে সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন ম্যাক্সওয়েল। পায়ে চোট থাকায় ঠিকঠাক দৌড়তে পারছিলেন না। বড় শটেই ইনিংস এগিয়ে নিয়ে যান ম্যাক্সি। আফগানিস্তানের মেন্টর অজর জাডেজা বার্তা পাঠান টিমকে। তাতেও ম্যাক্সিকে আটকানো যায়নি। ৪১ তম ওভারে ক্র্যাম্পে মাঠেই শুয়ে পড়েন। ফিজিও আসেন দ্রুত। তাঁকে মাঠ ছাড়ার পরামর্শও দেওয়া হয়। যদিও ম্যাক্সি মাঠ ছাড়েননি। রান নিতে পারছিলেন না। বাউন্ডারি-ওভার বাউন্ডারিতেই বেশির ভাগ রান। খুব প্রয়োজনে হেঁটে রান নিয়েছেন। একার হাতেই ম্যাচ জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন। দলের রান ২৯৩ এর মধ্যে ম্যাক্সওয়েল ১২৮ বলে ২০১ রানে অপরাজিত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

thirteen + 9 =