আদানির চাপে পড়েই বিরোধী সাংসদদের ফোন ও ইমেল হ্যাক করা হচ্ছে বলে দাবি করলেন রাহুল গান্ধি। মঙ্গলবার মহুয়া মৈত্র, শশী থারুর, প্রিয়াঙ্কা চতুর্বেদী-সহ বেশ কয়েকজন সাংসদের ফোনে নজরদারি চালানোর অভিযোগ ওঠে। ইতিমধ্যেও এই ঘটনায় স্পিকারকে চিঠি দেবেন বলে জানিয়েছেন মহুয়া। হ্যাকিংয়ের অভিযোগ প্রকাশ্যে আসার পরে সাংবাদিক সম্মেলন করেন রাহুল গান্ধি।
রাহুল বলেন, সরকারের ‘বন্ধু’ আদানিদের বিরুদ্ধে মুখ খুলেছেন বলেই এই সাংসদদের নিশানা করা হচ্ছে। তবে কংগ্রেস সাংসদের সাফ দাবি, ফোনে নজরদারি চালালেও তাঁরা ভয় পান না। মহুয়ার বিস্ফোরক অভিযোগ প্রকাশ্যে আসার পরেই সাংবাদিক সম্মেলন করেন রাহুল গান্ধি। সেখানেই সরাসরি আদানির দিকে আঙুল তোলেন। সাফ জানিয়ে দেন, আসলে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হচ্ছেন আদানি। তার পরে রয়েছেন মোদি-শাহরা। আদানির চাপেই সাংসদদের ফোন হ্যাক করা হচ্ছে। যারাই আদানির বিরুদ্ধে মুখ খুলেছে বেছে বেছে তাদেরই ফোন, ইমেলে হ্যাকিং চলছে। তবে রাহুলের দাবি, দরকার পড়লে নিজেদের ফোন দিয়ে দেবেন। কিন্তু নজরদারি চালিয়ে কোনও লাভ হবে না।
রাহুল বললেন, ‘দেশের মানুষের কষ্টার্জিত অর্থ আদানি ট্যাক্স হয়ে ঢুকছে আদানির পকেটে। আমরা কয়লা ব্যবহার করছি, তাতে আদানি ট্যাক্স, ট্রেনে চড়ছি, তাতে আদানি ট্যাক্সে। এ ভাবেই দেশের মানুষের অর্থ আদানির মোদি সরকারের কৌশলে গিয়ে ঢুকছে আদানির পকেটে।’
প্রধানমন্ত্রীকে আক্রমণ করে রাহুল বললেন, ‘দেশকে ভুয়ো স্বপ্ন দেখিয়ে চোখ বন্ধ করে রাখছেন প্রধানমন্ত্রী মোদি। এই সমস্যার কথা খুব কম লোকই বলেন। আমরা বলছি। তাই এই সব হ্যাকিং, ইডি-সিবিআই, সতর্কবার্তা আসছে। কিন্তু আমরা ভয় পাওয়ার মানুষ নই, লড়াই করব।’
রাহুল বললেন, ‘আদানির হাতে দেশের সমস্ত জাহাজ বন্দর তুলে দিয়েছেন, সমস্ত বিমানবন্দর তুলে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী মোদি। দেশের খাবারের মূল উৎস যে কৃষিক্ষেত্র, তার আইনও বানিয়ে দেওয়া হয়েছে আদানির সুবিধা করে দিতে। পরিকাঠামো জনিত ব্যবসা তাঁর হাতে। আপনি রাস্তা দিয়ে হাঁটবেন সেই রাস্তা তৈরির সিমেন্টও আদানির হাতে। পুরো দেশটাই আদানির মতো তিন চার জনের হাতে তুলে দিচ্ছেন মোদি।’
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার সকালেই একটি টুইট করে মহুয়া জানান, তাঁর ফোন ও ইমেল হ্যাক করার চেষ্টা চলছে। সাংসদ বলেন, ‘অ্যাপেল থেকে আমার কাছে একটি নোটিফিকেশন এসেছে। সেখানেই সাফ বলা হয়, রাষ্ট্রের মদতপুষ্ট সংস্থাগুলো আমার আইফোন হ্যাক করার চেষ্টা করছে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কি কোনও কাজ নেই?’ মহুয়ার টুইট থেকেই জানা যায়, শশী থারুর, অখিলেশ যাদব, রাঘব চাড্ডা, প্রিয়াঙ্কা চতুর্বেদী- সকলের ফোনেই নজরদারি চালাচ্ছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক।