বোর্ডে মাত্র ২২৯ রান। সামনে গত বারের চ্যাম্পিয়ন। ফর্মে না থাকলেও ইংল্য়ান্ড যে কোনও সময়ই ভয়ঙ্কর। আর এত কম রানের পুঁজি নিয়ে তাদের আটকানো সহজ নয়। কিন্তু সেটাই এত সহজ হবে, বুমরা-সামি জুটিতে বোলিংয়ের আগে বোঝা যাচ্ছিল না। রান তাড়ায় দুর্দান্ত শুরু করে ইংল্যান্ড। মনে হচ্ছিল, লখনউয়ে অবশেষে ‘হাসি’ ফিরবে ইংল্যান্ড প্লেয়ারদের মুখে। তবে মহম্মদ সামি এবং জসপ্রীত বুমরা জুটির হাড়হিম করা বোলিং, মাঝের ওভারে কুলদীপ-জাডেজার ধারাবাহিকতা, ভারতকে ১০০ রানের বিশাল জয় এনে দিল। পরিস্থিতি বলছে, সেমিফাইনাল নিশ্চিত ভারতের। যদিও অঙ্কে এখনও একশো শতাংশ নিশ্চিত নয়। তবে সেমিফাইনালে এক পা ফেলে রাখল টিম ইন্ডিয়া, নিশ্চিত করাই যায়।
ব্যাটিং আক্রমণের সামনে যেমন চ্যালেঞ্জ ছিল, তেমনই বোলিং বিভাগের কাছেও। তারা প্রথমে বোলিং করতে অভ্যস্ত। এই বিশ্বকাপে প্রথম ডিফেন্ড করতে নেমেছিল ভারত। বোর্ডে মাত্র ২২৯ রানের পুঁজি। বোলারদের থেকে সেরা পারফরম্যান্স না পেলে জেতার কোনও পথ নেই। শুরুটাও দুর্দান্ত। সিরাজ অবশ্য নতুন বলে লাইন-লেন্থ বুঝে উঠতে পারছিলেন না। বেশ কিছু ওয়াইড হল। তাঁকে মাত্র ২ ওভার করিয়েই সামিকে আক্রমণে আনেন রোহিত শর্মা। বুমরা এক ওভারে জোড়া ধাক্কা দেন। সামি প্রথম ওভারে দেন মাত্র ৩ রান। উইকেট পাওয়া যেন সময়ের অপেক্ষা। তাঁর টেস্ট ম্যাচ নিখুঁত লাইন-লেন্থে দিশেহারা ইংল্যান্ড। ডিফেন্স করবেন না আক্রমণ, দ্বিধায় ছিলেন ইংল্যান্ড ব্যাটাররা। বেন স্টোকস চাপ হালকা করার জন্য শট খেলার চেষ্টা করেন। তাঁর উইকেট ছিটকে দেন সামি। নিজের দ্বিতীয় ওভারে উইকেট মেডেন।
বেয়ারস্টোকে ফেরানোর সুযোগ এসেছিল বুমরার। ফ্লাইং স্লিপে কঠিন ক্যাচ ফসকান বিরাট কোহলি। নতুন ওভারে এসেই বেয়ারস্টোকে প্লেড-অন করেন মহম্মদ সামি। বুমরা-সামি জুটিকে সামলানো ক্রমশ কঠিন হয়ে পড়ে। ৩০-০ থেকে ৩৯-৪! সামি প্রথম স্পেলে ৪-১-৫-২। অপেক্ষা ছিল সিরাজের ছন্দে ফেরার। নতুন স্পেলে ভালো বোলিং করেন। তবে সামি-বুমরা জুটি সরতেই রাশ কিছুটা আলগা হয়। ১৪তম ওভারে কুলদীপকে আক্রমণে আনেন রোহিত। নিজের দ্বিতীয় ওভারেই ব্রেক থ্রু কুলদীপের। ইংল্যান্ড অধিনায়ক বাটলারের ডিফেন্স ভেঙে বোল্ড করেন।
জুটি গড়ার মরিয়া চেষ্টা করে ইংল্যান্ড। লিয়াম লিভিংস্টোন ও মইন আলি ভরসা দিচ্ছিলেন। মহম্মদ সামি দ্বিতীয় স্পেল শুরু করেন মইনের উইকেটে। রান রেটের চাপ বাড়তে থাকে ইংল্যান্ড শিবিরে। জাডেজার বিরুদ্ধে স্টেপ আউট করে স্টাম্প ক্রিস ওকস। ইংল্যান্ডের অলআউট এবং ভারতের জয় শুধুই অপেক্ষা হয়ে দাঁড়ায়। লিভিংস্টোনকে ফিরিয়ে আরও চাপ বাড়ান কুলদীপ। ইনিংসের ৩৪ তম ওভারের শেষ বলে আরও একবার উইকেট ছিটকে দেন সামি। ভারতের প্রয়োজন ছিল আর এক উইকেট। সেই অপেক্ষা বাড়াননি বুমরা। ১২৯ রানেই অলআউট ইংল্যান্ড। সামির ৪, বুমরার ৩ উইকেট।