একই পরিবারের তিনজনের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধারে চাঞ্চল্য

নিজস্ব প্রতিবেদন, আসানসোল: মহাষষ্ঠীতে মর্মান্তিক ঘটনা ঘটল আসানসোলের কুলটি থানার বরাকরের নালি পাড়া এলাকায়। বাড়িতে ঘরের ভেতর থেকে গলায় দড়ি দেওয়া ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার হল বাবা, মা ও ছেলের ঝুলন্ত দেহ। শুক্রবার বিকেলের এই ঘটনায় গোটা এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। এদিন সন্ধ্যা সাতটা নাগাদ কুলটি থানার পুলিশ তিনটি মৃতদেহ উদ্ধার করে আসানসোল জেলা হাসপাতালে নিয়ে আসে। শনিবার সকালে তিনটি মৃতদেহর ময়নাতদন্ত করা হবে।
প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশের অনুমান, আর্থিক সংকটের কারণে দুর্গাপুজোর মহাষষ্ঠীর দিন বাবা ও মা এবং ছেলে একসঙ্গে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। পুলিশ মৃতদের আত্মীয় পরিজনদের সঙ্গে কথা বলে ঠিক কী কারণে তা¥রা এই চরম সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তা জানার চেষ্টা করছে। মৃত তিনজনের নাম হল সুদীপ্ত রায় (৬৬), শ্বেতা রায় (৫৩) ও অগ্নিশংকর রায় (২৯)।
কুলটি থানার পুলিশ সূত্র থেকে জানা গিয়েছে, রায় বাড়ি থেকে পুলিশ আলাদা আলাদা তিনটি সুইসাইড নোট বা চিঠি উদ্ধার করেছে। তবে সেগুলোতে ঠিক কী লেখা আছে তা নিয়ে পুলিশের তরফে জানায়নি। তবে অন্য একটি সূত্র থেকে জানা গিয়েছে, তিনজন তাঁদের এই মৃত্যুর জন্য কাউকে দায়ী করেননি। স্থানীয় বাসিন্দা তথা রায় পরিবারের প্রতিবেশীরা জানান, শুক্রবার সকালেও বাবা সুদীপ্ত রায়, মা শ্বেতা রায় ও তাঁদের ছেলে অগ্নিশংকর রায়কে এলাকায় ঘুরতে দেখা গিয়েছিল। আর বিকেল পাঁচটার সময় তাঁদের মৃতদেহ পাওয়া যায়। তাঁদের অনুমান, দুপুরের দিকে এই ঘটনা ঘটেছে।
সূত্র থেকে আরও জানা গিয়েছে, রায় দম্পতির ছেলে অগ্নিশংকর রায় বাড়িতে গিয়ে ছেলেমেয়েদের প্রাইভেট টিউশন পড়াতেন। তিনি বরাকরের একটি রাষ্ট্রায়ত্ত্ব ব্যাংকের শাখা থেকে বেশ কিছু টাকা ঋণ নিয়ে কোনও ব্যবসায় নামেন। তারপর তাঁর মাও কিছু টাকা অন্য একটি ব্যাংক থেকে ব্যবসা বাড়ানোর জন্য ঋণ নিয়েছিলেন। কিন্তু সেই ব্যবসা বাড়ানো তো দূরের কথা, রায় পরিবার চরম আর্থিক সংকটে পড়ে গিয়েছিল। বরাকরের ওই দুই রাষ্ট্রায়ত্ত্ব ব্যাংকের ঋণের টাকা তাঁরা শোধ করতে পারছিলেন না। এরজন্য ব্যাংকের উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের সঙ্গে তাঁরা কথাও বলেছিলেন। আস্তে আস্তে এই পরিবারের ওপর সংকট নেমে আসে। সেই কারণেই তিনজন পরিকল্পনা করে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করার সিদ্ধান্ত নেন বলে মনে করা হচ্ছে। তাঁরা তাঁদের কিছু জিনিস কাপড়ে করে বেঁধে আলমারি থেকে বাইরে রেখেছিলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

12 − seven =