আতিথেয়তায় যেমন কার্পণ্য নয়, মাঠের লড়াইয়েও ছাড় নয়। ২০১৬’র পর ফের ভারতে এসেছে পাকিস্তান ক্রিকেট টিম। যদিও এই টিমের এক-দুজন ছাড়া কেউই অতীতে ভারতে আসেননি। বিশ্বকাপের আগে নানা বিষয়ে বায়নাক্কা করেছে পাকিস্তান। বিশ্বকাপ খেলতে ভারতে না আসারও হুঁশিয়ারি দিয়েছে সে দেশের বোর্ড। ভারতে এসে পাকিস্তান ক্রিকেটাররা আপ্লুত। হায়দরাবাদি বিরিয়ানি, আতিথেয়তায় মুগ্ধ হয়েছেন বাবররা। ম্যাচে যে কোনও আতিথেয়তা থাকবে না, এ আর নতুন কী! ভারতের লক্ষ্য ছিল বিশ্বকাপের ‘মোমেন্টাম’ ধরে রাখা। পাকিস্তানেরও একই লক্ষ্য়। তবে বিশ্বকাপের পরিসংখ্যান বদলাতে দিল না টিম ইন্ডিয়া। ওডিআই বিশ্বকাপে এই ম্যাচের পর ভারতের পক্ষে স্কোরলাইন ৮-০। ব্যাটিং-বোলিং নিয়ে পাকিস্তানের গর্বের শেষ নেই। গত ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে রেকর্ড রান তাড়া করে জিতেছিল পাকিস্তান। ভারতের বিরুদ্ধে টস হেরে ব্যাটিংয়ে শুরুটাও দারুণ হয়। কিন্তু বিপর্যয় এ ভাবেও হয়। ১৫৫-২ থেকে ১৭১-৭, মাত্র ১৬ রানে ৫ উইকেট পড়ল পাকিস্তানের। কোনও পরিকল্পনা না থাকার জন্যই কি এই হাল। নাকি ভারতীয় বোলারদের অতিরিক্ত গুরুত্ব দিতে গিয়ে ডুবল বাবরের টিম? ক্রিজে তখন জমিয়ে বসছেন বাবর আর রিজওয়ান। পার্টনারশিপ ক্রমশ বাড়ছে। চাপ বাড়ছে ভারতের উপর। তৃতীয় স্পিনার হিসেবে রবিচন্দ্রন অশ্বিনকে খেলানোর কথা আগের দিন বলেছিলেন রোহিত। তারপরও কেন অভিজ্ঞ অফস্পিনারকে রাখলেন না? রোহিতকে বাঁচিয়ে দিলেন কুলদীপ যাদব আর বুমরা। ভুল বললাম? কুলদীপ, বুমরার বদলে যদি এই দুটো নাম বাবর, রিজওয়ান বলা হয়, আশ্চর্য হবে না আমেদাবাদ। সেট হয়েও আউট হবেন পাক ব্যাটিংয়ের দুই সেরা মুখ? ১৭১/৭ এর পর পাকিস্তান যে ২০০ পার করতে পারবে না, ভবিষ্যদ্বাণী করার জন্য মোতেরা পুরস্কার রাখেনি। পাকিস্তানও নিরাশ করেনি। ৪২.৫ ওভারে ১৯১এ থামল বাবরের টিম। দুটো করে উইকেট নিয়ে গেলেন বুমরা, কুলদীপ, সিরাজ, হার্দিক, জাডেজা। রান তাড়ায় নজর ছিল ভারতের ব্যাটিং তাগিদে। লক্ষ্য ছোট হোক বা বড়, আক্রমণাত্মক ক্রিকেটেই নজর টিম ইন্ডিয়ার। সুস্থ হয়ে অবশেষে ফিরলেন প্রিন্স অফ ক্রিকেট। বিশ্বকাপ অভিষেকে প্রথম ডেলিভারিতেই বাউন্ডারি। মনে হয়নি গুরুতর অসুস্থতা থেকে ফিরেছেন। তবে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে শাদাব খানের একটা অনবদ্য ক্যাচ। বড় ইনিংস খেলা হল না শুভমনের। পিচের অসমান বাউন্স সমস্য়ায় ফেলছিল। বিরাট কোহলি এমনই একটা ডেলিভারিতে ফিরলেন। মাত্র ১৯২ রানের লক্ষ্যে নামলেও গাছাড়া ভাব দেখা যায়নি টিম ইন্ডিয়ার। রোহিত শর্মার ক্যাপ্টেন্স নক। অল্পের জন্য টানা দ্বিতীয় সেঞ্চুরি এল না তাঁর ব্যাটে। ৮৬ রানের ইনিংসে ভরসা দিলেন। ভারতীয় শিবিরে এই ম্যাচে নানা প্রাপ্তির মাঝে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাটিং অর্ডারে ৪ নম্বর পজিশন। শ্রেয়স আইয়ারের ওপর ভরসা রেখেছিল টিম ম্যানেজমেন্ট। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে স্বস্তির হাফসেঞ্চুরি। ৭ উইকেটের বড় জয়। পারফরম্যান্সে কোনও ‘ম্যাচই’ হল না। ১১৭ বল বাকি থাকতেই এক পেশে জয়ে, এ বারের বিশ্বকাপে হ্যাটট্রিক ভারতের।