নিজস্ব প্রতিবেদন, বাঁকুড়া: পুজোর আগে বাঁকুড়া শহরের বাসিন্দা অর্পিতা সরকার বানালেন এক ইঞ্চি দৈর্ঘ্যের টেরাকোটার দুর্গা। ১ ইঞ্চির এই পূর্ণ প্রতিমাতে মা ছাড়াও রয়েছেন লক্ষ্মী, সরস্বতী এবং কার্তিক, গণেশ।
বাঁকুড়া জেলার বিষ্ণুপুর কিংবা পাঁচমুরার টেরাকোটার বিশেষ চাহিদা রয়েছে। বিষ্ণুপুরের মল্ল রাজার আমল থেকে সংরক্ষিত আছে টেরাকোটার বিশেষ নিদর্শন। সেরকমই পাঁচমুরার ঘোড়া একপ্রকার জগৎ বিখ্যাত। এবার বাঁকুড়ার এই গৃহবধূ ঐতিহ্যবাহী টেরাকোটা বেছে নিয়ে বানালেন এক ইঞ্চির দুর্গা। এর আগে একটি আলপিনের মাথায় তিনি তৈরি করেছিলেন মা দুর্গার মুখমণ্ডল, যার দৈর্ঘ্য ছিল এক সেন্টিমিটারের ১০ ভাগের ১ ভাগ। বাড়ির অন্যান্য কাজ ছাড়াও শিল্পের প্রতি বিশেষ টান রয়েছে অর্পিতা সরকারের। সেই টান থেকেই নতুন শিল্প ভাবনা নিয়ে আসেন তিনি। ১ ইঞ্চি দৈর্ঘ্যের টেরাকোটার মা দুর্গা বানিয়ে জেলায় তাক লাগিয়ে দিয়েছেন তিনি। মাত্র দু’দিন সময় ব্যয় করে তৈরি করেছেন এই অদ্ভুত সুন্দর মা দুর্গার প্রতিমা। কী ভাবে এত সুক্ষ শিল্পচর্চা করেন জানতে চাওয়ায় অর্পিতাদেবী বলেন, ‘যা করি খালি চোখেই করি, আজ পর্যন্ত কোনও অসুবিধা হয়নি। যেকোনও বস্তুর মধ্যেই রয়েছে সৌন্দর্য্য। শিল্পীর চোখ সেই সৌন্দর্যকে খুঁজে নেবে এবং সেই কারণেই আমি অপ্রয়োজনীয় বস্তু দিয়ে শিল্পচর্চা করি।’
মা আসছেন, আর হাতে গোনা কয়েকটা দিন। চারিদিকে আগমনীর সুর শোনা যাচ্ছে। কাশ ফুলের সঙ্গে নীল আকাশের মতোই যেন বাঁকুড়ার এই গৃহবধূর তৈরি অপরূপ সুন্দর টেরাকোটার দুর্গা যেন সেই আগমনীর বার্তা দিচ্ছে। দুই সন্তানের মা অর্পিতা বর্তমানে বাঁকুড়া শহরের কেন্দুয়াডিহির বাসিন্দা। যে কোনও বিশেষ উৎসবের আগে তিনি তৈরি করে থাকেন নজরকাড়া শিল্প। বিশেষ করে ক্ষুদ্র কিংবা সূক্ষ্ম শিল্পচর্চাগুলি বিশেষভাবে জনপ্রিয়তা লাভ করে। মূলত গৃহস্থের ঘরে যেসব জিনিস আর ব্যবহার করা হয় না সেই সব জিনিস দিয়েই তিনি শিল্পচর্চা করেন। পুজো আসার আগে অর্পিতার এই কর্মকাণ্ডে যথেষ্ট গর্বিত বাঁকুড়া জেলার মানুষ।