চুঁচড়ার মেয়ে তিতাসের সাফল্যে গর্বে ভাসছে বাংলা

খেলা শুরুর পর থেকে টেলিভিশনে সারাক্ষণ চোখ রেখে বসেছিলেন তিতাস সাধুর ঠাকুমা। বাড়ির মেয়ে বিদেশ বিভুঁইয়ে প্রতিপক্ষকে কেমন কাত করে দিচ্ছে, সে দৃশ্যে চোখ ছলছল করে উঠছিল তৃপ্তি সাধুর। একটাই আফশোস শেষের ওভারগুলো দেখতে পাননি। টিভি সেটের সামনে থেকে সরেছিলেন মাত্র। এরপরই হই হই বাড়িতে। ভারত জিতেছে। প্রথমবার এশিয়াডে মেয়েদের ক্রিকেটে অংশ নিয়েছে ভারত। আর তাতেই বাংলার মেয়ের হাত ধরে এল সোনা। এখন তিতাস একটি সোনার মেয়ের নাম। এশিয়ান গেমস ২০২৩-এ ভারতীয় মহিলা ক্রিকেট দলে খেলছেন চুঁচুড়ার তিতাস সাধু। এশিয়ান গেমসের ফাইনালে তিতাস চার ওভার বল করে ছয় রান দিয়ে তিন উইকেট নিয়েছেন। এক ওভার মেডেন। তাঁর এই পারফর্ম্যান্সেই সোনা জয়ের স্বপ্ন শেষ হয় শ্রীলঙ্কার। আর ভারত এশিয়ান গেমসে দ্বিতীয় সোনা জেতে। ঠাকুমা তৃপ্তি সাধু বলেন, “খুবই ভাল লাগছে। তবে একটাই খারাপ লাগছে, শেষের দিকে খেলাটা দেখতে পারিনি। প্রথম থেকে খেলাটা দেখছিলাম। আমি তখন সবে উপরে গিয়েছি। তখনই হইহই। মেয়েটা আমাদের সবদিকেই ভাল। এত ভাল মেয়ে দেখা যায় না। ও আরও উঁচুতে উঠুক, আরও বড় হোক এটাই চাই। ও জিতবে আমাদের ভরসা ছিল। খুব অধ্যাবসায় ওর। এটাই ওকে এতটা সাফল্য এনে দিল।” ইতিমধ্যেই বিভিন্ন পুজো উদ্যোক্তারা ফোন করতে শুরু করেছেন তিতাসের বাড়িতে। কলকাতা থেকেও ফোন আসছে, বলছিলেন তিতাসের কাকা। সকলেই চাইছেন এবার তাঁদের মণ্ডপে একবার আসুক তিতাস।কাকা রক্তিম সাধু বলেন, “একের পর এক অ্যাচিভমেন্ট। প্রথমে যখন দীপ্তি শর্মার বলে ১২ রান হয়ে গেল একটু চিন্তায় ছিলাম। কিন্তু দারুণ খেলল মেয়েটা। মনে হচ্ছে ওই যেন বেস্ট প্লেয়ার হয়ে যাচ্ছে। ওর কাছে আমার আশা ছিল। তবে এত ভাল পারফর্ম্যান্স। সকলে ওকে গোল্ডেন গার্ল বলছে, কাকা হিসাবে এর থেকে গর্বের আর কী বা হতে পারে। চুঁচুড়া শহর এখন তিতাসময় হয়ে গিয়েছে।” এদিন চুঁচুড়ায় তিতাসের কলেজ রোডের বাড়িতে আসেন তাঁর কোচ দেবদুলাল রায়চৌধুরীও। বলছিলেন, “প্রথম থেকেই খুব মন দিয়ে খেলেছে ও। জেলাস্তর থেকে রাজ্যস্তরের ম্যাচ খেলেছে যেমন, বিশ্বকাপেও তেমন নিজেকে প্রমাণ করেছে। প্রত্যেক ফাইনালে যে ভাল খেলছে, এটা ওরই কৃতিত্ব। মাথা ঠান্ডা রেখে খেলতে পারাটাই ওর ইউএসপি। ছোট থেকেই কোনও কিছুতে ঘাবড়ে না গিয়ে খেলে গিয়েছে ও। খুব তাড়াতাড়ি শিখে নিতে পারে ও।” একসময় সুইমিং করত। ক্লাস এইট নাইন থেকে ক্রিকেট খেলা শুরু। খুব কম সময়ে বিশ্বকাপের মঞ্চে যাওয়া, এবার এশিয়াডে সোনা।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

five × one =