চিনের আচরণ মেনে নিতে পারছে না ভারত। আজ, ২২ সেপ্টেম্বর জানা গিয়েছে অরুণাচলের তিন উসু প্লেয়ারকে চিনে পা দিতে দেওয়া হয়নি। নেইমান ওয়াংসু, অনিলু তেগা, মেপাং লামগু এই তিন অ্যাথলিটের চিনে হানঝাউ গেমসে উসু ইভেন্টে নামার কথা। এশিয়ান গেমস শুরু হওয়ার আগে আয়োজকদের পক্ষ থেকে তাঁদের অ্যাক্রেডিটেশন কার্ড বা পরিচয়পত্র তৈরি করে দেওয়া হয়েছিল। তারপরও চিনে ঢোকার অনুমতি পাননি এই তিন অ্যাথলিট। আসলে চিনে যাবার বিমানে উঠতেই পারেননি ওয়াংসু, তেগারা। এই ঘটনার জেরে এ বার চিন সফর বাতিল করলেন কেন্দ্রীয় যুব ও ক্রীড়ামন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর। পররাষ্ট্র মন্ত্রকের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, ভারত সরকার চিনের এই পদক্ষেপের তীব্র বিরোধিতা করছে। ভারত সরকারের পক্ষ থেকে স্পষ্ট বলা হয়েছে, দেশের কোনও রাষ্ট্রের সঙ্গে এই ধরণের আচরণ বরদাস্ত করা হবে না। এমইএ-র মুখপাত্র অরিন্দম বাগচি এক বিবৃতি শেয়ার করেছেন। তাতে জানানো হয়েছে, চিনের এই পদক্ষেপ এশিয়ান গেমসের চেতনা এবং নিয়ম উভয়ই লঙ্ঘন করেছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রকের বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, এশিয়ান গেমস গামী অরুণাচলের তিন অ্যাথলিটের সঙ্গে যা হয়েছে, তাতে এশিয়ান গেমসের সদস্য রাষ্ট্রের প্রতিযোগীদের প্রতি বৈষম্য স্পষ্টভাবে ফুটে উঠেছে। চিনের এই পদক্ষেপ এশিয়ান গেমসের চেতনা এবং তাদের আচরণ নিয়ন্ত্রণকারী নিয়ম উভয়ই লঙ্ঘন করে। আগামিকাল এশিয়ান গেমসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। এশিয়াড উপলক্ষে ভারতের কেন্দ্রীয় যুব ও ক্রীড়ামন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুরের চিনে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এশিয়ান গেমসে অংশ নেওয়ার জন্য ভারতের তিন উসু প্লেয়ারকে চিনে প্রবেশ করতে দেয়নি চিনা সরকার। এই ঘটনার প্রতিবাদে অনুরাগ ঠাকুর তাঁর চিন সফর বাতিল করলেন। বিতর্ক যখন তুঙ্গে তখন চিনের দাবি, অরুণাচলের ওই তিন অ্যাথলিটকে ভিসা দেওয়া হয়েছে। গত জুলাই মাসে এই তিন অ্যাথলিটকে নিয়েই চরম বিতর্ক দেখা দিয়েছিল। বিশ্ব ইউনিভার্সিটি মিট অনুষ্ঠিত হয়েছিল চিনেই। সে বার এই ৩ অ্যাথলিট ছিলেন ভারতীয় উসু টিমের সদস্য। তিনজনকে চিন তখন স্টেপল ভিসা দিয়েছিল। সাধারণ ভিসা পাসপোর্টে অ্যাটাচড থাকে। স্টেপল ভিসা একটি আলাদা কাগজ, যা পাসপোর্টে স্টেপল করে দেওয়া হয়। ভারতের অন্য রাজ্যের নাগরিকগের ক্ষেত্রে যখন সাধারণ ভিসা ইস্যু করা হয়েছে তখন অরুণাচলের তিন অ্যাথলিটের জন্য কেন স্টেপল ভিসা? বিতর্কের শুরু এখান থেকেই। অরুণাচল ইস্যু নিয়ে ভারত-চিনের বাদানুবাদ নতুন নয়। এশিয়ান গেমসে তা-ই বিস্ফোরক আকার নিয়েছে। বিতর্ক মেটাতে এশিয়ার অলিম্পিক কাউন্সিলের ভাইস প্রেসিডেন্ট ওয়েই জিহং বলেছেন, ‘ওই ৩ অ্যাথলিটকে ভিসা মঞ্জুর করা হয়েছে। তবে চিনের সরকারের নিয়ম অনুযায়ী ওদের অন্য ভিসা দেওয়া হয়েছে। মূলত তিন ধরণের ভিসা হয় — ভিসা অন অ্যারাইভ্যাল, পেপার ভিসা, ভিসা অন দ্য পাসপোর্ট।’ এই পেপার ভিসাই হল স্টেপল ভিসা। যা নিয়ে ক্ষুব্ধ ভারত সরকার। জিহং একইসঙ্গে বলছেন, ‘ওই ৩ অ্যাথলিটকে নিয়মমাফিক ভিসা দেওয়া হয়েছে। ওরাই সেই ভিসা নিয়ে গেমসে অংশগ্রহণ করতে রাজি হয়নি।’ তিন অ্যাথলিটকে চিনে প্রবেশের অনুমতি না দেওয়া নিয়ে জিনপিং সরকারের তীব্র নিন্দা করেছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কিরেণ রিজিজু। তিনি বলেন, “এটা খেলাধূলার স্পিরিটকে নষ্ট করেছে। একইসঙ্গে এশিয়ান গেমসের নিয়মকেও লঙ্ঘন করেছে।”