হতে পারতো ভয়ঙ্কর রেল দুর্ঘটনা, ফিসপ্লেট খোলা থাকা অবস্থাতেই ছুটেছে বন্দে ভারত থেকে রাজধানীও

ফিসপ্লেট খোলা, অথচ তার ওপর দিয়েই ছুটে চলেছে  বন্দে ভারত, রাজধানীর মতো প্রিমিয়ার ট্রেন। বরাত ভাল যে বড় কোনও দুরেঘটনা ঘটেনি।এই ঘটনার জেরে   বালেশ্বরের করমণ্ডল এক্সপ্রেসের মতোই ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনা ঘটে গেলে অবাক হওয়ার মতো কিছু ছিল না। সূত্রে খবর, রাঁচি রেল ডিভিশনের অন্তর্গত রাঁচি-মুরি রেল ট্র্যাকে গৌতমধারা স্টেশনের কাছে টানা ছ’দিন ফিশ-প্লেট খোলা থাকা অবস্থাতেই ছুটেছে বন্দে ভারত, রাজধানী এক্সপ্রেসের মতো দেশের প্রিমিয়াম ট্রেন। চলেছে আরও বেশকিছু মেল-এক্সপ্রেস ও লোকাল ট্রেনও। টানা ছ’দিন ধরে এমন ঘটনা চলার পর ওই রুট ধরে যাওয়া একটি মালবাহী ট্রেনের চালকের চোখে ফিশ-প্লেট খোলা থাকার বিষয়টি নজরে আসে।এরপরই খবর যায় রেলের উচ্চপদস্থ কর্তাদের কাছে। ঘটনা শুনে হতবাক রেলকার্তারা। এরপরই দ্রুত  এই ঘটনায় পূর্ণাঙ্গ তদন্তের নির্দেশ দেয় রেলমন্ত্রক। সূত্রে খবর, প্রাথমিক তদন্তের পরে ইতিমধ্যে এক রেলকর্মীকে সাসপেন্ড করা হয়েছে।

রেল সূত্রের খবর, গত শুক্রবার গৌতমধারা ধারা স্টেশনের উপর দিয়ে ওই মালবাহী ট্রেনটি যাওয়ার সময়ে চালকের নজরে পড়ে ফিশপ্লেট খোলা থাকার বিষয়টি। কারণ, ওই লাইনের উপর দিয়ে যাওয়ার সময়ে অস্বাভাবিক রকমের ঝাঁকুনি অনুভব করেছিলেন চালক। তিনি নিজেই স্থানীয় কয়েকজনকে সঙ্গে নিয়ে নীচে নেমে দেখতে পান খোলা ফিশ-প্লেটের বিষয়টি।দ্রুত খবর দেওয়া হয় নিকটবর্তী স্টেশনে, সেখান থেকে রেলের পদস্থ কর্তাদের কাছে।

এদিকে রেল মন্ত্রক সূত্রের প্রাথমিক দাবি, এই লাইনে মেরামতির পরে অসাবধানতাবশত ফিশ-প্লেট খোলা থেকে গিয়েছিল৷ প্রাথমিক ভাবে রাঁচি ডিভিশনের রেলের আধিকারিকরা জানতে পেরেছেন, গৌতমধারা ও গঙ্গাঘাটের মাঝামাঝি জায়গায় ট্রেন লাইনে মেরামতির কাজ করা হয়েছিল ৯ ও ১০ সেপ্টেম্বর৷ তারপরে কয়েকদিন ধরে প্রচণ্ড বৃষ্টি হয়৷ রেলকর্তাদের বক্তব্য, সাধারণভাবে এরকম কোনও মেরামতির কাজ হলে তা সংশ্লিষ্ট সিনিয়র আধিকারিকের ইনস্পেকশন করে দেখে রিপোর্ট দেওয়ার কথা। এক্ষেত্রে সেটা হয়নি।

ফলে ৯-১০ সেপ্টেম্বর মেরামতির পর থেকেই ফিশ-প্লেট এই ভাবেই খোলা অবস্থায় পড়েছিল বলে প্রাথমিকভাবে সন্দেহ করা হচ্ছে। তবে গাফিলতির জেরে এই কাণ্ড, নাকি ওই মেরামতির পরে পরিকল্পনামাফিক কেউ এমনটা করে রেখেছিল তা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। এদিকে রাঁচি ডিভিশনের এক উচ্চপদস্থ আধিকারিকের ব্যাখ্যা, যেহেতু ওই মেরামতির পরে ওই এলাকায় কয়েকদিন প্রবল বৃষ্টি হয়েছিল, তাই ওই লাইন দিয়ে ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৩০ কিলোমিটার বেগে ট্রেন চালানো হচ্ছিল। সেই কারণেই রাজধানী, বন্দে ভারত-সহ অন্য কোনও ট্রেন দুর্ঘটনার কবলে পড়েনি বলে প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে। তবে বৃষ্টি ও লাইনে মেরামতির কারণে যখন ট্রেনগুলির গতি কম রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছিল, তখনও সংশ্লিষ্ট লাইনে মেরামতির কাজ পরীক্ষা করে দেখা হলো না কেন এ প্রশ্ন উঠছেই। এদিকে গোটা বিষয়টিকে একেবারেই ভালোভাবে নিচ্ছেন না রেলের উচ্চপদস্থ কর্তারা। ফলে োকনও যুক্তিতেই চিঁড়ে ভিজছে না। রেলের আধিকারিকদের মধ্যেও প্রশ্ন উঠেছে, লাইনে মেরামতির কাজ শেষ হওয়ার পরে চূড়ান্ত ইনস্পেকশন না করেই কী ভাবে দ্রুতগামী ট্রেন চলাচল শুরু করে দেওয়া হলো তা নিয়েই।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

5 − three =