ফরম্যাট ওয়ান ডে। যদিও ম্যাচ হল দু-দিনে। ভারত-পাকিস্তান ম্যাচে এত বিরতি দর্শকদের আনন্দ কেড়ে নেয়। দীর্ঘ অপেক্ষা শেষে ম্যাচ সম্পূর্ণ হল। এশিয়া কাপে গ্রুপ পর্বের প্রথম ম্যাচে পাকিস্তানের মুখোমুখি হয়েছিল ভারত। প্রথমে ব্যাট করেন রোহিতরা। ভারতীয় ইনিংস শেষেই বৃষ্টি। ম্যাচ আর সম্পূর্ণ হয়নি। সুপার ফোরে ভারত-পাকিস্তান ম্যাচে তাই যোগ করা হয়েছিল রিজার্ভ ডে। শেষ মুহূর্তে এই সিদ্ধান্ত নেয় এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিল। রিজার্ভ ডে কাজে লাগল। তবে চাপও বাড়ল ভারতীয় শিবিরে। টানা দু-দিন খেলতে হল। রাত পোহালেই শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে ম্যাচ। দু-দিনের দ্বৈরথে ভারত জিতল ২২৮ রানের বিশাল ব্যবধানে। রানের নিরিখে ওয়ান ডে-তে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে এটিই ভারতের সবচেয়ে বড় জয়। রবিবার ভারতীয় ইনিংসের ২৪.১ ওভারের পর আর খেলা সম্ভব হয়নি বৃষ্টির জন্য। তার পর থেকে খেলা শুরু হয় সোমবার। এ দিনও বৃষ্টির জন্য নির্ধারিত দুপুর ৩টের সময় শুরু করা যায়নি খেলা। খেলা শুরু হয় বিকাল ৪.৪০ মিনিটে। স্যাঁতস্যাঁতে উইকেটে সাবধানে শুরু করেছিলেন কোহলি এবং রাহুল। অন্য দিকে কিছুটা রক্ষণাত্মক ছিলেন পাকিস্তানের বোলারেরা। এ দিন ম্যাচ শুরুর আগেই জানা যায়, চোটের জন্য খেলতে পারবেন না হ্যারিস রউফ। এক জন গুরুত্বপূর্ণ বোলার কমে যাওয়ায় পরিকল্পনা পরিবর্তন করতে হয় পাক অধিনায়ককে। শাহিন আফ্রিদি, শাদাব খানদের রক্ষণাত্মক বোলিংয়ের সুযোগ কাজে লাগালেন ভারতীয় ব্যাটারেরা। দিনের চতুর্থ ওভার থেকে হাত খুলে খেলতে শুরু করেন কোহলি এবং রাহুল। তাঁদের আগ্রাসনের মুখে লাইন, লেংথ নিয়ন্ত্রণ করতে পারেননি পাকিস্তানের বোলারেরা। দুই ব্যাটারকে আউট করার মতো বলও করতে পারেননি তাঁরা। স্বভাবতই সাবলীল ভাবে খেললেন তাঁরা। কোহলি খেললেন অপরাজিত ১২২ রানের ইনিংস। মারলেন ৯টি চার এবং ৩টি ছয়। রাহুল শেষ পর্যন্ত করলেন ১১১ রান। তাঁর ব্যাট থেকে এল ১২টি চার এবং ২টি ছয়। তৃতীয় উইকেটে তাঁদের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে উঠল ২৩৩ রান। যা পাকিস্তানের বিরুদ্ধে এক দিনের ক্রিকেটে সর্বোচ্চ। ভারতের ৩৫৬ রানও এক দিনের ক্রিকেটে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ। আবার এ দিনই এক দিনের ক্রিকেটে বিশ্বের প্রথম ব্যাটার হিসাবে ১৩ হাজার রান পূর্ণ করলেন কোহলি। সোমবার পাকিস্তানের বোলারেরা একটিও উইকেট পেলেন না। ৩৫৭ রান তাড়া করতে নেমে প্রথমেই ২ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় পাকিস্তান। ওপেনার ইমাম উল হক (৯) এবং অধিনায়ক বাবর (১০) দলকে ভরসা দিতে পারেননি। বাবর আউট হওয়ার পরেই বৃষ্টিতে খেলা বন্ধ রাখতে হয়। সে সময় পাকিস্তানের রান ছিল ১১ ওভারে ২ উইকেটে ৪৪ রান। বৃষ্টি থামার পর খেলা শুরু হলে প্রথম ওভারেই শার্দূল ঠাকুর আউট করেন মহম্মদ রিজ়ওয়ানকে (২)। পাকিস্তান ৪৭ রানে ৩ উইকেট হারানোর পর ভারতের জয় এক রকম নিশ্চিত হয়ে যায়। মেঘলা, স্যাঁতস্যাঁতে আবহাওয়া কাজে লাগিয়ে ভারতের জোরে বোলারেরা ধারাবাহিক ভাবে অস্বস্তিতে রাখলেন পাক ব্যাটারদের। শুধু তাই নয়। কুলদীপ যাদব, রবীন্দ্র জাডেজার স্পিন বল খেলতেও সমস্যা পড়লেন পাক ব্যাটারেরা। ফখর জামান (২৭) এবং আঘা সলমনকে (২৩) সাজঘরে ফিরিয়ে পাকিস্তানকে আরও কোণঠাসা করে দেন কুলদীপ। তাঁর বল ঠাওর-ই করতে পারছিলেন না পাক ক্রিকেটারেরা। দলের ইনিংসকে ভরসা দিতে পারলেন না সহ-অধিনায়ক শাদাব খানও (৬)। তাঁকেও আউট করলেন কুলদীপ। ফেরালেন ইফতিকার আহমেদকেও (২৩)।