কসবার রথতলার স্কুলে ওপর থেকে পড়ে ছাত্রের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় এবার স্কুলে গেলেন শিশু সুরক্ষা কমিশনের সদস্যরা । কমিশনের তরফে জানানো হয়েছে, ওই ছাত্র অত্যন্ত অবসাদগ্রস্থ ছিল। ছোটবেলায় মা ছেড়ে চলে যাওয়ার কারণে প্রায় একাই বড় হয়েছে সে। সেই কষ্ট, খারাপ লাগা জমা ছিল তার মনের ভিতর। আগে জানা গেলে তাঁরা কথা বলতেন ছেলেটির সঙ্গে, দাবি কমিশনের উপদেষ্টা অনন্যা চক্রবর্তীর।
গত সোমবার কসবা রথতলার সিলভার পয়েন্ট স্কুলে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয় এক ছাত্রের দেহ। স্কুল কর্তৃপক্ষের দাবি সে ছ’তলা থেকে ঝাঁপ দিয়েছে। চিকিৎসকরা বলছেন, ওপর থেকে পড়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। তবে এই মৃত্যু আত্মহত্যা না কি, অন্য কিছু তা নিয়েই প্রশ্ন। মৃতের পরিবারের তরফে যদিও স্কুলের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ আনা হয়েছে। মৃত ছাত্র শেখ শানের বাবার অভিযোগ, তাঁর ছেলেকে পিটিয়ে মারা হয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, করোনা পরবর্তী সময়ে স্কুলের ফি বৃদ্ধি নিয়ে তিনি প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন। তারপর থেকেই তাঁর ছেলের উপর নানাভাবে চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছিল। স্কুলের প্রিন্সিপাল, ভাইস প্রিন্সিপাল ও আরও দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে কসবা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন শেখ শানের বাবা।
পাশাপাশি স্কুলে প্রজেক্ট সোমবার সঠিকভাবে জমা দিতে না পারায় তাকে সকলের সামনে বকাবকিও করা হয়েছিল বলে পরবিার সূত্রে খবর। তার জেরেই ওই কিশোরের মনে কোনও প্রভাব পড়েছিল কি না, দেখা হচ্ছে।
এদিকে, শানের পরিবারের সদস্যদের দাবি, স্কুল কর্তৃপক্ষের বক্তব্যের মধ্যেই একাধিক অসঙ্গতি রয়েছে। তাদের অভিযোগ, স্কুল থেকে প্রথমে দু’রকম কথা বলা হয়েছিল। প্রথমে বলা হয়েছিল মাথা ঘুরে ছাদ থেকে পড়ে গিয়েছে শান। পরে বলা হয়েছে সিঁড়ি থেকে পড়ে গিয়েছে। আর এখানেই প্রশ্ন উঠেছে যে, যদি সিঁড়ি বা ছাদ থেকেই পড়ে যেত, তাহলে অন্য কোথাও আঘাতের চিহ্ন নেই কেন তা নিয়েও। প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে, কেবলমাত্রা শানের দাঁত থেকেই রক্ত বের হচ্ছিল। সঙ্গে এ প্রশ্নও উঠেছে যে বাবা মাকে প্রথমেই ফোন না করে স্কুল কেন দূরের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হল কেন তা নিয়েও। কারণ, স্কুলের কছেও ছিল হাসপাতাল।
এদিকে সূত্রের খবর, মঙ্গলবার সকালেই মৃত ছাত্রের বাড়িতে পৌঁছেছে কসবা থানার পুলিশ। কথা বলেন পরিবারের সঙ্গে। মৃত ছাত্র দিদার কাছেই থাকত। ভীষণভাবে ভেঙে পড়েছেন তিনি।