যাদবপুরের ছাত্রমৃত্যুতে ৪জনকে আজীবন বহিষ্কার করার সুপারিশ আভ্য়ন্তরীণ তদন্ত কমিটির

ছাত্র মৃত্যুর এক মাস পের হওয়ার পর তৎপর হতে দেখা গেল যাদবপুর বিশ্ববিদ্য়ালয় কর্তৃপক্ষকে। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রের রহস্যমৃত্যুতে ৪ জন বর্তমান পড়ুয়াকে আজীবন বহিষ্কারের সুপারিশ করল অভ্যন্তরীণ তদন্ত কমিটি। পাশাপাশি ২৫ জনকে হস্টেল থেকে বের করে দেওয়ারও সুপারিশ করা হয়েছে। অভ্যন্তরীণ তদন্ত কমিটির আরও সুপারিশ, হস্টেল সুপারের ভূমিকা খতিয়ে দেখে প্রয়োজনে শাস্তি দিতে হবে। কী করে অরিত্র ওরফে ‘আলু’ একসঙ্গে এতদিনের সই করল কর্তৃপক্ষকে তা খতিয়ে দেখার সুপারিশ করা হয়েছে ওই রিপোর্টে। র‌্যাগিংয়ে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়েরের পাশাপাশি পাঁচ জনকে চারটে সেমিস্টার, ১১ জনকে দুটো সেমিস্টার, ১৫ জনকে একটা করে সেমিস্টার সাসপেন্ড করার সুপারিশ করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হয়েছেন এক ছাত্রনেতা। তাঁর গবেষণা চলছে। কমিটির সুপারিশ, ওই ছাত্রনেতার গবেষণা সম্পূর্ণ হলে আর কোনও দিনও বিশ্ববিদ্যালয়মুখো হতে পারবেন না তিনি। সূত্রের খবর, ১৪০ জনের বয়ান রেকর্ড করেছে অভ্যন্তরীণ তদন্ত কমিটি। ক্যামেরাবন্দি হয় বয়ান, উত্তর নেওয়া হয় লিখিত আকারে। তার ভিত্তিতেই এই পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট।

প্রসঙ্গত, যাদবপুরে ছাত্র মৃত্যুর পর সহ উপাচার্যের নির্দেশ অনুসারে একটি কমিটি তৈরি হয়েছিল। তারা প্রথমে একটি প্রাথমিক রিপোর্ট জমা করেছিল। এতদিনের মাথায় পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট পেশ করল অভ্যন্তরীণ তদন্ত কমিটি। এই রিপোর্টে স্পষ্ট করে উল্লেখ করা হয়েছে, চার জন বর্তমান পড়ুয়াকে আজীবন বহিষ্কার করতে হবে। পাশাপাশি ২৫ জন প্রাক্তনীকে যে বর্তমানে হস্টেল থেকে বের করে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ঠিক সেই একই নির্দেশ মঙ্গলবার দিতে দেখা যায় কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপটি টি এস শিবজ্ঞানমকেও।

প্রসঙ্গত, ঘটনার পর প্রথম থেকেই হস্টেল সুপারের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠছিল। ছাত্রদের একাংশ দাবি করেছিল, সেই রাতে বারবার ফোন করা হয়েছিল তাঁকে। কিন্তু হস্টেল সুপার কেন মেইন হস্টেলে যাননি, সেখানে তাঁর কর্তব্যে ন্যূনতম কোনও গাফিলতি রয়েছে কিনা, যদি থাকে তা প্রমাণিত হবে কড়া পদক্ষেপ করারও সুপারিশ করা হয়েছে।

এই ঘটনার পর ছাত্রনেতা অরিত্র মজুমদার ওরফে আলু নামে পোস্টার পড়েছিল ক্যাম্পাস জুড়ে। ঘটনার পর থেকেই তিনি ‘গায়েব’ ছিলেন। পরে তিনি নিজেই ফেসবুকে পোস্ট করে জানান, কাশ্মীরে গিয়েছিলেন ট্রেকিংয়ের জন্য। ঘটনার রাতে অর্থাৎ ৯ অগস্ট তিনি হস্টেলে যাননি। এরপরই নজরে আসে রেজিস্ট্রার খাতাতেই ১১ তারিখে ‘প্রেজেন্ট’রয়েছেন আলু। তিনি যখন কাশ্মীরে তাহলে কীভাবে রেজিস্ট্রারে সই? আলু অবশ্য দাবি করেছিলেন, ভুল করে একসঙ্গে সই করে ফেলেছিলেন তিনি। আলু কীভাবে তিন দিনের সই একসঙ্গে করলেন, সেই বিষয়টিও খতিয়ে দেখার সুপারিশ করা হয়েছে রিপোর্টে।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

14 − twelve =