ভয়ে বিশ্ববিদ্য়ালয়ের চত্বরে পা রাখছেন না রবীন্দ্র ভারতীর উপাচার্য

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের ছাত্র মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে যখন তোলপাড় চলছে, তখন শহরেরই আরও একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে নজিরবিহীন পরিস্থিতি। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিটি রোড ক্যাম্পাসে নিজের দফতরে ভয়ে যেতেই পারছেন রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্য শুভ্রকমল মুখোপাধ্যায়। এই গোটা ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রুপ সি ও ডি অশিক্ষক কর্মচারীদের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলেছেন উপাচার্য শুভ্রকমলবাবু। তিনি রাজ্যপালের মনোনীত হওয়ার কারণে তাঁকে কাজ করতে দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ শুভ্রকমল বাবুর। রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তবর্তীকালীন এরই রেশ টেনে রবীন্দ্র ভারতীর উপাচার্য এও দাবি করেছেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পড়ুয়া ও শিক্ষকরা কোনও সমস্যা না করলেও তাঁর কাজে বাধা দিচ্ছেন অশিক্ষক কর্মীরা। এমনকী তাঁর ঘরে ঢুকে অসংযত আচরণ ও কটূক্তি করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি। এই পরিস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ে সশরীরে গিয়ে কাজ করা সম্ভব নয় বলেও জানিয়ে দিয়েছেন রবীন্দ্র ভারতীর উপাচার্য হিসেবে সদ্য দায়িত্ব পাওয়া এই প্রাক্তন বিচারপতি। আর সেই কারণেই তিনি বাড়িতে বসে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন পরিচালনার কাজ করছেন বলেও জানান তিনি।

এই প্রসঙ্গে শুভ্রকমলবাবু এও জানান, ‘অধ্যাপকদের কাছ থেকে আমার কোনও অসুবিধা হয়নি। পড়ুয়াদের থেকেও আমার কোনও অসুবিধা হয়নি। গ্রুপ সি ও গ্রুপ ডি কর্মচারী যাঁরা রয়েছেন, তাঁরা আমরা ঘরে ঢুকে পড়ছেন। সেখানে ঢুকে হাততালি দেওয়া হচ্ছে। বিকৃত করে আমার নাম বলা হচ্ছে। তাঁরা বলছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হওয়ার আমার কোনও যোগ্যতা নেই। আপনি এখনই পদত্যাগ করে চলে যান।’ এর পাশাপাশি শুভ্রকমলবাবুর সংযোজন,’আমি অযোগ্য, সেটা আমাকে না বলে যিনি আমাকে নিয়োগ করেছেন তাঁকে বললেই পারতেন। পরিস্থিতি এমন, যে মনে হয় না বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে আমি সসম্মানে কাজ করতে পারব। সেই কারণে আমি বাড়ি থেকে কাজ করছি। আচার্যকে গোটা ঘটনার কথা জানিয়েছি।’

যদিও উপাচার্যের অভিযোগ মানতে নারাজ বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃণমূলপন্থী শিক্ষাকর্মীদের সংগঠন। তাদের সভাপতি সন্দীপ গঙ্গোপাধ্যায় জানান, ‘অন্তর্বতীকালীন উপাচার্য আমাদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনছেন তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। কোনও ধরনের অশ্লীল আচরণ করা হয়নি। প্রবাদ প্রতিম শিক্ষকরা এই বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ছিলেন, কেউ কখনও এই ধরনের কথা বলতে পারেননি। যাদবপুরকাণ্ডের পর খারাপ হয়ে যাওয়া সিসিটিভি মেরামতির দাবিতে আমরা উপাচার্যের কাছে ডেপুটেশন দিয়েছিলাম। এটা তো আমাদের অধিকার। পড়ুয়াদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার দায়িত্ব আমাদেরও রয়েছে। কিন্তু ডেপুটেশন দিয়েও কোনও কাজ হয়নি। আসলে উনি রাজ্যপাল মনোনীত। অধ্যাপক হিসেবে কোনও কাজ করার কোনও পূ্র্ব অভিজ্ঞতাও নেই। তাই পড়ুয়া-অশিক্ষক কর্মচারীদের বদলে উনি কিছু আরএসএসপন্থী অধ্যাপকদের নিয়ে কাজ করতে বেশি আগ্রহী।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

4 − two =