রাজ্যের বেশির ভাগ বিএড কলেজ চলছে ভুয়ো শিক্ষকে, ভুয়ো বেতনও

বিএড কলেজ নিয়ে এবার নয়া তথ্য সামনে এল যেখানে দেখা যাচ্ছে ভুয়ো শিক্ষকে চলছে বিএড কলেজ। শুধু ভুয়ো শিক্ষক-ই নয়, বেতনও ভুয়ো। সূত্রের খবর, রাজ্যের অধিকাংশ বিএড কলেজে শিক্ষক নেই। ভুয়ো শিক্ষক দেখিয়ে চলছে সে সব কলেজ। পাশাপাশি, কলেজগুলির উপযুক্ত কাগজপত্রও নেই। এনসিটিই-র ২০১৪ সালের নিয়ম মানছে না সে সব কলেজ। অভিযোগের তালিকা এখানেই শেষ নয়, রাজ্যে এমন বহু বিএড কলেজ রয়েছে, যেখানে অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থাটুকু পর্যন্ত নেই। অভিযোগ, ভুয়ো ‘ফায়ার সেফটি সার্টিফিকেট’ দিয়ে চলছিল এই বিশ্ববিদ্যালয়গুলি। যদি কখনও বিপদ ঘটে, বড় ধরনের আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে।

এই সব অভিযোগ ইতিমধ্যে জমা পড়েছে বাবা সাহেব আম্বেদকর এডুকেশন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে। এরপরই বাবা সাহেব আম্বেদকর এডুকেশন  বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফ থেকে বিজ্ঞপ্তি জারি করে উপযুক্ত তথ্য প্রমাণ চাওয়া হয়। সূত্রের খবর, তথ্য প্রমাণ না দেখাতে পারলে কলেজগুলোর অনুমোদন বাতিল হতে পারে।

প্রসঙ্গত, শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি প্রকাশ্যে আসতেই বিএড কলেজগুলির অস্তিত্ব নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করে। একাধিক বেনিয়মের অভিযোগ ওঠে। প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়, যিনি এই নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে অন্যতম অভিযুক্ত এবং বর্তমানে জেলে, তাঁর ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন ওঠে। সম্প্রতি রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস বেশ কয়েকটি বিএড কলেজের লাইসেন্স পুনর্নবীকরণ স্থগিত করে দেন। দুর্নীতির অভিযোগ ওঠায় ওই সব বিএড কলেজেগুলির বিরুদ্ধে তদন্তের নির্দেশ দেন রাজ্যপাল। রাজভবনের তরফেও পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট চাওয়া হয়।

এরপরই নড়েচড়ে বসেছে আম্বেদকর এডুকেশন বিশ্ববিদ্যালয়। সূত্রের খবর, তদন্তে উঠে এসেছে, বিএড কলেজগুলিতে নগদে আর্থিক লেনদেন হচ্ছে। এমনকী সে সব কলেজে শিক্ষক নেই, সেখানে খাতায় কলমে ভুয়ো শিক্ষক দেখানো হচ্ছে। এদিকে এনসিটিই-র গাইডলাইন অনুযায়ী, ৫০ জন পড়ুয়া পিছু ৮ জন শিক্ষক থাকতে হবে। না-থাকলে সেই সব বিএড কলেজগুলোকে অনুমোদন দেবে না বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। শুধু ভুয়ো শিক্ষক নিয়োগই নয়, তাঁদের অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠিয়ে পরবর্তীকালে ডেবিট কার্ড দিয়ে সেই টাকা তুলে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সোমা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, ‘আমাদের কাছে তথ্য এসেছে। অভিযোগগুলো নিয়ে আমরা পদক্ষেপ করার চিন্তাভাবনায় রয়েছি। বেশ কিছু বেনিয়ম নজরে এসেছে। এনসিটিই-র ২০১৪ সালের রেগুলেশন মানতে বলা হয়েছে। যে কলেজগুলো সেই নিয়ম লঙ্ঘন করেছে, তাদের অনুমোদন বাতিল করে দেওয়া হবে।’

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

19 − fifteen =