গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের অভিযোগ, নির্ধারিত দিনে জেলা পরিষদে স্থায়ী সমিতি গঠনই করতে ব্যর্থ শাসক

নিজস্ব প্রতিবেদন, বাঁকুড়া: তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বেন্দ্বর জেরে নির্ধারিত দিনে বাঁকুড়া জেলা পরিষদের সিংহভাগ নির্বাচিত সদস্য জেলা পরিষদে হাজির না হওয়ায় শাসকদল স্থায়ী সমিতি গঠনই করতে পারল না বলে অভিযোগ। এর জেরে উন্নয়নের কাজ ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে বাঁকুড়া জেলাজুড়ে।
রাজ্যে সদ্য শেষ হওয়া গ্রাম পঞ্চায়েত নির্বাচনে বাঁকুড়া জেলা পরিষদে ব্যাপক সাফল্য পায় তৃণমূল। ওই জেলা পরিষদের ৫৬টি আসনের মধ্যে ৫৫টিতে জয় পায় তৃণমূল। এরপরই ওই জেলা পরিষদে কে সভাধিপতি ও সহকারী সভাধিপতির আসনে বসবেন, তা নিয়ে দলের অন্দরে শুরু হয় ব্যাপক কোন্দল। সেই কোন্দল কাটিয়ে গত ১৪ অগস্ট সভাধিপতি ও সহকারী সভাধিপতি নির্বাচন করে তৃণমূল। কিন্তু তারপরও দলের অন্তর্কলহ পিছু ছাড়ছে না বলে অভিযোগ। আরও অভিযোগ, এবার জেলা পরিষদের স্থায়ী সমিতি গঠনকে কেন্দ্র করে তৈরি হয়েছে একই পরিস্থিতি।
জানা গিয়েছে, বাঁকুড়া জেলা পরিষদের নির্বাচিত সদস্যরা মোট ১০টি স্থায়ী সমিতি গঠন করবেন। অর্থের স্থায়ী সমিতি বাদ দিলে পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট এই ৯টি স্থায়ী সমিতির প্রতিটিতে একজন করে কর্মাধ্যক্ষ নির্বাচিত হবেন। পূর্ত, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, নারী ও শিশু কল্যাণ, বন ও ভূমি সহ দশটি বিভাগের স্থায়ী সমিতিই আগামী দিনে জেলার উন্নয়নের ব্যাপারে যাবতীয় সিদ্ধান্ত নেবে। সেই স্থায়ী সমিতি গঠনের জন্য শুক্রবার বাঁকুড়া জেলা প্রশাসনের তরফ থেকে জেলা পরিষদের প্রতিটি সদস্যকে জেলা পরিষদে হাজির থাকার অনুরোধ জানিয়ে চিঠি দেওয়া হয়। কিন্তু নির্ধারিত এই দিনে তৃণমূলের টিকিটে জয়ী জেলা পরিষদের সিংহভাগ সদস্যই হাজির হননি বলে দাবি।
সূত্রের খবর, দলীয় ভাবে সমিতির সদস্যদের নাম ও কর্মাধ্যক্ষদের নাম চূড়ান্ত না হওয়াতেই এদিন স্থায়ী সমিতি গঠনের জন্য তৃণমূলের নির্বাচিত সদস্যরা জেলা পরিষদে হাজির হননি। বিরোধীদের দাবি, জেলা পরিষদ অর্থের মূল ভান্ডার। কর্মাধ্যক্ষ ও স্থায়ী সমিতির সদস্য হয়ে কে বা কারা সেই বিপুল অর্থের ভাগ ও কাটমানি নেবেন, তা নিয়ে তৃণমূলের অন্দরেই চলছে জোর কোন্দল। সেই কোন্দলের জেরেই এদিন স্থায়ী সমিতি গঠন করতে পারেনি শাসকদল। বিরোধীদের আরও দাবি, তৃণমূলের অন্দরে এই কোন্দলের জেরে স্থায়ী সমিতি গঠন প্রক্রিয়া পিছিয়ে যাওয়ায় আপাতত জেলার উন্নয়নের কাজ স্তব্ধ হয়ে থাকবে। তার ফল ভোগ করতে হবে জেলার মানুষকে। যদিও তৃণমূল নেতৃত্ব এবং বাঁকুড়া জেলা পরিষদের সভাধিপতি দলীয় কোন্দলের তত্ত্ব মানতে নারাজ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

twenty − 20 =