চাঁদের মাটিতে পা রেখেছে চন্দ্রযান-৩। এরপর কেটে গিয়েছে ২৪ ঘণ্টা। ইন্ডিয়ান স্পেস রিসার্চ অর্গানাইজেশন তথা ইসরো বৃহস্পতিবার সন্ধেবেলা ল্যান্ডিংয়ের ২৪ ঘণ্টার মাথায় জানিয়ে দিয়েছে, চন্দ্রযান-৩-এর সবকিছুই স্বাভাবিক আছে। ল্যান্ডিংয়ের পরে যে-সময়ে যা ঘটার কথা সেটাই ঘটেছে, সেই ভাবেই ঘটছে সবকিছু নিয়ম মেনে। এখনও পর্যন্ত কোথাও কোনও বেনিয়ম নেই বা ছন্দপতন ঘটেনি। তবে ল্যান্ডিং সফল হলেই যে সব দায়িত্ব শেষ হয় বিজ্ঞানীদের, এমনটা কিন্তু একেবারেই নয়। বরং তারপর আরও বেশি কাজ তাঁদের, আরও বেশি দায়-দায়িত্ব। আর সেটা মাথায় রেখেই আরও বেশি সতর্ক ইসরোর বিজ্ঞানীরা।
বৃহস্পতিবার ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা (ইসরো) প্রধান এস সোমনাথ জানান, চন্দ্রযান-৩-এর ‘বিক্রম’ ল্যান্ডার এবং ‘প্রজ্ঞান’ রোভার উভয়ই ভালো কাজ করছে। তাদের গতিবিধি সঠিক রয়েছে। তবে আশঙ্কার মেঘকে কিন্তু ভুলে গেলে চলবে না একেবারে। চাঁদের জমিতে সফল ভাবে অবতরণের পরও কিন্তু ধাক্কা খাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে চন্দ্রযানের। ভয়ের মেঘ যে একেবারে কেটে গিয়েছে এমনটা ভাবা ঠিক হবে না। পরীক্ষা-নিরীক্ষাতেও আসতে পারে বাধা।
এই প্রসঙ্গে এস সোমনাথ জানান, ‘ল্যান্ডার এবং রোভার উভয়ই পুরোপুরি সুস্থ এবং সবকিছু খুব ভালোভাবে কাজ করছে। কাজ এখনও বাকি রয়েছে। তবে চাঁদে বায়ুমণ্ডলের অনুপস্থিতির কারণে যে কোনও জায়গা থেকে বস্তু আঘাত হানতে পারে চন্দ্রযানের উপর। সেই সঙ্গে তাপীয় সমস্যা এবং যোগাযোগ বিচ্ছন্ন হওয়ার আশঙ্কাকেও উড়িয়ে দেওয়া যায় না। কারণ, চাঁদের তাপমাত্রার সঙ্গে খাপ খাইয়ে কাজ করতে হচ্ছে চন্দ্রযান-৩। কোনওকারণে সেই তাপমাত্রার সঙ্গে খাপ নিতে না পারলেই গন্ডোগোল। এছাড়াও অজানা কোনও বস্তু বা বস্তু কণা যদি আঘাত করে যানটিতে তবেও তার ধাক্কায় বিগড়ে যেতে পারে যন্ত্রটি। যেমন, যদি একটি গ্রহাণু বা অন্য বস্তু প্রচণ্ড বেগে আঘাত করে, তাহলে ল্যান্ডার এবং রোভার উভয়ই ধ্বংস হয়ে যাবে। চাঁদের জমিটিকে ভালো ভাবে দেখলেই বিষয়টি স্পষ্ট হবে। মহাকাশের বস্তুর আঘাতের ফলে প্রচুর গর্তের সৃষ্টি হয়েছে সেখানে। পৃষ্ঠের একাধিক অংশ ধ্বংস হয়ে গিয়ে বা খসে গিয়ে তৈরি হয়েছে বিশালাকার গর্ত। পৃথিবীতেও, প্রতি ঘন্টায় লক্ষ লক্ষ মহাকাশ বস্তু ধেয়ে আসে। তবে আমরা তা অনুভব করতে পারি না। কারণ বায়ুমণ্ডল সেগুলিকে পুড়িয়ে ফেলে।’