যাদবপুরে ছাত্রমৃত্যুর ঘটনায় চাঞ্চল্যকর দাবি করতে শোনা গেল ধৃত প্রাক্তনী সৌরভ চৌধুরীকে। রবিবার প্রিজন ভ্যানে বসে তিনি জানান, সেদিন রাতে চোখের সামনেই বাংলা প্রথম বর্ষের ছাত্রকে ঝাঁপ মারতে দেখেছিলেন তিনি। তবে কোনওরকম র্যাগিং হয়নি বলেই দাবি তাঁর। একইসঙ্গে তাঁর সংযোজন, গত ৯ অগাস্ট ঘটনার দিন কোনও র্যাগিংই হয়নি। উল্টে সৌরভের দাবি, গরিব বলে তাঁদের ফাঁসিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
এদিকে স্থানীয় সূত্রে খবর, রবিবার প্রিজন ভ্যানে লাল গেঞ্জি পরে বসে থাকতে দেখা যায় যাদবপুর কাণ্ডে অন্যতম অভিযুক্ত সৌরভ চৌধুরীকে। ক্রমাগত চেষ্টা করে চলছিলেন ক্যামেরার সামনে মুখ ঢাকার। বারবার নাম জিজ্ঞাসা করা হলেও বলতে চাননি। তবে নিজেকে নিরপরাধীও দাবি করে চলেছিলেন বারংবার। সঙ্গে সেই একই দাবি, ‘সমস্ত অভিযোগই মিথ্যা। আমাদের ফাঁসানো হচ্ছে। আমরা কোনও অপরাধীও নই। অপরাধও করিওনি। আমরা গরিব বলে বিচার পাচ্ছি না। আমরা বিচার চাই।’
অভিযোগ, গত ৯ অগাস্ট রাত ১১টা ৪৫ নাগাদ হস্টেলের তিনতলা থেকে পড়ে যায় প্রথমবর্ষের ওই ছাত্র। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে। এর মাঝেই হস্টেলের ভিতর জেনারেল বডির মিটিং হয়। যা ডাকেন এই সৌরভ চৌধুরী স্বয়ং। এমনও অভিযোগ, সৌরভই বার্তা দিয়ে দেন পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদের মুখে পড়লে ছাত্রদের কী বলতে হবে। এদিকে রবিবার তিনি দাবি করেন, সেদিন রাতে জেনারেল বডি মিটিং হয়েছিল কি না তিনি জানেন না।
এদিকে তদন্তে উঠে এসেছে যাদবপুরের মেন হস্টেলে বিএ প্রথম বর্ষের ছাত্রের রহস্যমৃত্যুতে যাদবপুরের এই প্রাক্তনী সৌরভ চৌধুরী গোটা ঘটনার ‘মাথা’। তাঁর দাপট এতটাই ছিল যে তাঁর নির্দেশেই হস্টেল চলত। যাবপুরের ঘটনার তদন্তে নেমে ১১ অগাস্ট গ্রেফতার করা হয় সৌরভ চৌধুরীকে। এরপর ১৩ অগাস্ট গ্রেফতার করা হয় দীপশেখর দত্ত, মনোতোষ ঘোষ নামের দুই পড়ুয়াকে। ১৬ অগাস্ট গ্রেফতার করা হয় সপ্তক কামিল্যা, অসিত সর্দার, মহম্মদ আরিফ, সুমন নস্কর, অঙ্কন সর্দার, মহম্মদ আসিফ আজমলকে। ১৮ অগাস্ট গ্রেফতার করা হল শেখ নাসিম আক্তার, হিংমাশু কর্মকার, সত্যব্রত রায়কে। আবার হস্টেলে ঢুকতে পুলিশকে বাধা দেওয়ার মামলায় শনিবার গ্রেফতার হন জয়দীপ ঘোষ।