সানরাইজার্সের বিরুদ্ধে নামার আগে ফুরফুরে মেজাজে নাইটরা, চিন্তা শুধু ওপেনিং নিয়ে

ঐতিহাসিকভাবে আইপিএলের এই ম্যাচটা কেকেআরের কাছে বরাবরই বড় জলবৎ তরলং হয়ে এসেছে! সানরাইজার্স হায়দরাবাদের সঙ্গে আজ পর্যন্ত আইপিএলে কেকেআরের দেখা হয়েছে সর্বমোট একুশ বার। সানরাইজার্স জিতেছে সাকুল্যে সাতটা ম্যাচ, আর কেকেআর ঠিক তার দ্বিগুণ, চোদ্দো!

মুশকিল হল, ক্রিকেট নামক খেলাটা আবার স্ট্যাটসবুক দিয়ে হয় না। হয়, সেই নির্দিষ্ট দিনে মাঠে কে কেমন করল, কে কেমন খেলল, তার উপর। তা, গত কয়েকটা ম্যাচের ফর্ম বিচার করলে সামান্য হলেও কেন উইলিয়ামসনের সানরাইজার্স হায়দরাবাদকে এগিয়ে রাখতে হবে। টুর্নামেন্টের শুরুতে যারা ছ্যাকরা গাড়ির মতো শুরু করে হঠাৎই পক্ষীরাজের মতো ছুটতে শুরু করেছে! টানা দু’টো ম্যাচ জিতে। উলটো দিকে কেকেআর, তারা আবার প্রথমে ধুঁয়াধার ভাবে টুর্নামেন্ট শুরু করেছিল। চেন্নাই আর মুম্বইকে উড়িয়ে। কিন্তু পরবর্তীতে আরসিবি এবং শেষ ম্যাচে দিল্লি ক্যাপিটালসের কাছে হারের পর কিছুটা হলেও ধাক্কা খেয়েছে।

নাইটদের সবচেয়ে বড় সমস্যা ওপেনিং। অজিঙ্ক রাহানে রান পাচ্ছেন না। তাঁর জায়গায় অ্যারন ফিঞ্চকে কেকেআর আজ শুক্রবার নামায় কি না, দেখার। তিনি নামলে কোন বিদেশি বসবেন, সেটাও প্রশ্ন। একটাই জায়গা- স্যাম বিলিংসকে বসিয়ে শেল্ডন জ্যাকসনকে দিয়ে কিপিং করানো। কেকেআরের একটা সুবিধে, হায়দরাবাদ শুক্রবার অলরাউন্ডার ওয়াশিংটন সুন্দরকে পাবে না। রাহুল ত্রিপাঠিরও নামা নিয়ে সংশয় রয়েছে। কিন্তু তার পরেও জিততে হলে কেকেআরকে প্রভূতভাবে নির্ভর করতে হবে সুনীল নারিন এবং বরুণ চক্রবর্তীর মারণ স্পিন জুটির উপর। মাঝের ওভারে যাঁদের বোলিংয়ের উপর অনেকটা নির্ভর করে থাকে নাইটদের ভাগ্য।

আর এখানেই দ্বিতীয় দুশ্চিন্তা। না, সুনীল নারিনকে নিয়ে নয়। বরুণ চক্রবর্তীকে নিয়ে। গত আইপিএল নিলামের আগে বড় অঙ্ক খরচ করে বরুণকে রেখে দিয়েছিল কেকেআর। কিন্তু এবার তেমন কিছু করতে পারেননি নাইটদের রহস্য স্পিনার। দিল্লির বিরুদ্ধে তো বেধড়ক মার খেয়েছেন। এ দিন প্রাক্ যুদ্ধ সাংবাদিক সম্মেলনে কেকেআর স্পিনারকে জিজ্ঞাসা করা হয়, প্রতিপক্ষ ব্যাটাররা তাঁর রহস্য ধরে ফেলেছে কি না? জবাবে বরুণ বলে দেন, “এটা তো হওয়ারই ছিল। প্রতিপক্ষ আমাকে নিয়ে প্ল্যান করবে। আমাকে পাল্টা দেওয়ার রাস্তা খুঁজতে হবে। তবে গত বারও কিন্তু প্রথম দিকে তেমন উইকেট পাইনি আমি। আইপিএলের ভারত পর্বে ছ’সাত উইকেট পেয়েছিলাম। কিন্তু আমিরশাহিতে পরবর্তী পর্বে প্রচুর উইকেট পাই।” মুম্বই-পুণের সতেজ পিচে খেলা হচ্ছে বলেই কি সমস্যাটা বেশি হচ্ছে? উত্তরে এবার বরুণ বলেন, “দেখুন, আমি অজুহাত দিতে চাই না। বললাম তো, আমাকে উইকেট নেওয়ার নতুন রাস্তা খুঁজে বার করতে হবে।”

তা, তার চেষ্টাও চালাচ্ছেন তামিলনাড়ু স্পিনার। লেগস্পিন করা শুরু করেছেন। উইকেটও পাচ্ছেন। বলছিলেন, “গত দু’বছর ধরে লেগস্পিন করার চেষ্টা করছি মাঝে মাঝে। উইকেটও পেয়েছি। এখন কিছুটা আত্মবিশ্বাসীও লেগস্পিন করানো নিয়ে।” পাশাপাশি সুনীল নারিন টিমে থাকায় তাঁর যে কতটা সুবিধে হয়েছে, সেটাও অকপটে বলে দিয়েছেন বরুণ। “আমার খারাপ সময় চললে, সেটা নিয়ে সুনীলের সঙ্গে আমি কথা বলতে পারি। ও নিজেও সেটা বলে আমাকে। ভেবে ভরসা পাই যে, সুনীলেরও খারাপ সময় আসে। ও-ও সময় সময় মানসিক ভাবে নড়ে যায়। আমার কাছে সুনীল বড় ভাইয়ের মতো।” দেখা যাক, আজ কেকেআরের বরুণ-দেবতা সানরাইজার্সের সূর্যাস্ত ঘটাতে পারেন কিনা?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

5 − 3 =