ব্যারাকপুর : কর্মরত অবস্থায় এক শ্রমিকের মৃত্য ঘিরে শুক্রবার তীব্র উত্তেজনা ছড়ালো জগদ্দলের এলান্স জুটমিলে। মৃত শ্রমিকের নাম বিবেক কুমার রাজভর (৪১)। তিনি মিস্ত্রি বিভাগের শ্রমিক ছিলেন। তাঁর বাড়ি জগদ্দল থানা সংলগ্ন চার নম্বর গলিতে। মিলের শ্রমিক রাজেশ সাউ জানান, এদিন কাজ করার সময় ঠিক পৌনে আটটা নাগাদ আচমকা পেটে ব্যথা ওঠে বিবেকের। তখন মাথা ঘুরে পড়ে গিয়ে বিবেকের বুকে ও মাথায় চোট লাগে। টিফিন টাইমে আটটা নাগাদ মিলের ভেতরে ডিস্পেন্সারিতে বিবেককে চিকিৎসা করাতে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। সেখানে ওষুধ ও ইনজেকশন দেওয়ার পর ফের শারীরিক অবস্থার অবনতি হয় বিবেকের। রাজেশের অভিযোগ, মিলে অ্যাম্বুল্যান্স না থাকায় ওকে ভাটপাড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যেতে অনেক দেরি হয়। গাড়ি করে হাসপাতালে গেলে চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করে। এদিকে হাসপাতাল থেকে ফের বিবেকের মৃতদেহ মিলের ভেতরে আনা হয়। মৃতদেহ ডিস্পেন্সারিতে রেখে তুমুল বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন শ্রমিকরা। শ্রমিকদের বিক্ষোভ ঘিরে মিলের ভিতরে তীব্র উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। তপ্ত পরিস্থিতির সামাল দিতে ঘটনাস্থলে আসে জগদ্দল থানার পুলিশ। শ্রমিকদের দাবি, মৃতের পরিবারকে পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। পরিবারের একজনকে চাকরি দিতে হবে। তাছাড়া মিলে ২৪ ঘণ্টা অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা চালু করতে হবে। তবে বেলার দিকে মিল কর্তৃপক্ষের তরফে ২ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ এবং পরিবারের একজনকে চাকরির আশ্বাস দিলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। মিলের তৃণমূল সমর্থিত জুট টেক্সটাইল ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক অমর কুমার সিংয়ের অভিযোগ, এখানে পাঁচ হাজার জন শ্রমিক কাজ করেন। অথচ ডিস্পেন্সারি অবস্থা খুব খারাপ। এখানে ঠিকমতো চিকিৎসা পরিষেবা মেলে না। ভালো পরিষেবা থাকলে বিবেককে আজ বাঁচানো যেত। শ্রমিক নেতা অমর কুমার সিং জানান, মিল কর্তৃপক্ষ দু’লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। সেটা মৃতের পরিবার মেনে নিয়েছেন। অমরের হুঁশিয়ারি, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে মিলে ২৪ ঘণ্টা অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা চালু না হলে ফের অফিস ঘেরাও করে বিক্ষোভ করা হবে বলে এদিন হুঁশিয়ারি দিলেন শ্রমিক নেতা অমর কুমার সিং।