মাঠ বদল, পরিস্থিতিও বদলে গেল। পোর্ট অব স্পেনে ব্রায়ান লারা ক্রিকেট অ্যাকাডেমিতে সিরিজের তৃতীয় তথা শেষ ওডিআইতে নেমেছিল ভারত। গত দু-ম্যাচের তুলনায় এখানকার পিচ ব্যাটিং সহায়ক। এদিন আর হোঁচট খায়নি ভারত। টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ৫ উইকেটে ৩৫১ রানের বিশাল স্কোর গড়ে ভারত। গত ম্যাচে নজর কেড়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এই ম্যাচেও বিরাট কোহলি-রোহিত শর্মা বিশ্রামে। তাঁদের ছাড়াও বিশাল স্কোর গড়ে ভারত। এই ম্যাচে ছাপ ফেলতে ব্যর্থ ওয়েস্ট ইন্ডিজ ব্যাটিং বিভাগ। ২০০ রানের জয়ে ২-১ ব্যবধানে ওডিআই সিরিজ জিতে নিল টিম ইন্ডিয়া। প্রথম ম্যাচে ১১৫ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে পাঁচ উইকেটে হারানো ভারতীয় শিবিরে অস্বস্তি তৈরি করেছিল। গত ম্যাচে দুই ওপেনারের ভালো শুরুর পর ১৮১ রানেই শেষ হয়ে যায় ভারতের ইনিংস। সহজেই জয় ওয়েস্ট ইন্ডিজের। সমতা ফিরিয়ে আত্মবিশ্বাসে ফুটছিল তারা। তবে ভারতীয় ব্যাটিং নিয়ে যে সমস্যা হচ্ছে, বুঝতে অসুবিধা হয় না। ম্যাচ শেষে ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক হার্দিক পান্ডিয়া জানিয়েছিলেন, পিচ থেকে সমস্যা না থাকলেও ভারতীয় দল ভালো ব্যাটিং করতে পারেনি। সিরিজ নির্ণায়ক ম্যাচেও রোহিত-বিরাট না থাকায় আতঙ্ক ছিলই। তবে তরুণ ওপেনিং জুটি ১৪৩ রান যোগ করে বড় রানের ভিত গড়ে দেন। এরপর সঞ্জু স্যামসন, হার্দিক পান্ডিয়ার বিধ্বংসী ইনিংসে সাড়ে তিনশো পেরিয়ে যায় ভারত। বোর্ডে ৩৫০ প্লাস স্কোরে লক্ষ্য। ভারতীয় পেস আক্রমণে তেমন অভিজ্ঞতা নেই। কিন্তু কে জানতো নতুন বলে ক্যারিবিয়ান শিবিরে বিপর্যয় আনবেন কেরিয়ারের তৃতীয় ওডিআই খেলতে নামা মুকেশ কুমার! ওয়েস্ট ইন্ডিজ ব্যাটিং লাইন আপের প্রথম তিন ব্যাটারকে ফেরালেন মুকেশ। প্রথম স্পেলে একটি মেডেন সহ ৫ ওভারে মাত্র ১৫ রান দিয়ে তিন উইকেট নেন মুকেশ। লর্ড শার্দূল প্রথম স্পেলে নিলেন ২ উইকেট। দশ বছর পর ওডিআই ক্রিকেটে নামা বাঁ হাতি পেসার জয়দেব উনাদকাটও প্রথম স্পেলেই উইকেট নেন। ক্রমশ ম্যাচ শেষ হওয়ার অপেক্ষা বাড়তে থাকে ভারতীয় শিবিরে। ১৭তম ওভারে আক্রমণে আসেন কুলদীপ যাদব। দ্রুতই সেট ব্যাটার অ্যালিক আথানেজের উইকেট নেন। কিছুক্ষণের মধ্যে আরও একটি উইকেট। ওয়েস্ট ইন্ডিজের স্কোর দাঁড়ায় ৮৮-৮। বাকি দুই উইকেট নিলেই ম্যাচ এবং সিরিজ ভারতের দখলে। এর জন্য অনেকটা সময় অপেক্ষা করতে হল। ৩৫ ওভারে নাটক। শেষ বলে আউটের আবেদন ওঠে। ক্যাচ আউটের সিদ্ধান্ত দিয়েছিলেন মাঠের আম্পায়ার মাইকেল গফ। তৃতীয় আম্পায়ার লেগ বিফোরে আউট দেন, যেহেতু মাঠের আম্পায়ার আউট দিয়েছিলেন। যদিও মাইকেল গফ পরিষ্কার জানিয়ে দেন, তিনি ক্যাচের আউট দিয়েছিলেন। ফলে খেলা ফের শুরু হয়। শার্দূল ঠাকুর পরের ওভারের দ্বিতীয় বলে জেডন সিলসকে ক্লিন বোল্ড করে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ইনিংস শেষ করেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে টানা ১৩টি দ্বিপাক্ষিক সিরিজ জয় ভারতের।