পৃথিবীর মধ্য়াকর্ষণ বলকে ছিন্ন করে চাঁদের বৃত্তে চন্দ্রযান-৩

পৃথিবীর কক্ষপথে ১৭ দিন থাকার পর পৃথিবীর মধ্যাকর্ষণ বলকে ছিন্ন করে ১ অগাস্ট চন্দ্রযান-৩ পাড়ি জমাল চাঁদের কক্ষপথের দিকে। এরপর ইসরোর টুইটার হ্যান্ডেল থেকে জানানো হয়, এখনও পর্যন্ত ঠিকভাবেই কাজ করছে চন্দ্রযান-৩। টুইটে লেখা হয়, ‘আই অ্যাম ডুইং গ্রেট!’ প্রতীকী ছবিটি প্রকাশ ইসরো বোঝাতে চায় এখনও পর্যন্ত একেবারে ঠিকভাবেই কাজ করছে চন্দ্রযান-৩।
এদিকে ইসরোর তরফে জানা যাচ্ছে, সোমবার রাতে ট্রান্সলুনার ইনজেকশন পদ্ধতি সঞ্চালনার মাধ্যমে চাঁদের কক্ষপথের দিকে মহাকাশযানটিকে চালু করে দেওয়া হয়। অনেকটা যেন কোনও যাত্রার আগে গাড়িতে স্টার্ট দিয়ে ইঞ্জিন গরম করে দেওয়ার মতোই পদ্ধতি। মহাকাশযানের ক্ষেত্রে এই ট্রান্সলুনার ইনজেকশনের মাধ্যমে ইঞ্জিনগুলিকে সক্রিয় করার প্রক্রিয়া চালাল ইসরো। যাতে সেগুলি গতি বাড়িতে দুরন্ত গড়িতে ছুটে যেতে পারে চাঁদের দিকে। গুরুত্বপূর্ণ এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয় সোমবার ও মঙ্গলবারের সন্ধিক্ষণে। সোমবার মাঝরাতেই ইসরোর তরফে টুইটে জানানো হয়, চন্দ্রযান-৩ পৃথিবীর চারপাশে প্রদক্ষিণ শেষ করেছে। এবার চাঁদের দিকে যাত্রা শুরু করল। ইসট্র্যাকে একটি সফল পেরিজি-ফায়ারিং সম্পন্ন হয়েছে। একইসঙ্গে ইসরো মহাকাশযানটিকে ট্রান্সলুনার কক্ষপথে ইনজেক্টও করেছে। পাশাপাশি এও জানানো হয়, ৫ অগাস্ট ২০২৩ চাঁদের কক্ষপথে প্রবেশ করবে চন্দ্রযান-৩।
এদিকে ইসরোর তরফ থেকে জানানো হয়, চাঁদের কক্ষপথে পাঠানোর আগে চন্দ্রযান-৩-কে আগে পৃথিবীর মোট পাঁচটি কক্ষপথে ধাপে ধাপে উত্থাপন করা হয়েছে। এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার পিছনে রয়েছে ইসরো টেলিমেট্রি, ট্র্যাকিং অ্যান্ড কম্যান্ড নেটওয়ার্ক।
পাশাপাশি এও জানানো হয়েছে, দু’চার দিনে চাঁদে পৌঁছতে তো বিপুল খরচ। যেমনটা আগে এক সপ্তাহের মধ্যেই চাঁদে মহাকাশযান পাঠিয়ে দিতে সমর্থ্য হয়েছিল নাসা। কিন্তু এর জন্য ব্যবহার করা হয়েছিল ভারতের তুলনায় বহুগুণ শক্তিশালী রকেট। এদিকে নাসার মতো বিপুল টাকা নেই ইসরোর কাছে। ব্য়য়বহুল শক্তিশালী রকেট কেনার সামর্থ্যও তাই নেই। তাই ইসরো একটু অন্যরকম ভেবেছে, বেছে নিয়েছে অন্য পথ। যাকে বলে ‘ধীরে চলো নীতি’-ই বাছা হয়েছে। স্লিংশট পদ্ধতির মাধ্যমে ধীরে ধীরে চন্দ্রযান-৩-এর গতি বাড়িয়ে এটিকে এগিয়ে দেওয়া হয়েছে চাঁদের কক্ষপথের দিকে। এখানে বলে রাখা শ্রেয়, পৃথিবী থেকে অনেক দূরের (চাঁদ, মঙ্গল ইত্যাদি) গন্তব্যে মহাকাশযানকে নিয়ে যাওয়ার জন্য ভারতীয় মহাকাশ সংস্থা স্লিংশট পদ্ধতি ব্যবহার করছে। বিজ্ঞানের ভাষায় এবার একটি বলে ‘হোমান ট্রান্সফার অরবিটস। একেবারে না করে ধাপে ধাপে শক্তি বৃদ্ধি করে এরপর সেটিকে গন্তব্যের দিকে পাঠানো হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

18 − 10 =