মঙ্গলাহাটের পোড়াহাটে পরিদর্শনে মুখ্যমন্ত্রী, ব্যবসায়ীদের সাহায্যের আশ্বাস

হাওড়া থানার পাশেই মঙ্গলাহাটের পোড়াহাটে বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে বারোটা নাগাদ বিধ্বংসী আগুন লাগার ঘটনা ঘটে। যদিও হাটের ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, চক্রান্ত করেই এই আগুন লাগানো হয়েছে। হাটের একাংশ ক্ষতিগ্রস্থ হলেও বড় অংশ অল্পের জন্য রক্ষা পায়। যদিও অগ্নিকাণ্ডে কোনও হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি এখনও পর্যন্ত। কয়েকশো কাপড়ের দোকান ছিল এই মার্কেটে। আগুনে ভস্বীভূত একাধিক দোকান। ব্যবসায়ী সূত্রের খবর, প্রায় সব মিলিয়ে ৫ হাজার ব্যবসায়ী যুক্ত এই পোড়াহাটে। এর আগে ২১ শে নভেম্বর ১৯৮৭ সালে এই মার্কেটে বিধ্বংসী আগুন লেগেছিল তাই জন্য এই মার্কেটের নাম পোড়া মার্কেট। ফের ২১শে জুলাই এই মার্কেটে বিধ্বংসী আগুনের ঘটনা ঘটল। এদিন ২১ শে জুলাইয়ের সমাবেশ শেষে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান মুখ্যমন্ত্রী। ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে তাদের সাহায্যের আশ্বাস দেন তিনি।

আগুনের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে দমকলের একে একে মোট ১৮ টি ইঞ্জিন এসে পৌঁছয়। আগুন নিয়ন্ত্রণ করতে হিমশিম খেতে হয় দমকল কর্মীদের। আগুনের আতঙ্কে রাস্তায় বেরিয়ে পড়ে এলাকার মানুষজন। হাওড়া থানার পুলিশ এবং দমকল কর্মীর চেষ্টায় ৫ ঘণ্টা পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে, আগুন লাগার প্রাথমিক কারণ জানা যায়নি।

দমকল সূ্ত্রে জানা যাচ্ছে, বৃহস্পতিবার গভীর রাতে হঠাৎই আগুন লেগে যায় মঙ্গলাহাটে। স্থানীয় বাসিন্দারা দেখেন হাটের দোকানগুলি দাউ দাউ করে জ্বলছে। এরপরই অগ্নিকাণ্ডের জেরে গোটা এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। হাটের পাশেই হাওড়া থানা। থানায় আগুনের খবর দেওয়া হলে সেখান থেকে খবর যায় দমকলে। একে একে ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছয় দমকলের ১৮টি ইঞ্জিন। আগুন নেভানোর কাজ শুরু হয়। দমকল সূত্রে খবর , রাত একটা নাগাদ প্রথম আগুন লাগে। হাটের ছোট ছোট দোকানগুলিতে প্রচুর পরিমাণে জামাকাপড় মজুত ছিল। দোকানগুলি বাঁশ এবং কাঠের কাঠামো দিয়ে তৈরি হওয়ায় দ্রুত আগুন ছড়িয়ে পড়ে। প্রায় পাঁচ হাজার বর্গফুট এলাকা জুড়ে আগুন ছড়িয়ে পড়ে।

যদিও হাটের ব্যবসায়ীদের অভিযোগ কেউ বা কারা জেনে বুঝেই চক্রান্ত করার এই মার্কেটে আগুন লাগিয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে পুলিশ ও প্রশাসনকে বারংবার অভিযোগ জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি বলেই অভিয়োগ ব্যবসায়ীদের। হাটের মালিকানা নিয়েও দীর্ঘদিন ধরেই মামলা চলছে আদালতে। পোড়াহাটের ব্যবসায়ীরা এই সমস্যার স্থায়ী সমাধান চাইছেন।

পোড়াহাটের ব্যবসায়ী সংগ্রাম সমিতির যুগ্ম সম্পাদক সাগর জয়সোয়াল অভিযোগ করে বলেন,’ ২০০৪ সাল থেকে শান্তিরঞ্জন দে নামের এই ব্যক্তি যে ভাবে এই হাটে তাণ্ডব চালাচ্ছে তার বিরুদ্ধে স্থানীয় প্রশাসন থেকে শুরু করে মুখ্যমন্ত্রী সকলকে জানান হয়েছে। এই আগুন শান্তি রঞ্জন দে পুলিশ, প্রশাসনের মদতেই লাগিয়েছে। আমার কাছে এত বছর ধরে যা যা হয়েছে তার সব তথ্য ও প্রমান রয়েছে। আমরা বিচার চাই।’

মোট ক্ষয় ক্ষতির পরিমাণ জানা না গেলেও কয়েক লক্ষাধিক টাকার বেশি ক্ষতি হয়েছে বলেই অনুমান ব্যবসায়ীদের।

গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে হাওড়া সিটি পুলিশ এবং দমকল বিভাগ।  যদিও দমকল সূত্রে খবর ঘটনাস্থলের কাছে গঙ্গা এবং দমকলের সদর দপ্তর থাকায় আগুন নেভানোর কাজে জলের কোনও অভাব হয়নি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

6 − six =