আরামবাগে ভোট পরবর্তী হিংসায় মাথা ফাটল বর্ষীয়ান তৃণমূল নেতার, গ্রেপ্তার ২

হুগলি: ভোট পরবর্তী হিংসা অব্যাহত আরামবাগের বিভিন্ন জায়গায়। এবার আরামবাগ মহকুমার পাড়াবাগনান ও গোঘাট এক নম্বর ব্লকের রঘুবাটি এলাকায় রাজনৈতিকভাবে মারপিটের ঘটনা ঘটে। বিজেপি দুষ্কৃতীরা মাথা ফাটাল তৃণমূল নেতার বলে অভিযোগ। গুরুতর আহত বর্ষীয়ান তৃণমূল নেতার নাম প্রদীপ রায়। এই ঘটনায় দুই জন বিজেপি নেতা গ্রেপ্তার। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃত বিজেপি নেতা হলেন সন্তু মালিক, বাড়ি গোঘাটের সন্তাগ্রামে এবং পঙ্কজ রায়, বাড়ি গোঘাটের রতনপুর। মারধর নিয়ে তৃণমূলের অভিযোগের তীর বিজেপির দিকে। যদিও বিজেপি নেতৃত্ব তাদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করে। তাদের দাবি, বিজেপির এই ধরনের কালচার নয়। তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ফলে এই ঘটনা ঘটেছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রাত ৮টা নাগাদ গোঘাটের রঘুবাটি এলাকায় রাজনৈতিকভাবে গন্ডগোল শুরু হয়। একজন তৃণমূল কর্মীকে আটকে রেখে মারধর করে বিজেপির আশ্রিত দুষ্কৃতীরা বলে অভিযোগ ওঠে। এই খবর পেয়ে গোঘাটের রঘুবাটি এলাকার তৃণমূল নেতা প্রদীপ রায়, সন্তু গ্রামে এলে বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীরা ঘিরে ধরে। এর মধ্যে বেশিভাগই ছিল বহিরাগত বলে অভিযোগ। তৃণমূল নেতা প্রদীপ রায়ের সঙ্গে বচসা থেকে মারধর শুরু হয় এবং তার মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হয়। সেখান থেকে কোনও রকমে প্রাণে বেঁচে বাড়ি ফিরে চিকিৎসা করেন এবং গোঘাট থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। এই বিষয়ে প্রদীপ রায় বলেন, তৃণমূলের জেতা প্রার্থীকে ওই এলাকার বিজেপি নেতারা মানতে পারছে ান। ছাপ্পার অভিযোগ করছে, যা একেবারেই ভিত্তিহীন। সাধারণ মানুষ জনপ্রতিনিধি নির্বাচন করেছে। এতে বলার কি আছে। একজন তৃণমূল কর্মীকে আটকে রেখেছিল। তাকে বাঁচাতে গিয়েই বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীরা মারধর করে। তারপর কোনও রকমে প্রাণে বেঁচে বাড়ি ফিরি। যদিও গ্রেপ্তার হওয়া দুই বিজেপি নেতা সবটাই তৃণমূলের চক্রান্ত বলে দাবি করেন। এই বিষয়ে আরামবাগ বিজেপির সাংগঠনিক জেলার সভাপতি সুশান্ত বেরা বলেন, আমাদের বিজেপি প্রার্থীকে মারধর করা হচ্ছিল তখন গ্রামের মানুষ প্রতিরোধ করে। রাত্রিবেলা কেন বহিরাগতরা আসবে। এর সঙ্গে বিজেপি যুক্ত নয়। অপরদিকে তৃণমূল প্রার্থীর এজেন্ট সহ তার পরিবারের সদস্যদের ব্যাপক মারধর করার অভিযোগ উঠল নির্দল প্রার্থীর সমর্থকদের বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় হুগলির আরামবাগ ব্লকের গৌরহাটি ১ অঞ্চলের পাড়াবাগনান গ্রামে। আক্রান্ত তৃণমূল কর্মী শেখ রাকিবুল ইসলাম। বাবার নাম শেখ শাজাহান আলি সহ তার স্ত্রীকে মারধর করা হয়। এদিন হঠাৎ করেই তৃণমূল কর্মীর বাড়িতে গিয়ে হামলা চালায় এবং লাঠিপেটা সহ ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে বলে অভিযোগ। এই ঘটনায় গুরুতরভাবে জখম হয়েছে শেখ শাজাহান আলি-সহ তার ছেলে। স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসেন আরামবাগ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে। তৃণমূল কর্মীর অভিযোগ, পরাবাগনানের ওই বুথে নির্দল প্রার্থী তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী কাছে হেরে যায়। বিপুল ভোটে জয়লাভ করে তৃণমূল। তাই নির্দল প্রার্থীর অনুগামীরা তৃণমূল কর্মী সহ তার পরিবারের সদস্যদের মারধর করে। আক্রান্ত তৃণমূল কর্মী প্রশাসনের দ্বারস্থ হবে বলে জানা যায়। যদিও নির্দল প্রার্থীর বা তাদের পক্ষ থেকে কোনও অভিযোগ পাওয়া যায়নি। সবমিলিয়ে আরামবাগ মহকুমা জুড়ে ভোট পরবর্তী হিংসার জেরে থমথমে এলাকা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

twelve − 9 =