হুগলি: ভোট দেওয়া নাকি মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকারের মধ্যে পড়ে। কিন্তু সেই গণতান্ত্রিক অধিকার যখন পুকুরের জলে ভাসে তখন গণতন্ত্রের প্রয়োগ নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। হুগলির আরামবাগের ধামসা এলাকায় এইরকমই আশ্চর্যজনক ঘটনা ঘটে। বুথ থেকে ব্যালট বক্স ছিনিয়ে এনে পুকুরে ফেলা হয়। রণক্ষেত্র হয়ে ওঠে সারা এলাকা। অথচ কেন্দ্রীয় বাহিনীর দেখা নেই। অসহায় সিভিক পুলিশ ও রাজ্য পুলিশের একজন কর্মী বট গাছের নীচে দাঁড়িয়ে পুকুরের জলে গড়াগড়ি খাওয়া গণতন্ত্রের ব্যালট বক্স ভাসতে দেখে। জানা গিয়েছে, আরামবাগ ব্লকের আরান্ডি ১ নম্বর অঞ্চলের ধামসা পিসি সেন ইনস্টিটিউটে ভোট চলাকালীন ২৪১ ও ২৪২ নম্বর বুথের পঞ্চায়েত সমিতি এবং জেলা পরিষদের দুইটি ব্যালট বাক্স পুকুরের জলে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে বিজেপির বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে আরামবাগ থানার বিশাল পুলিশ বাহিনী। এদিন পুকুরে দুইটি ব্যালট বাক্স উদ্ধার করার জন্য নামানো হয় একজন প্রশাসনিক কর্মীকে। একটি ব্যালট বক্স প্রশাসন উদ্ধার করতে সক্ষম হলেও আর একটি শেষ পযন্ত পাওয়া যায়নি। অপরদিকে, ভোট শেষ হওয়ার শেষ মুহূর্তে গুলি চলে আরামবাগ মহকুমায়। এবার গুলি চলল খানাকুলে। খানাকুলের নতিবপুর এলাকায় এলোপাথাড়ি গুলি চালানোর অভিযোগ ওঠে। গুলিবিদ্ধ ভোটের লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা তিন ভোটার। ভোট দিতে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হন তারা। এদের মধ্যে এক মহিলাও রয়েছেন। খানাকুলের নতিবপুরে বিহারীলাল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে ভোটের লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন তারা। অভিযোগ, সেই সময় সময় মুখে কালো কাপড় বেঁধে দুষ্কৃতীরা এসে এলোপাথাড়ি গুলি চালাতে থাকে। ঘটনার জেরে গুলি এসে লাগে দু’জনের পেটে ও এক ব্যক্তির নাকে গুলি লাগে বলে অভিযোগ। আহতদের নতিবপুর হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আহতদের নাম কাজল পাঁজা, সৌমেন লালা, অশোক বাউর। সকলেই নতিবপুরের বাসিন্দা। তবে কেন্দ্রীয় বাহিনী এলেও তাদের বুথে দেখা না গেলেও রাস্তায় ও নির্দিষ্ট ঘরের মধ্যে বিলাসবহুলভাবে বসে থাকতে ও দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। পরিশেষে বলা যেতে পারে মানুষ কী তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করতে পারল? এই প্রশ্নটা ২০২৩ এর পঞ্চায়েত নির্বাচনেও প্রশ্ন হয়েই রয়ে গেল!