ভোট ময়দানে বিরোধ করার মতো কেউ নেই : বিদায়ী সভাধিপতি

নিজস্ব প্রতিবেদন, পুরুলিয়া: ভোট ময়দানে বিরোধ করার মতো কেউ নেই। প্রচারে নেমে এমন মন্তব্য করলেন পুরুলিয়া জেলা পরিষদের বিদায়ী সভাধিপতি সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায়। এলাকার মানুষ শুধুমাত্র জয়টুকু চান না, সারা জেলার মধ্যে রেকর্ড মার্জিনে জয় চাইছেন। এমন মন্তব্যই করছেন এই আসনের হেভিওয়েট তৃণমূল প্রার্থী সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায়।
দিন কয়েক আগে পদযাত্রায় জনসংযোগে বেরিয়ে জনগণের সঙ্গে আবেগে ভাসেন তিনি। বাগদা, নরেন্দ্রপুর প্রভৃতি গ্রামের বাসিন্দারা ঘরের মানুষকে পাশে পেয়ে আপ্লুত। পুষ্পবৃষ্টিতে স্বাগত জানালেন প্রার্থীকে। ভবিষ্যৎ নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ পরিকল্পনার কথা বলেন সুজয়বাবু। তিনি জানান, এলাকার বহু গরিব মানুষ বিয়েবাড়ি করতে সমস্যায় পড়েন। প্রতিটি এলাকায় কমিউনিটি হল নির্মাণ করে দেওয়া দরকার।
পুঞ্চা ব্লকের লাখরা, বাগদা, ন’পাড়া, পুঞ্চা, ছিরুডি গ্রাম পঞ্চায়েত নিয়ে পুরুলিয়া জেলা পরিষদের ২৮ নং আসন। কার্যত এই এলাকা সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায় হাতের তালুর মতো চেনেন। বিগত পাঁচ বছর জেলা পরিষদের সভাধিপতি থাকাকালীন ও সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায়ের পলিটিক্যাল কেরিয়ারও এই এলাকা থেকেই। বাম আমল থেকেই এই এলাকায় সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায় পোড়খাওয়া নেতা হিসেবে পরিচিত। তাই এবারে তিনি আরও বেশি প্রত্যাশা করছেন। ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনেও তিনি এই এলাকা থেকে জয়লাভ করে জেলা পরিষদের সভাধিপতির আসনে বসেন। তিনি প্রতিদিন প্রচারে বেরিয়ে একটা কথাই বলছেন, তিনি জয়ের জন্য প্রচার করছেন না। রেকর্ড মার্জিনে জেতার জন্য প্রচার করছেন।
সুজয় ব¨্যােপাধ্যায়ের এবার প্রতিপক্ষ বিজেপির জনপ্রিয় ঘোষ এবং সিপিএমের বিপদতারণ শেখরবাবু। ফলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, বিদায়ী সভাধিপতি যতই বলুক ভোট ময়দানে তাঁর বিরোধ করার মতো কেউ নেই, লড়াই কিন্তু বেশ শক্ত। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে সিপিএম ভালো অবস্থায় না থাকলেও এই এলাকায় কিন্তু এবার সিপিএম জেগে উঠছে। অন্যদিকে বিজেপিও এই নির্বাচনে এক চুল মাটি ছাড়তে নারাজ। তাই জেলা পরিষদের এই ২৮ নম্বর আসনে চারটি পঞ্চায়েতে এলাকায় কোথাও লড়াই হবে সিপিএমের সঙ্গে, কোথাও আবার লড়াই হবে বিজেপির সঙ্গে। যদিও সুজয় ব¨্যােপাধ্যায়ের মূল প্রতিপক্ষ বিজেপির জনপ্রিয় ঘো¡, এমনটাই মনে করছেন এলাকাবাসী। সুজয়বাবু রেকর্ড ভোটে জেতার মন্তব্য প্রসঙ্গে বিজেপির জেলা সভাপতি তথা জেলা পরিষদের ২৪ নং আসনের প্রার্থী বিবেকরাঙ্গা জানান, বিদায়ী সভাধিপতি ভালো করেই জানেন তিনি ওই আসনে হারবেন। কত ভোটে হারবেন সেটাই এখন দেখার। দলে তাঁর আর কোনও গুরুত্ব নেই। কোন আসনে দাঁড়াবেন, সেই সিট তিনি খুঁজে বেড়াচ্ছিলেন। কিন্তু দল তাঁকে হারাবার জন্যই ২৮ নং আসনে টিকিট দিয়েছে।
পুরুলিয়া জেলার পুঞ্চা ব্লকের অন্তর্গত জেলা পরিষদের ২৮ নং আসন যেন তৃণমূলের কাছে সম্মানরক্ষার লড়াই। এমনটাই মত রাজনীতির কারবারিদের। এখন দেখার জেলা পরিষদের এই ভিআইপি আসন শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস, বিজেপি নাকি সিপিএম দখল করে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

6 − 5 =