এবার প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় অভিনেত্রী তথা যুব তৃণমূলের রাজ্য সভানেত্রী সায়নী ঘোষকে তলব করল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। ইডি সূত্রে খবর, শুক্রবার তাঁকে কলকাতায় ইডি-র দপ্তরে হাজিরা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এনফোর্সমেন্ট দপ্তরের তরফ থেকে এও জানা গেছে, হুগলির বহিষ্কৃত যুবনেতা কুন্তল ঘোষের সম্পত্তি নিয়ে তদন্তে নেমে গোয়েন্দাদের হাতে আসে সায়নীর নাম। সেই কারণেই এবার তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চান তদন্তকারীরা। সঙ্গে দশ বছরে আয়কর রিটার্নের হিসাবও জমা দিতে বলা হয়েছে সায়নীকে। পাশাপাশি তাঁর সমস্ত ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের নথিও চেয়েছে ইডি। এই সমস্ত অ্যাকাউন্টের শুরু থেকে যাবতীয় লেনদেনের হিসাবও চাওয়া হয়েছে বলে জানতে পারা যাচ্ছে। চাওয়া হয়েছে তাঁর যাবতীয় সম্পত্তির খতিয়ান। কোথায় কোথায় তাঁর ফ্ল্যাট রয়েছে, বাড়ি রয়েছে, জমি রয়েছে তার খতিয়ান জানতে চাওয়া হয়েছে। চাওয়া হয়েছে অস্থাবর সম্পত্তির হিসাব-নিকেশও। অর্থাৎ আগামী শুক্রবার শুধু হাজিরা দিলেই হবে না। এই সমস্ত তথ্য নিয়ে ইডি দপ্তরে যেতে হবে সায়নীকে।
ওয়াকিবহাল মহলের মতে, সায়নীর যাবতীয় সম্পত্তির খতিয়ানে কোথাও কোনও গরমিল রয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখতেই একসঙ্গে একগুচ্ছ নথি চেয়ে পাঠানো হয়েছে ইডির তরফে। তাঁর নামে রয়েছে, নাকি অন্য কারও নামে রয়েছে সবই খতিয়ে দেখতে চাইছেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকেরা। ইডি সূত্রে খবর, শুক্রবার যদি এই সমস্ত তথ্য না নিয়ে সিজিওতে না যান সায়নী তবে তাঁর কাছ থেকে ফের এই তথ্যগুলি চাওয়া হতে পারে। অর্থাৎ, নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় নাম জড়িয়ে যাওয়ার জেরে এত সহজে স্বস্তি পাচ্ছেন না সায়নী।
যদিও সায়নীকে পঞ্চায়েত ভোটের আগে তলব নিয়ে সরব তৃণমূল। সায়নীকে তলব করা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ কেন ভোটের আগে সায়নীকে তলব করা হল এবং উদ্দেশ্যটা কী তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি। তবে এ নিয়ে সায়নীর তরফে কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
উল্লেখ্য, কুন্তল ঘোষের সঙ্গে সায়নী ঘোষের একাধিক ছবি সামনে এসেছিল। তিনি কি কুন্তল ঘোষকে চেনেন তবে তার উত্তরে সায়নী জানান,’আমি কুন্তল ঘোষকে চিনি না এমনটা কখনই বলব না। আমাদের একাধিক ছবিতে দেখা গিয়েছে সেই বিষয়টিও জানি। আমরা প্রতিদিন কাজের সূত্রে একাধিক জায়গায় যাই। আমাদের অনেকের সঙ্গে দেখা হয়। অনেকে আমাদের সঙ্গে এসে ছবি তোলেন। সকলকে চেনা তো সম্ভব নয়। তবে আমি কুন্তলকে চিনি।‘ সঙ্গে এও জানান, কুন্তল যুব দলে ছিলেন। ফলে সব মিলিয়ে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় সায়নী ঘোষকে তলব অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।
এদিকে বুধবার ছিল বেলেঘাটা ৩৩ পল্লীর খুঁটি পুজো। এ বছর ২৩ তম পুজো। শৈলার্তি এ বছরের থিম। থিমের শিল্পী সুশান্ত বন্দোপাধ্যায়। উল্টো রথের দিন খুঁটি পুজোর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন অভিনেত্রী স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায় সহ আরও বেশ কিছু অভিনেত্রী। কলকাতা পুরসভার পুরপিতা সন্দীপ রঞ্জন বক্সি সহ বেশ কয়েকজন পুরপিতা। কিন্তু তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে সায়নী ঘোষের ওই অনুষ্ঠানে আসার কথা থাকলেও তিনি আসেননি। অনুষ্ঠানের ব্যানারে রাজ্য যুব সম্পাদক বলে উল্লেখ ছিল তাঁর নাম। তবে খুঁটি পুজো চলাকালীন পুজো উদ্যোক্তারা তাঁর নামের নীচে থাকা পদ বাদ দেন ব্যানার থেকে। পুজো উদ্যোক্তা সুশান্ত সাহার বক্তব্য, সায়নী ঘোষের পদ ভুল প্রিন্ট হয়েছিল বলেই ব্যানার থেকে সরানো হয়েছে তাঁর পদের নাম।