অল্পের জন্য ব্যাটের পাশ দিয়ে কিপারের হাতে জমা পড়ছে বল। গ্যালারিতে গর্জন বাড়ছে। কিন্তু প্রত্যেকটা রানে অস্বস্তি। এজবাস্টনে চতুর্থ দিনের শেষেই প্রত্যাশা ছিল রোমাঞ্চকর একটা দিন অপেক্ষা করছে। যদিও বৃষ্টিতে অস্বস্তি বাড়ে। প্রথম সেশনে কোনও খেলা হয়নি। নির্ধারিত সময়ের আগেই লাঞ্চ বিরতি নেওয়া হয়। শেষ দিন অস্ট্রেলিয়ার প্রয়োজন ছিল ১৭৪ রান। ইংল্যান্ডের দরকার ৭ উইকেট। দিনের খেলার বেশ কিছু ওভার নষ্ট হয়। অস্ট্রেলিয়ার জন্য লক্ষ্য দাঁড়ায় ৬৭ ওভারে ১৭৪ রান। অস্ট্রেলিয়ার ৮ উইকেট তুলে নিয়ে জয়ের প্রত্যাশা তৈরি করে ইংল্যান্ড। ইংল্যান্ডের কাছে সুযোগ ছিল দ্বিতীয় নতুন বল নেওয়ার। অবশেষে দিনের খেলার ১২ ওভার বাকি থাকতে দ্বিতীয় নতুন বল নেয় ইংল্যান্ড। অস্ট্রেলিয়ার তখন প্রয়োজন আর ২৭ রান। ক্রিজে নাথান লিয়ঁ এবং প্যাট কামিন্স জুটি। যে কোনও দিকেই ঝুঁকতে পারে ম্যাচ। বিশেষ করে ২০০৫ সালের সেই ম্যাচের পরিসংখ্যান যেমন ছিল। ২৮২ রান তাড়া করতে নেমে মাত্র ২ রানে হেরেছিল অজিরা। তবে দ্বিতীয় নতুন বলে নাথান লিয়ঁ অনবদ্য বাউন্ডারি মারায় ক্রমশ যেন ইংল্যান্ড শিবিরে হতাশা ঘিরে ধরে। ক্রিকেটে সবই সম্ভব। জয়সূচক রান না আসা অবধি ভরসা নেই। একদিকে স্টুয়ার্ট ব্রড, অন্যদিকে ওলি রবিনসন। ২৩ রান, ২ উইকেট। প্যাট কামিন্স-নাথান লিয়ঁ জুটি ধীরে ধীরে লক্ষ্যের দিকে এগচ্ছিলেন। প্রতিটা রান কত জরুরি জ্যাক ক্রলির ফিল্ডিং মিসে টের পেল ইংল্যান্ড। প্যাট কামিন্সের ড্রাইভ, হাওয়ায় ছিল। ক্যাচের সুযোগ ছিল না। বাউন্ডারি লাইনে বল অবধি পৌঁছলেও বাঁচাতে পারলেন না ক্রলি। অস্ট্রেলিয়ার লক্ষ্য দাঁড়ায় ১৭ রানে। তখন পুরনো মুহূর্ত ভেসে আসছে ইংল্যান্ডের। নিজের বলে ক্যাচ মিস হয়েছিল রুটের, বেন স্টোকস অনবদ্য একটা ক্যাচের চেষ্টা করছিলেন, বল হাতে এলেও জমেনি। সেই দুটো হলে, কী হতে পারতো! স্টুয়ার্ট ব্রডের বলে মিড অনের ওপর দিয়ে বাউন্ডারি নাথান লিয়ঁর। সকলেই অবাক তাঁর শট দেখে। লিয়ঁর অভিব্যক্তিতে কোনও বদল নেই। স্পেশালিস্ট ব্যাটারের মতোই খেলছিলেন। অস্ট্রেলিয়ার প্রয়োজন তখন ৬ রান। ইংল্যান্ড শিবিরে প্রত্যাশা, যদি ২০০৫ সালের পুনরাবৃত্তি হয়! টিম মিটিং শুরু হয় ইংল্যান্ডের। কিন্তু রবিনসনই বোলিং কন্টিনিউ করেন। ব্রড বেছে নেন শর্ট পিচ ডেলিভারি। শর্ট লেগে ওলি পোপ। যদি কিছু হয়! তিনটে সিঙ্গল এবং প্যাট কামিন্সের ব্যাটের কানায় লেগে বল বাউন্ডারি লাইনে পৌঁছতেই মহাকাব্যিক জয় অস্ট্রেলিয়ার। নবম উইকেটে ৫৫ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি প্যাট কামিন্স-নাথান লিয়ঁর।