ভাঙড়ের বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকিকে কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা দিতে হবে, এমনই নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্টে ভাঙড়ের বিধায়কের নিরাপত্তা সংক্রান্ত মামলার শুনানি ছিল। সওয়াল-জবাব শেষে ভাঙড়ের বিধায়ককে কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিরাপত্তা দেওয়ার নির্দেশ দিতে গিয়ে বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা জানান, ‘বর্তমান নির্বাচনের পরিবেশ ও রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে ভাঙড়ের বিধায়কের কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা পাওয়ার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। যত দ্রুত সম্ভব বিধায়কের ঝুঁকি বিবেচনা করে তাঁকে কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা দিতে হবে।‘
এদিকে মনোনয়ন পর্ব থেকে দফায় দফায় উত্তপ্ত দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড়। আর এই মনোনয়ন পর্বে যে ছবি দেখেছেন ভাঙড়ের বাসিন্দারা তাতে পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় হিংসা ও সন্ত্রাস আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের। এদিকে গোটা পরিস্থিতির জন্য ভাঙড়ে এই বশৃঙ্খল পরিস্থিতির জন্য আইএসএফ বিধায়ক ও তাঁর দলের দিকে অভিযোগের আঙুল তোলা হয় শাসকদলের তরফ থেকে। ভাঙড় নিয়ে শুরু হয় রাজনৈতিক তরজাও। তারই মাঝে এমনই এক রায় দিল কলকাতা হাইকোর্ট।
পঞ্চায়েত নির্বাচন ঘোষণা হওয়ার আগেই ক্যানিং পূর্বের তৃণমূল বিধায়ক শওকত মোল্লাকে ভাঙড়ের পর্যবেক্ষক নিয়োগ করেছে তৃণমূল। পঞ্চায়েত নির্বাচনের মনোনয়ন সময় দফায় দফায় বোমাবাজি ও গুলি চালনার ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে ভাঙড়। এই ঘটনার জন্য আইএসএফ ও তৃণমূল পরস্পরের দিকে আভিযোগের আঙুল তোলে।
এদিকে ভাঙড়ের পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠার পর শওকত মোল্লাকে জেড ক্যাটেগরি নিরাপত্তা দেওয়ার কথা ঘোষণা করে রাজ্য সরকার। অন্যদিকে নিরাপত্তা চেয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্টমন্ত্রী অমিত শাহকে চিঠি লেখেন নওশাদও। আইএসএফ বিধায়ককে কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা দেওয়া হবে বলে শোনা গেলেও তাঁকে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। এরপরই নিরাপত্তা চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হন নওশাদ। সেই মামলাতে আজ এই রায় দিল কলকাতা হাইকোর্ট। নওশাদকে কতজন নিরাপত্তারক্ষী দেওয়া হবে, তা কেন্দ্রকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে বলেই জানিয়েছে আদালত। আদালত সূত্রে খবর, সোমবার এই মামলার পরবর্তী শুনানি। সেদিন কেন্দ্রের থেকে রিপোর্ট তলব করেছে আদালত।
অন্যদিকে পঞ্চায়েত ভোটে সব জেলায় কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট। সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিমক কোর্টের দ্বারস্থ হয় রাজ্য সরকার ও রাজ্য নির্বাচন কমিশন। দেশের সর্বোচ্চ আদালত এই মামলার শুনানিতে মঙ্গলবার জানিয়েছে, যে কলকাতা হাইকোর্টের রায়ে সুপ্রিম কোর্ট হস্তক্ষেপ করবে না। এদিন সুপ্রিম কোর্টের কড়া মন্তব্যের মুখে পড়ে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। ‘ভোট করানো মানে হিংসার লাইসেন্স নয়’, কমিশনকে এমনটাই জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। নির্বাচন কমিশন এখন কবে বাহিনী মোতায়েন করে, সেদিকেই নজর বঙ্গের রাজনীতিবিদদের।