এবার রাজ্য পরিবহণ দপ্তরের সচিব সৌমিত্র মোহনের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ। আদালত এর আগে যে নির্দেশ দিয়েছিল দপ্তরকে, তা পরিবহণ সচিব ঠিকঠাক কার্যকর করেননি এই ইস্যুতেই কলকাতা হাইকোর্টের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন এক মামলাকারী। এরপরই এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে পরিবহণ দপ্তরের সচিবের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা করার অনুমতি দেয় হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানম ও বিচারপতি অজয় কুমার গুপ্তার বেঞ্চ। আদালত সূত্রে খবর, আগামী সপ্তাহেই মামলার শুনানির সম্ভাবনা রয়েছে।
প্রসঙ্গত, রাজ্যে বেসরকারি বাস ও মিনিবাসগুলির ভাড়া নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে সমস্যা চলে আসছে। পেট্রোপণ্যের মূল্য বৃদ্ধি ও কোভিড পরবর্তী সময়ে বাসভাড়া নিয়ে সমস্যা আরও বড় আখার নেয়। কারণ, বেসরকারি বাস মালিক সংগঠনগুলি দাবি করে এসেছে, কোভিড পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে বাস ভাড়া না বাড়ানো ছাড়া উপায় নেই। এদিকে রাজ্য সরকারও আবার বাস ভাড়া বাড়াতে নারাজ। এমন অবস্থায় একাধিকবার বাস মালিক সংগঠনগুলির সঙ্গে বৈঠকেও বসে সমস্যার সমাধান হয়নি।বাস ভাড়া নিয়ে জট না কাটায়, শেষ পর্যন্ত মামলাও হয় কলকাতা হাইকোর্টে। হাইকোর্টের তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানমের বেঞ্চে হলফনামা জমা দিয়েছিল রাজ্য জানায়, ২০১৮ সালের পর থেকে রাজ্যের তরফে বেসরকারি বাস ও মিনিবাসের ভাড়া বাড়ানো হয়নি। রাজ্যের বক্তব্য অনুযায়ী, সেটিই ছিল বাস ও মিনিবাসের সর্বশেষ প্রকাশিত ভাড়া তালিকা। অর্থাৎ, সেটি ছিল কোভিড কালের আগে। এরপরই ২০২৩-এর এপ্রিলে কলকাতা হাইকোর্টের তরফে নির্দেশ দেওয়া হয় রাজ্য সরকার যে ভাড়া স্থির করে দিয়েছে, সেই ভাড়াই নিতে হবে। অর্থাৎ, সেই অনুযায়ী ২০১৮ সালের তালিকাই কার্যকর হওয়ার কথা। এর পাশাপাশি বেসরকারি বাস ও মিনিবাসগুলিতে ভাড়ার তালিকাও সাঁটানোর নির্দেশ দেওয়া হয়। সঙ্গে এই সংক্রান্ত বিষয়ে যাত্রীদের কোনও অভিযোগ জানানোর থাকলে, সেই অভিযোগ জানানোর জন্য একটি টোল ফ্রি নম্বরও বাসগুলির ভিতরে ও বাইরে লিখে রাখার কথা বলা হয়েছিল। হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চের সেই নির্দেশের পর দুই মাস পেরিয়ে গিয়েছে। আর এখানেই মামলাকারীর অভিযোগ, আদালতের নির্দেশ ঠিকঠাক পালন করা হয়নি। শহর কলকাতা ও রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় বাসগুলিতে ভাড়ার তালিকা নজরে আসছে না বলেই জানান তিনি। একইসঙ্গে অভিযোগ, বাসভাড়ার তালিকার তোয়াক্কা না করেই যেমন খুশি ভাড়া নেওয়া হচ্ছে। আর এরই রেশ ধরে মামলাকারীর বক্তব্য, হাইকোর্টের নির্দেশের পরেও সক্রিয় ভূমিকায় দেখা যায়নি পরিবহণ দপ্তরের সচিবকে।