‘বিপর্যয়’ শক্তি হারিয়ে হয়েছে নিম্নচাপ, রাজস্থানের বিভিন্ন এলাকায় প্রবল বৃষ্টি, ঘূর্ণিঝড়ের দাপটে গুজরাতে বিদ্যুৎহীন হাজারের বেশি গ্রাম

আমদাবাদ: বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় গুজরাতের উপকূলীয় অঞ্চলে অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় হয়ে আঘাত হেনেছিল ‘বিপর্যয়’। রাত থেকে ক্রমশ শক্তি খুইয়েছে ঘূর্ণিঝড়। তবে শুক্রবার সন্ধের মধ্যে ঘূর্ণিঝড় শক্তি হারিয়ে নিম্নচাপে পরিণত হবে। আবহাওয়া বিভাগ জানিয়েছে যে ঘূর্ণিঝড়টি এখন সমুদ্র থেকে স্থলভাগে চলে এসেছে। এর প্রভাবে গুজরাতে ভারী বৃষ্টি হয়েছে। শুক্রবার রাজস্থানে ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।
তবে ইতিমধ্যেই অতি তীব্র ঘূর্ণিঝড় বিপর্যয় -এর বলি হয়েছেন ২ জন। গুজরাতে এখনও পর্যন্তù ২২ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গিয়েছে। প্রবল ঝড় ও ভারী বৃষ্টিতে বৈদ্যুতিক খুঁটি এবং গাছ উপড়ে গিয়েছে বিভিন্ন জায়গায়।
মৌসম ভবন জানাচ্ছে, শুক্রবার সকালের দিকেও দাপট থাকবে ‘বিপর্যয়ের’। সেটি দুপুরের দিকে প্রবল ঘূর্ণিঝড় থেকে শক্তি হারিয়ে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়ে উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হবে। তার পর দক্ষিণ রাজস্থানে ঢুকবে সন্ধ্যার দিকে। এই সময় ঝড়ের গতিবেগ থাকবে ঘণ্টায় ৭৫-৮৫ কিলোমিটার। তার পর সেটি আরও শক্তি হারিয়ে গভীর নিম্নচাপে রূপ নেবে। এর প্রভাব পড়বে জোধপুর, জয়সলমের, পালি এবং সিরোহী জেলায়। রাজস্থানের এই জেলাগুলিতে শুক্রবার অতি ভারী বৃষ্টি হবে বলে জানিয়েছেন মৌসম ভবন।
ইতিমধ্যেই ঝড়ের তাণ্ডবে তছনছ হয়ে গিয়েছে গুজরাতের উপকূলবর্তী এলাকা। বিস্তীর্ণ এলাকা দীর্ঘক্ষণ ধরে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন। প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের খবর মেলা মাত্রই শুরু হয়েছিল তৎপরতা। গুজরাতে গির ও কচ্ছে ২০০টি উদ্ধারকারী দল মোতায়েন করা হয়েছিল। বিশেষত, গিরে সিংহ ও বন্যপ্রাণীর ক্ষতি রুখতে তৎপরতা ছিল। গিরের জসধর রেঞ্জে ঝড়ের সময় খোলা কুয়োয় পড়ে যাওয়া দু’টি সিংহ শাবকেও উদ্ধার করা হয়।
প্রবল বৃষ্টিতে ভূজের ভবানীপুর গ্রামের একটি সেতু ভেসে গিয়েছে। প্রবল ঝড়ের সম্মুখীন হয়েছিল গুজরাতের মুoা, মাণ্ডবী, ঝাকাও-সহ বিভিন্ন জায়গা। গাছ পড়ে লন্ডভন্ড হয়ে গিয়েছে বিভিন্ন এলাকা। প্রবল ঝড়ে ৪ হাজার ৬০০টি গ্রাম বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন। অসংখ্য বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে গিয়েছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় oুত গতিতে চলছে কাজ।
এ ছাড়াও রাজসামন্দ, দুঙ্গারপুরে শুক্র এবং শনিবারে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। তবে শুক্রবার আর সমুদ্রপথে নয়, স্থলপথ দিয়েই রাজস্থানের দিকে এগোচ্ছে ‘বিপর্যয়’। শুক্রবার সকাল থেকেই রাজস্থানের জালোর এবং বারমের জেলায় প্রবল বৃষ্টি হয়। রাজস্থানের আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, শুক্রবার সকালে জালোরে ৬৯ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। অতি ভারী বৃষ্টির জন্য জালোর এবং বারমেরে লাল সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
মৌসম ভবন জানিয়েছে, জয়সলমের, বারমের, জালোর এবং জোধপুরে বৃষ্টির সঙ্গে ৬০-৭০ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়া বইবে। শনিবার একই পরিস্থিতি থাকবে জোধপুর, উধয়পুর এবং অজমেরে। ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস থাকায় ইতিমধ্যেই বিপর্যয় মোকাবিলায় রাজস্থানের জালোরে উদ্ধারকারী দল মোতায়েন করা হয়েছে। বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী জানাচ্ছে রাজস্থানে এখনও প্রাণহানির খবর মেলেনি।

 

 

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

8 + 19 =