গরমের জ্বালা জুড়িয়ে উত্তরবঙ্গে বর্ষার বৃষ্টি শুরু। আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাভাস, বৃহস্পতি ও শুক্রবার উত্তরবঙ্গে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির সতর্কতা। পার্বত্য এলাকায় ধস আর নিচু এলাকায় প্লাবনের আশঙ্কা রয়েছে। এদিকে উত্তরবঙ্গের মালদায় মৌসুমী অক্ষরেখা থমকে। এদিকে দক্ষিণবঙ্গে একইসঙ্গে চলবে প্রাক বর্ষার বৃষ্টি এবং তাপপ্রবাহ। তবে রবিবার দক্ষিণবঙ্গে হাওয়া বদলের সম্ভাবনা। আপাতত কলকাতায় আর্দ্রতাজনিত অস্বস্তিকর আবহাওয়া থাকবে এমনটাই জানিয়েছে আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর। যদিও জলপাইগুড়িতে মৌসুমী বায়ু বা বর্ষা প্রবেশের স্বাভাবিক দিন ৭ জুন। বাংলায় এবার পাঁচ দিন দেরিতে বর্ষার আগমন হয়েছে। সোমবার থেকে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমী অক্ষরেখা, মালদহের ওপর দিয়ে অবস্থান করছে। রবিবার থেকে মৌসুমী বায়ু সক্রিয় হলে দক্ষিণবঙ্গে বর্ষা প্রবেশের অনুকূল পরিস্থিতি তৈরি হবে। সেক্ষেত্রে রবিবার থেকে বুধবারের মধ্যে দক্ষিণবঙ্গে বর্ষা প্রবেশের অনুকূল পরিস্থিতি।
অর্থাৎ, রবিবারের আগে বর্ষা নয় দক্ষিণবঙ্গে। বাংলায় বর্ষার প্রবেশ করলেও থমকে আছে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমী বায়ু। আপাতত মালদহের উপরে তার অবস্থান। ১৮ থেকে ২১ তারিখের মধ্যে ফের সক্রিয় হতে পারে মৌসুমী বায়ু এমনটাই অনুমান আবহাওয়াবিদদের।
এদিকে আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর সূত্রে খবর, কলকাতা শহরে বাড়ল রাতের তাপমাত্রা। কলকাতায় গরম ও আর্দ্রতাজনিত অস্বস্তিকর আবহাওয়া। বৃহস্পতিবার বেলা যত বাড়বে; অস্বস্তি ততটাই বাড়বে। বজ্রবিদ্যুৎ-সহ হালকা বৃষ্টির সম্ভাবনা। বাতাসে জলীয় বাষ্প থাকায় আর্দ্রতাজনিত অস্বস্তিও থাকবে। বৃষ্টি হলেও অস্বস্তি পিছু ছাড়বে না।
বৃহস্পতিবার কলকাতা শহরে সকালে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৩০.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা স্বাভাবিকের তুলনায় ৪ ডিগ্রি বেশি। বুধবার বিকেলে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৮.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। স্বাভাবিকের থেকে যা ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি। বাতাসে আপেক্ষিক আর্দ্রতার পরিমাণ ৪৬ থেকে ৮৭ শতাংশ। আগামী ২৪ ঘণ্টায় কলকাতা শহরে তাপমাত্রা থাকবে ৩০ থেকে ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
এদিকে উত্তরবঙ্গে আজ ও কাল ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির সতর্কতা। বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বিক্ষিপ্ত ভাবে বৃষ্টির সম্ভাবনা উত্তরবঙ্গের সব জেলাতে ১৭ জুন শনিবার পর্যন্ত। শনিবার বৃষ্টির পরিমাণ কমবে। আগামী শুক্রবার পর্যন্ত ভারী বৃষ্টি থেকে অতি ভারী বৃষ্টির সতর্কতা। ২০০ মিলিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টির সতর্কতা কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ির কিছু অংশে। পার্বত্য এলাকায় ভারী বৃষ্টিতে ল্যান্ডস্লাইড হওয়ার সম্ভাবনা থাকছে। নীচু এলাকা প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা।
এদিকে দক্ষিণবঙ্গের ছবিটা ঠিক উল্টো। পশ্চিমে তাপপ্রবাহ চলবে রবিবার পর্যন্ত। বাকি জেলাতেও গরম ও অস্বস্তিকর আবহাওয়া। বজ্রবিদ্যুৎ-সহ হালকা বৃষ্টি হলেও অস্বস্তি পিছু ছাড়বে না। শনিবার পর্যন্ত তাপপ্রবাহ চলবে পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, ঝাড়গ্রাম, পশ্চিম মেদিনীপুর, পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমানে। রবিবার তাপপ্রবাহ থাকবে পুরুলিয়, বাঁকুড়া এবং ঝাড়গ্রাম, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায়। বাকি জেলাতেও অস্বস্তিকর আবহাওয়া গরম বাড়বে। বজ্রবিদ্যুৎ-সহ কোথাও বৃষ্টি হলেও আর্দ্রতাজনিত অস্বস্তি থাকবে শুক্রবার পর্যন্ত। কলকাতা-সহ উপকূলের জেলাগুলিতে বজ্রবিদ্যুৎ সহ বৃষ্টির পরিমান বাড়বে। বৃষ্টি হলেও আর্দ্রতাজনিত অস্বস্তিও থাকবে।
অন্যদিকে গুজরাত উপকূলের দিকে ধেয়ে আসছে বিপর্যয়। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আছড়ে পড়তে পারে স্থলভাগে। এর গতিবেগ থাকবে সর্বোচ্চ ঘন্টায় ১৪৫ কিলোমিটার। অতি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় বিপর্যয় উত্তর দিকে অভিমুখ ছিল, বৃহস্পতিবার সকালে সেটি অভিমুখ পরিবর্তন করে উত্তর ও উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হচ্ছে আরব সাগরে। বাংলাদেশের দেওয়া নাম ঘূর্ণিঝড় ‘বিপর্যয়’ পাকিস্তান ও ভারতবর্ষের মাঝামাঝি উপকূলে আছড়ে পড়বে। গুজরাতের জাকাও বন্দরের কাছাকাছি এটি আছড়ে পড়ার সম্ভাবনা। এর ফলে গুজরাতের মান্ডভি, জামনগর, পোরবন্দর, সৌরাষ্ট্র, কচ্ছ এলাকায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা।