ব্যবসায়ী রাজু ঝা খুনের ঘটনায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা। একইসঙ্গে এ নির্দেশও দেন, চার মাসের মধ্যে এই তদন্ত শেষ করার। পাশাপাশি, ওই খুনের ঘটনার সঙ্গে কয়লা পাচার মামলার যোগ আছে বলেও উল্লেখ করেন বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা। এই প্রসঙ্গে বিচারপতি পাশাপাশি এ নির্দেশও দেন, ‘রাজ্য পুলিশ অবিলম্বে সিবিআই ও অ্যান্টি কোরাপশন ব্রাঞ্চের এসপি-কে কেস ডায়েরি সহ যাবতীয় নথি হস্তান্তর করবে।‘ বিচারপতি মান্থার পর্যবেক্ষণ, গত চার দশক ধরে কয়লা পাচার একটা বড় ইস্যু। এই খুনের তদন্তভার সিবিআই-এর হতে না গেলে কয়লা পাচার মামলার তদন্তও ধাক্কা খাবে বলে মনে করেন তিনি। এরই রেশ ধরে বিচারপতি মান্থার মন্তব্য, ‘কোনও কোনও অভিযুক্ত মনে করছেন সিবিআই-এর হাতে তদন্ত গেলে আমি রক্ষা পাব। কেউ আবার ভাবছে রাজ্যের হাতে তদন্ত থাকলে আমার সুবিধা।’ এদিকে এই হত্যাকাণ্ডের দিন রাজু ঝা-র সঙ্গে একই গাড়িতে ছিলেন আবদুল লতিফ, যাঁর নাম রয়েছে কয়লা পাচার মামলার চার্জশিটে। তাই কয়লা পাচার ও খুনের মধ্যে যোগ রয়েছে এমন ধারনাই পোষণ করছেন বিচারপতি তাও উল্লেখ করেন। এদিনের শুনানিতে রাজু ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী নরেন্দ্র খারকার আইনজীবী জানান, ‘ইতিমধ্যে নরেন্দ্রর সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত হয়েছে। ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টও সিজ করা হয়েছে।‘ এরই পাশাপাশি খারকারের আইনজীবী এ প্রশ্নও তোলেন, তাঁর মক্কেলের নামে এফআইআর না থাকা সত্ত্বেও কেন হয়রানি করা হচ্ছে তা নিয়ে। সঙ্গে এও উল্লেখ করেন, খুন হওয়া ব্যবসায়ী রাজু ঝা ও নরেন্দ্র দুজনেই কয়লা পাচার মামলার সাক্ষী ছিলেন।
অন্যদিকে, রাজু ঝা-র স্ত্রী এদিন আদালতে জানান, গত ১ এপ্রিল শক্তিগড়ে রাজু ঝা খুন হন। অথচ সিবিআই এপ্রিলের শেষে তাঁকে কয়লা মামলায় সমন পাঠিয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমাদের আশঙ্কা এই কয়লা, গরু পাচারের ভিড়ে খুনের তদন্ত হারিয়ে যাবে।‘
এদিকে রাজ্যের তরফ থেকে দাবি করা হয়, তারা খুনের কিনারা করার খুব কাছে পৌঁছে গিয়েছে। তদন্ত হস্তান্তর করা হলে অসুবিধা হতে পারে বলে দাবি রাজ্যের। তবে অ্যাসিস্ট্যান্ট সলিসিটর জেনারেল জানান, ‘কয়লা পাচার ও রাজু খুনের মধ্যে খুব গভীর যোগ আছে। তাই আমরা তদন্ত হাতে নিতে প্রস্তুত।’
বিচারপতি মান্থা সব পক্ষের বক্তব্য শুনে জানান, ‘কয়লা মামলায় চার্জশিটে রাজু ঝা অভিযুক্ত না হলেও ২০১৫ সাল থেকে নানা অভিযোগে অভিযুক্ত তিনি। যেহেতু কয়লা, গরু পাচারের মামলা সিবিআই তদন্ত করছে, আর দুটি ঘটনায় যোগ আছে তাই আদালত মনে করে রাজু ঝা খুনের তদন্ত সিবিআই করুক। আদালত নিশ্চিত, এই খুনের সঙ্গে কয়লা পাচার মামলার কিছু যোগ আছে।’