মনোনয়নের সময়সীমা বাড়ানোর ক্ষেত্রে কমিশনের সিদ্ধান্ত-ই চূড়ান্ত, রায় হাইকোর্টের

পঞ্চায়েত নির্বাচনের মনোনয়ন পর্বের সময়সীমা বৃদ্ধি করা হবে কি না, সেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার ভার রাজ্য নির্বাচন কমিশনের হাতেই ছাড়ল কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম ও বিচারপতি হিরন্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ। সোমবার শুনানির পর রায়দান স্থগিত রাখার পর রায়দান হয় মঙ্গলবার। এদিনের এই রায়ে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তের ওপর কোনও হস্তক্ষেপ করল না হাইকোর্ট। কমিশনের বিজ্ঞপ্তিই বহাল রাখা হল। মনোনয়নের দিন বা সময়সীমা বাড়ানো হবে কি না, সেটাও কমিশনের ওপরেই ছেড়ে দিল আদালত। অন্যদিকে, স্পর্শকাতর হিসেবে যে জেলাগুলিকে ইতিমধ্যেই চিহ্নিত করেছে কমিশন, সেখানে অবিলম্বে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করার নির্দেশ দেওয়া হয়। এরই পাশাপাশি কলকাতা হাইকোর্টের তরফ থেকে অনলাইনে মনোনয়ন পেশের আবেদনও খারিজ করে আদালত।
এদিকে পঞ্চায়েত নির্বাচনে মনোনয়নের জন্য কম সময়সীমা এবং কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা সহ একাধিক দাবি নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এবং প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীররঞ্জন চৌধুরী। এই সেই জোড়া মামলারই এ দিন রায় দান করে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ৷ আদতে এদিনের রায়ে বিরোধীদের আর্জি খারিজ করে দিয়ে পঞ্চায়েতের মনোনয়নের সময়সীমা বৃদ্ধি নিয়ে কমিশনের সিদ্ধান্ত-ই শেষ এমনটাই জানায় প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। এদিকে বিরোধীদের পক্ষে অবসরপ্রাপ্ত প্রাক্তন বিচারপতিকে পঞ্চায়েত নির্বাচনে পর্যবেক্ষক হিসেবে নিয়োগের আর্জিও জানানো হয়েছিল। এদিন সেই নির্দেশও খারিজ করে দেয় আদালত।
নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আগামী ১৫ জুন পর্যন্ত মনোনয়ন জমা দেওয়া যাবে। হাইকোর্টে শুনানি চলাকালীন অবশ্য কমিশন জানিয়েছিল, হাইকোর্ট চাইলে একদিন মনোনয়ন জমার সময়সীমা বাড়ানো যেতে পারে। তবে হাইকোর্ট এদিন তাদের উপরেই আস্থা রাখার পর কমিশন কী সিদ্ধান্ত নেয়, সেটাই এখন দেখার।
তবে মনোনয়নের সময়সীমা না বাড়ালেও পঞ্চায়েত নির্বাচনে স্পর্শকাতর সব জেলা এবং বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। এর জন্য যত দ্রুত সম্ভব কমিশনের পক্ষ থেকে কেন্দ্রীয় বাহিনী চেয়ে রাজ্য সরকারের কাছে সুপারিশ করার নির্দেশও দেয় আদালত৷ যে সমস্ত এলাকায় রাজ্য পুলিশ পর্যাপ্ত সংখ্যায় পাওয়া যাবে না, সেখানেও কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের নির্দেশ দেয় আদালত। আদালতের তরফ থেকে বিশেষ করে সাতটি জেলার কথা এই প্রসঙ্গে বলা হয়, যেখানে কেন্দ্রীয় বাহিনীর তত্ত্বাবধানে পঞ্চায়েত নির্বাচন করতে বলা হয়েছে। এই তালিকায় রয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনা, উত্তর ২৪ পরগনা, বীরভূম, মুর্শিদাবাদ, পূর্ব মেদিনীপুর, হুগলি এবং জলপাইগুড়ি। পাশাপাশি, নির্বাচনে সিভিক ভলেন্টিয়ারদের ডিউটি দেওয়া যাবে না বলেও নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ।
পাশাপাশি নির্দেশ, সব পোলিং স্টেশনে সিসিটিভি ক্যামেরা লাগাতে হবে। যেখানে সম্ভব সেখানে হবে না সেখানে ভিডিয়োগ্রাফি বা লাইভ স্ট্রিমিং করতে হবে। একইসঙ্গে ভোট শান্তিপূর্ণ করাতে রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে সবরকম ব্যবস্থা নিতে নির্দেশও দেয় কলকাতা হাইকোর্ট।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

twenty − eighteen =