একদিকে যেখনে কলকাতা পুরসভার তরফে পার্কিং ফি বাড়ানো হবে কি না তা নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে ঠিক এমনই এক প্রেক্ষাপটে ‘নিউ টাউন-কলকাতা ডেভেলপমেন্ট অথরিটি’ অর্থাৎ এনকেডিএ-এর বড় ঘোষণা, নিউটাউনের যে কোনও পার্কিং জোনে ৩০ মিনিটের জন্যে বিনামূল্যে রাখা যাবে গাড়ি বা বাইক। অর্থাৎ প্রথম আধঘণ্টার জন্য লাগবে না কোনও চার্জ। আধঘণ্টা শেষের পর থেকে নির্ধারিত হারে চার্জ দিতে হবে গাড়ি ও বাইক মালিককে। এখানে বলে রাখা শ্রেয়, বর্তমানে নিউটাউন এলাকার যে কোনও পার্কিং জোনে গাড়ি রাখার ক্ষেত্রে ঘণ্টাপিছু ২০ টাকা এবং বাইকের জন্য প্রতি ঘণ্টা হিসেবে দিতে হয় ১০ টাকা।
নিউটাউন এলাকায় যত্রতত্র গাড়ি রাখা একটা সময় নিত্য নৈমিত্তিক ঘটনা হয়ে দাঁঢ়িয়েছিল। এই সংস্কৃতি বন্ধ করতেই সল্টলেকের ধাঁচে শুরু হয় পেইড পার্কিং জোন। বাজার এলাকা থেকে শপিং মল, পার্ক যেখানেই যান না কেন, বর্তমানে নিউটাউনবাসীদের গাড়ি বা বাইক রাখতে দিতে হয় পার্কিং-ফি। অনেক বাসিন্দাদের অভিযোগ, বাজার করতে গেলে বা কোনও দোকানে জিনিস কিনতে পাঁচ মিনিটের জন্য গাড়ি রাখলেও ঘণ্টার হারে পার্কিং চার্জ দিতে হয়। এমন অনেকেই আছেন যারা দিনে একাধিকবার চার চাকা বা দু চাকা নিয়ে বাড়ির বাইরে কাজে বা জিনিস কিনতে বার হন। সেক্ষেত্রে প্রতিবার এভাবে ঘণ্টার হিসেবে পার্কিং চার্জ দেওয়াটা বিরক্তিজনক ও ব্যয়বহুল। নিউটাউন বাসিন্দাদের পার্কিং ফি নিয়ে এরকমই একাধিক অভিযোগ বিবেচনার পরই এমনই ছাড়ের ঘোষণা করা হয় এনকেডিএ-এর তরফ থেকে।তবে স্থানীয় বাসিন্দারা আর্জি জানিয়েছিলেন, পার্কিং ফি-এর অঙ্ক কমানোর। কিন্তু, সেই আর্জি না মানলেও বাসিন্দাদের সুবিধার কথা ভেবে পার্কিং-এর প্রথম আধঘণ্টা ছাড়ের সিদ্ধান্ত ‘নিউ টাউন-কলকাতা ডেভেলপমেন্ট অথরিটি’-এর।
এখানে আরও একটা কথা না বললেই নয়, সম্প্রতি পার্কিং, নো পার্কিং জোন নিয়ে নিউটাউনের বাসিন্দাদের সঙ্গে প্রায়ই পুলিশের সঙ্গে তরজাও বাধে। নো পার্কিং জোনে গাড়ি রাখা নিয়ে বেশ কিছু বিতর্কও সামনে এসেছে। সম্প্রতি নিউটাউনের সিই ব্লকের এক বাসিন্দা জানান, গ্যারাজের সমস্যা থাকায় তিনি নিজের বাড়ির সামনে গাড়ি রাখছিলেন। রাস্তাটি ডেড-লেন হওয়ায় তাঁর গাড়ির কারণে কারও কোনও অসুবিধা হচ্ছিল না। এমনকী তাঁর গাড়িটি কোনও রাস্তা আটকেও রাখা হয়নি। তা সত্ত্বেও চলতি সপ্তাহেই নো পার্কিং জোনে গাড়ি রাখার জন্য চালান পাঠিয়ে তাঁকে জরিমানা করা হয় বলে অভিযোগ করেন ওই গাড়ির মালকিন। সঙ্গে এও জানান, অ্যাকশন এরিয়া ১-এর স্ট্রিট নম্বর ২২০-তে গত ৬ বছর ধরে এভাবেই গাড়ি রাখছিলেন তিনি। কিন্তু, কোনওদিন এভাবে তাঁকে জরিমানার মুখে পড়তে হয়নি। এদিকে ওই রাস্তায় এনকেডিএ-এর তরফে কোনও নো-পার্কিং সাইন লাগানো হয়নি। তাতেও এভাবে জরিমানার মুখে পড়তে হয় তাঁকে। তবে এই প্রসঙ্গে এনকেডিএ-এর বক্তব্য, নিউটাউনে কোনও স্ট্রিটকেই আলাদা করে নো-পার্কিং জোন বলে দাগিয়ে দেওয়া হয়নি। শুধুমাত্র হাসপাতাল ও বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ জায়গার আশপাশের রাস্তায় নো-পার্কিং সাইন লাগানো আছে। পার্কিংয়ের জন্য নির্দিষ্ট জায়গা ছাড়া গাড়ি রাখলে যদি পুলিশ জরিমানা করে তাহলে সেটা তারা নিজেরাই করছেন বলে জানানো হয় এনকেডিএ-এর তরফ থেকে।