দীর্ঘ ১২ ঘণ্টার জিজ্ঞাসাবাদের পর মঙ্গলবার রাতে ইডির হাতে গ্রেপ্তার ‘কালীঘাটের কাকু’ নামে বিশেষ ভাবে পরিচিত সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র। এই প্রসঙ্গে রাজ্যের বিরোধী দল নেতা শুভেন্দু অধিকারী দাবি করেন, ‘এবার তদন্তকারী সংস্থা হৃদয় অবধি পৌঁছে গিয়েছে, বাকি শুধু মাথা।’ পাশাপাশি শুভেন্দু টুইটে এও লেখেন, ‘অবশেষে আইনের লম্বা হাত মাস্টার মাইন্ড ও দুর্নীতির সবথেকে বড় সুবিধাভোগীদের কাছাকাছি পৌঁছে গেল। কেউ ছাড় পাবে না। মূল মাথা অবশ্যই জেলে যাবে। এখন তো শুধু সময়ের অপেক্ষা।’ এখানেই শেষ নয়, সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র অর্থাৎ কালীঘাটের কাকু-এর সঙ্গে একাধিক কোম্পানির যোগ সূত্র সামনে এসেছে। তার মধ্যে তিনি যে কোম্পানির হয়ে কাজ করতেন সেই লিপস অ্যান্ড বাউন্স প্রাইভেট লিমিটেড-এর ডিরেক্টরস বোর্ডের একটি তালিকা টুইট করে বিস্ফোরক দাবিও করেন বিরোধী দল নেতা শুভেন্দু অধিকারী। এদিকে ইডি সূত্রে খবর, সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র একাধিক কোম্পানির সঙ্গে যুক্ত। তার মধ্যেই একটি হচ্ছে লিপস অ্যান্ড বাউন্স প্রাইভেট লিমিটেড। ইডির অনুমান, সুজয়কৃষ্ণ বেআইনি পথে একাধিক কোম্পানির মাধ্যমে কালো টাকা সাদা করেছেন।উল্লেখ্য, লিপস অ্যান্ড বাউন্স প্রাইভেট লিমিটেড-এর একসময়ে এমডি পোস্টে ছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সূত্রেই সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রকে বিভিন্ন সময়ে তাঁকে সাহেব বলে উল্লেখ করতেও দেখা যায়।তবে লোকসভা ভোটে প্রার্থী হওয়ার আগে এই কোম্পানির পদ থেকে ইস্তফা দেন তিনি। এদিকে আবার এদিকে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রের নাম নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় উঠে আসার পর পরই তাঁর বিষয়ে খোঁজ খবর শুরু করে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। গত ২০ মে কালীঘাটের কাকুর বেহালার ফকিরপাড়া রোডের ফ্ল্যাট, বাড়ি, অফিস-সহ বহু জায়গায় তল্লাশি চালায় ইডি। ইতিমধ্যেই নিয়োগ মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া বলাগড়ের বহিষ্কৃত যুব তৃণমূল নেতা শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গেও তাঁর যোগ মিলেছে।
শুভেন্দু অধিকারী তাঁর টুইটে এও জানান, লিপস অ্যান্ড বাউন্স প্রাইভেট লিমিটেড-এর ডিরেক্টরদের মধ্যে সুজয় কৃষ্ণ ভদ্র ছাড়াও নাম রয়েছে বিশ্বনাথ ভট্টাচার্য, রুজিরা বন্দ্যোপাধ্যায়, অমিত বন্দ্যোপাধ্যায়, লতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম। এই কোম্পানির ডিরেক্টরদের মধ্যে তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্ত্রী ও বাবা-মায়ের নাম রয়েছে বলে টুইটে দাবি করেন শুভেন্দু অধিকারী।এরই পাশাপাশি বিরোধী দলনেতা ইডি-এর হাতে ধৃত এই সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রের সঙ্গে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরিবারের যোগ সামনে এনে একাধিক বিস্ফোরক দাবি এর আগেও করেছিলেন। তিনি টুইটে লেখেন, ‘কালীঘাটের কাকু, পিসি, ভাইপো, কাকিমা, বউমা, শ্যালিকা- সবই একই ধাঁধার অংশ। পৃথকভাবে কেউ দোষী নন, অথচ সবাই একসূত্রে গাঁথা।’ সব মিলিয়ে কালীঘাটের কাকু বলে খ্যাত সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রের গ্রেপ্তারির পর থেকে শোরগোল রাজ্য রাজনীতিতে।