ফের মুখ খুললেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তবে এবার বায়রন বিশ্বাসের দলবদলের ইস্যুতে। মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ আলিপুর আদালতে ঢোকার সময়, ‘সাগরদিঘির বিধায়ক বায়রন বিশ্বাস তৃণমূলে যোগ দেওয়ার ঘটনায় প্রত্যয়ের সুরে পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানান, ‘সবাই তৃণমূলে চলে আসবে।’ সোমবার যে বিস্ফোরক দাবি আদালতে করেছেন অর্পিতা মঙ্গলবার আলিপুরে সিবিআই বিশেষ আদালতে প্রবেশের সময় তা নিয়ে কার্যত মুখে কুলুপ আঁটতেই দেখা যায় পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে। এই প্রসঙ্গে পার্থকে প্রশ্ন করা হলেও সব শুনেও যেন কিছুই শুনলেন না তিনি। কার্যত সব প্রশ্নকে পিছনে ফেলে পুলিশের সঙ্গে সঙ্গে এগিয়ে যেতে থাকেন আদালতের ভিতরের দিকে। প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার নিয়োগ দুর্নীতিতে ধৃত প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়-সহ ৭ জনকে আলিপুরের সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতে তোলা হয়।
প্রসঙ্গত, কংগ্রেসের প্রার্থী হয়ে সাগরদিঘি জয়ের ৩ মাসের মধ্যে দল বদলে তৃণমূলে যোগ দিলেন বায়রন বিশ্বাস। মাত্র তিন মাস আগেই প্রসঙ্গত, মুর্শিদাবাদের সাগরদিঘির উপনির্বাচনে কংগ্রেসের টিকিটে জিতেছিলেন বায়রন বিশ্বাস। কিন্তু শেষমেশ অভিষেকের হাত ধরে তৃণমূলের পতাকা হাতে তুলে নেন বায়রন। তারই পরিপ্রেক্ষিতে ফের এর আগেও একাধিকবার দলের হয়ে মুখ খুলতে দেখা যায় এই বহিষ্কৃত নেতা তথা প্রাক্তন হেভিওয়েট মন্ত্রীকে।
এরপর আদালত কক্ষে তিনি তাঁর শারীরির অবস্থা নিয়ে সরব হন পার্থ। জানান, পায়ের অবস্থা ভাল নেই। বেশ ফুলেছে। পায়ের পাতা ফুলে ঢোল জেলবন্দি থাকাকালীন ঠিকঠাক চিকিৎসা পরিষেবা যাতে পান, সেই বিষয়ে বিচারকের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি। আর এবার আদালত থেকে বেরিয়ে, নিজেই পা এগিয়ে দিয়ে দেখালেন, কী অবস্থা হয়ে রয়েছে। যদিও পার্থবাবুর ব্যাখ্যা, তিনি একবারও বলেননি জেলের চিকিৎসা পরিষেবা ভাল নয়। তাঁর বক্তব্য, পরিষেবা অপর্যাপ্ত। এরপরই পুলিশের গাড়ি থেকে নামতে নামতে নিজের পা এগিয়ে দিয়ে দেখিয়ে বলেন, ‘আমার নিজের পায়ের অবস্থাটা দেখুন, তাহলে বুঝতে পারবেন কী অবস্থা।’ পাশাপাশি অবশ্য পার্থ চট্টোপাধ্যায় এটাও বুঝিয়ে দেন, জেলে চিকিৎসা পরিষেবা নিয়ে তাঁর অভিযোগ থাকলেও, সরকারের উপর তাঁর এখনও আস্থা রয়েছে। যে সরকারকে এতদিন ধরে‘ট্রিটমেন্ট’ দিলেন পার্থ, এত দায়িত্ব পালন করলেন এখন সেই পার্থ চট্টোপাধ্যায়ই ‘ট্রিটমেন্ট’ পাচ্ছেন না এই প্রসঙ্গে পার্থর স্পষ্ট জবাব, ‘সেটাই দুর্ভাগ্যের, প্রদীপের নীচেই অন্ধকার।’ যদিও এরপরই তিনি আবার বলেন, ‘সরকারের উপর আস্থা রাখতে হবে।’
এদিকে তিনি কখনও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নবজোয়ার কর্মসূচির প্রশংসা করেছেন, কখনও দলকে ভোটে জেতার শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। এদিনও যেমন তৃণমূলের প্রতি আস্থা প্রকাশ করলেন তিনি।নিয়োগ দুর্নীতিতে গ্রেপ্তারির পর তৃণমূলের তৎকালীন মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে দূরত্ব বাড়িয়েছে দল। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে কেড়ে নেওয়া হয়েছে মন্ত্রিত্ব। এমনকী দল থেকেও বহিষ্কৃত হয়েছেন। তারপরেই দলের প্রতি নিজের বিশ্বস্ততা দেখাতে কোনও কসুর রাখছেন না পার্থ চট্টোপাধ্যায়।