রাজ্যে শিক্ষায় নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে ইডি মঙ্গলবার সকালে তলব করা হয় সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র ওরফে কালীঘাটের কাকুকে। এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের ডাকে সাড়া দিয়ে মঙ্গলবার সকাল ১১টায় সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্সে পৌঁছান সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র। এই প্রথম বার ইডি দপ্তরে হাজির হন ‘কালীঘাটের কাকু’। ইডির দপ্তরে ঢোকার সময় সংবাদিকরা তাঁকে প্রশ্ন করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য কি ভয় পাচ্ছেন? উত্তরে সুজয়কৃষ্ণ জানান, আত্মবিশ্বাসী কি না বেরোনোর সময় দেখবেন।
ইডি সূত্রের খবর, মঙ্গলবার অর্থাৎ ৩০ মে সিজিও কমপ্লেক্সের ইডি দপ্তরে ডেকে পাঠানোর পাশাপাশিএই একই মামলায় জ্ঞানানন্দ সামন্ত ও সিভিক ভলেন্টিয়ার রাহুল বেরাকেও তলব করা হয় ইডি-র তরফ থেকে। সম্পত্তি তৃণমূলের দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা পরিষদের সদস্য জ্ঞানানন্দ সামন্তের বিবিরবহাটের বাড়িতেও তল্লাশি চালিয়েছিল ইডি।
প্রসঙ্গত, গত ২১ মে সুজয়কৃষ্ণের বাড়ি-অফিসে ম্যারাথন তল্লাশি অভিযান চালায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। তাল্লাশিতে উদ্ধার হয়েছে ১১টি মোবাইল ফোন, একাধিক পেন ড্রাইভ সহ বেশ কয়েকটি হার্ডডিস্ক। প্রায় ১৫ ঘণ্টা তল্লাশি চালিয়ে অবশেষে ইডি কিছু নথি বাজেয়াপ্ত করে সুজয় ভদ্রের বাড়ির থেকে বেরিয়ে যায়। এদিকে সূত্রের খবর, তল্লাশিতে তিনটি সংস্থার হদিশ মিলেছে। ‘কালীঘাটের কাকু’ অর্থাৎ সুজ কৃষ্ণ জড়িত রয়েছেন এই সংস্থা গুলির সঙ্গে। তদন্তকারী সংস্থার ধারনা ওই সংস্থার মাধ্যমে রোটি কোটি টাকার নেলদেন করা হত। আর এই লেনদেনে কালো টাকা সাদা করার প্রক্রিয়া চলত কিনা সেই প্রশ্নও উঠেছে। তল্লাশিতে অন্তত ২০ জায়গায় সম্পত্তির হদিশ মিলেছে বলে খবর। তা ছাড়া ১৬ জায়গায় তল্লাশি চালিয়ে দেড় হাজার পাতার নথিও উদ্ধার হয়েছে।ওই তল্লাশিতে মিলেছে কোটি কোটি টাকার সম্পত্তির হদিশ। সূত্রের খবর, এই সমস্ত সম্পত্তি কার টাকায় কেনা হয়েছিল এবং টাকার উৎস সম্পর্কে এদিন সুজয়কৃষ্ণের কাছে জানতে ইডি দপ্তরে তলব করা হয় তাঁকে।
এখানে বলে রাখা শ্রেয়, রাজ্যে শিক্ষায় নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে সিবিআই গ্রেপ্তার করে তাপস মণ্ডলকে। তাপসের মুখেই প্রথম ‘কালীঘাটের কাকু’র কথা শোনা যায়। নিয়োগে দুর্নীতি সংক্রান্ত তদন্তে নাম এসেছে গোপাল দলপতির। তাঁর মুখেও ‘কাকু’র নাম শোনা গিয়েছিল। ইডি সূত্রে খবর, পরে গোপাল আর তাপসকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা যায়, কুন্তলের ওই ‘কালীঘাটের কাকু’ রাজ্যের এক প্রভাবশালী শীর্ষ নেতার সংস্থার চিফ এগ্জ়িকিউটিভ অফিসার। এর পরেই ইডির ব়্যাডারে চলে আসে কালীঘাটের কাকু। সিবিআই সুজয়কে দু’বার তলব করে। প্রথমবার সিবিআই দপ্তরে গিয়ে হাজিরা দেন তিনি। কিন্তু পরের বার নিজের আইনজীবীকে দিয়ে নথিপত্র পাঠান।