কিডনির জটিল রোগের ওষুধের ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে সাফল্য! আশার আলো দেখাচ্ছে এনআরএস

কলকাতা: কিডনির অসুখ। বিশ্বের বহু মানুষই ভোগেন কিডনির নানাবিধ রোগে। কিডনি কাজ করা বন্ধ করলে ট্রান্সপ্লান্ট ছাড়া গতি নেই। সেও সহজ নয়। ডোনার পাওয়া, অপারেশনরে ঝুঁকি ও বিশাল খরচ।
কিডনির সমস্যা বেশি হলে দিনের পর দিন ডায়ালিসিসের মধ্যে দিয়ে যেতে হয় রোগীকে। পুরোপুরি সারার সম্ভাবনা নেই। ডায়ালিসিসের মাধ্যমে জীবনের মেয়াদ আরও একটু বাড়ানো শুধু। তবে এরই মধ্যে সুখবর।
এনআরএস হাসপাতালে কিডনির ওষুধের ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে সাফল্য মিলেছে বলেই জানা যাচ্ছে। আইজিএ নেফ্রোপ্যাথির মতো অসুখের চিকিৎসা খুবই জটিল। একবার এই অসুখ ধরলে ডায়ালিসিস ছাড়া গতি থাকে না। আর ডায়ালিসিসে এই রোগ নির্মূল হয় না। কিডনির এই বিরল ও জটিল রোগের ওষুধপত্র নিয়ে গবেষণামূলক কাজ চলছিলই দীর্ঘদিন ধরেই। দেশের নানা জায়গায় এই নিয়ে কাজ চলছে। কলকাতার ডাক্তারদের দাবি, এনআরএস হাসপাতালে যে ওষুধটি নিয়ে ক্লিনিকাল ট্রায়াল চলছিল সেটি সফল হয়েছে। তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়ালে ভাল ফল পাওয়া গেছে বলে দাবি চিকিৎসক ও গবেষকদের।
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, আইজিএ নেফ্রোপ্যাথি অটোইমিউন রোগ। শরীরে ‘এ ‘ অ্যান্টিবডিই শরীরের বিরুদ্ধে কাজ করতে শুরু করে। ফলে প্রস্রাবে প্রোটিনের পরিমাণ বেড়ে যায়। ইউরিনে ব্লাড চলে আসে। প্রস্রাবের সঙ্গে রক্ত বের হতে থাকে। প্রস্রাবের সঙ্গে রক্ত বের হলে একেবারেই দেরি করা উচিত নয়। শরীরে ক্রিয়েটিনিনের মাত্রা বেড়ে গেলেও এমন রক্তপাত হয়। মূত্রথলি বড় হয়ে গেলে, কিডনিতে সংক্রমণ হলে বা পাথর জমলে কিংবা ক্যানসার হলেও প্রস্রাবের সঙ্গে রক্ত বেরোতে পারে। সেক্ষেত্রে কিডনি প্রতিস্থাপন ও ডায়ালিসিস ছাড়া গতি থাকে না।
চিকিৎসকরা বলছেন, ওষুধ দিয়ে আইজিএ নেফ্রোপ্যাথির মতো রোগ সারানোর কোনও উপায় এতদিন ছিল না। এই ওষুধের ট্রায়াল সফল হওয়ার পরে আশা এ ব্যাপারেও ধীরে ধীরে সাফল্য আসবে।
এনআরএসের নেফ্রোলজির প্রধান ডা. পিনাকী মুখোপাধ্যয় বলেছেন, কিডনির এই বিরল রোগ হলে শরীরের দ্রুত অবনতি হয়। প্রস্রাব দিয়ে রক্ত বের হতে থাকে। ডাক্তারবাবুর কথায়, এই ওষুধ যদি ভালভাবে কাজ করে তাহলে বহু মানুষ কিডনির এই জটিল রোগ থেকে বেঁচে যাবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

8 − six =