হাওড়ায় পরিকল্পনা ব্যর্থ হওয়ার পরেই ব্যারাকপুরে সোনার দোকানে ডাকাতি!

রাজীব মুখোপাধ্যায়

হাওড়া: ব্যারাকপুরে সোনার দোকানে ডাকাতির ঘটনার তদন্তে চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এল তদন্তকারীদের হাতে। তদন্তে উঠে আসা তথ্য দেখে রীতিমতো চোখ কপালে উঠেছে তদন্তকারী অধিকারিকদের। তদন্তে জানা যাচ্ছে ব্যারাকপুরে নয়, সোনার দোকানে ডাকাতির ঘটনার সঙ্গে যুক্ত ডাকাতদের প্রথম লক্ষ্য ছিল হাওড়া কদমতলা এক সোনার দোকান। এই তথ্য পুলিশ মারফৎ জানার পর থেকেই আতঙ্কে রয়েছেন হাওড়ার ওই দোকানের যীশুকৃষ্ণ আড়ি।
শুক্রবার সকালে তাঁর দোকানে সন্দেহভাজন দুষ্কৃতীদের নিয়ে উপস্থিত হন হাওড়া সিটি পুলিশ ও ব্যারাকপুর কমিশনারেটের বিশাল বাহিনী সহ উচ্চপদস্থ আধিকারীরা। তাঁদের কাছ থেকেই তিনি জানতে পারেন ডাকাতদের প্রথম লক্ষ্য ছিল তাঁর দোকান। তদন্তে আধিকারিকরা জানতে পারেন গত ১৮ই মে ওই দুষ্কৃতীরাই হাওড়ার স্বর্ণ ব্যবসায়ীর দোকানে একটি রুপোর চেন কিনতে আসে। তাঁরা চেন কেনার নামে দোকানের নিরাপত্তার খুঁটিনাটি সব দেখে যায়। এরপরে দোকান থেকে বেরিয়ে ফের ২৩ তারিখ ওই দুষ্কৃতীরা গোটা এলাকার সমস্ত রাস্তাঘাট ঘুরে ডাকাতির নীল নকশা তৈরি করে ও গোটা এলাকার রেইকি করে তারা। দুষ্কৃতীদের পরিকল্পনা অনুযায়ী ২৪শে মে অর্থাৎ গত বুধবার এই দোকান লুঠ করার পরিকল্পনা করে তারা । সেইমতো সকাল বেলাতেই দোকানের বাইরে একটি নির্দিষ্ট স্থানে উপস্থিত হয়েছিলো।যদিও ওই দিন দোকান খোলার সঙ্গে সঙ্গে বেশ কিছু খদ্দের দোকানে চলে আসায় তাঁদের সেই পরিকল্পনা সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়।
হাওড়াতে ব্যর্থ হয়ে দুষ্কৃতীদের ওই দলটি পরবর্তীকালে ব্যারাকপুরে অন্য একটি সোনার দোকানে তাঁদের পরিকল্পনা মাফিক ডাকাতি করে। যদিও তাঁদের দোকানে আসার সব মুহুর্ত হাওড়ার সোনার দোকানের সিসিটিভি ক্যামেরায় ধরা পড়ে যায়। ওই ডাকাতির ঘটনার তদন্তের স্বার্থে এদিন সকালে ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটের আধিকারীরা সেই সিসিটিভি সিজ করে নিয়ে যান। তাঁরা ওই ব্যবসায়ীকে জানান যে নামে রুপোর চেনের বিল তৈরি হয়েছিল তাতে দেওয়া নাম ও ঠিকানার সঙ্গে ব্যারাকপুর কাণ্ডে জড়িতদের নাম ও ঠিকানা একই। হাওড়ার ওই দোকানে ডাকাতির পরিকল্পনা ভেস্তে যাওয়ার পরেই ওই দুষ্কৃতীরা ব্যারাকপুরে ডাকাতি করে বলেও জেরাতে স্বীকার করেছে বলেই জানান হয় ওই ব্যবসায়ীকে। পুলিশের থেকে গোটা ঘটনা জানার পর থেকেই যথেষ্ট আতঙ্কিত হয়ে পড়েন ওই স্বর্ণ ব্যবসায়ী। একই সঙ্গে গোটা বিষয়টি নিয়ে স্বভাবতই নিরাপত্তা হীনতাও ভুগছেন তিনি । তিনি চান গোটা এলাকায় যেন পুলিশি নজরদারি আরও বাড়ানো হয়। পাশাপাশি এই ঘটনা নিয়ে হাওড়া স্বর্ণ ব্যবসায়ী অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে হাওড়া পুলিশ কমিশনারেটের কাছে একটি আবেদনও করা হয়। হাওড়া শহরে রাস্তার মোড়ে আরও বেশি সংখ্যায় সিসিটিভি ক্যামেরা বসানোর আবেদন করেন স্বর্ণ ব্যবসায়ী যীশুকৃষ্ণ আড়ি। যদিও এই বিষয়ে মন্তব্য করেননি হাওড়া ও ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটের আধিকারিকরা।
প্রসঙ্গত এর আগেও হাওড়ার এই সোনার দোকানে দোকানে ডাকাতি হয়েছিল। সেই একই ঘটনার পূর্ব স্মৃতি এখনও তাড়া করে বেড়াচ্ছে ওই স্বর্ণ ব্যবসায়ীকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

five × two =