সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র যিনি ‘কালীঘাটের কাকু’ বলেই এই মুহূর্তে সবার কাছে পরিচিত তাঁকে এবার তলব করল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। ইডি সূত্রে যে খবর মিলছে তাতে আগামী সপ্তাহে ৩০ মে মঙ্গলবার সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রকে সিজিও কম্পলেক্সে তলব করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত সপ্তাহে শনিবার সারা রাজ্য জুড়ে যে অভিযান চলে ইডি-র সেই তালিকায় নাম ছিল এই সুজয়তৃষ্ণ ভদ্রের বাড়িরও। তাঁর বেহালার বাড়িতে তল্লাশি চালায় ইডি। তাঁকে কয়েক দফা জিজ্ঞাসাবাদও করা হয়। শুধু বেহালাই নয় সুজয়ের একাধিক ঠিকানায় তল্লাশি চালান তদন্তকারীরা। তল্লাশি চালিয়ে বেশ কিছু নথি পাওয়া গিয়েছে বলে জানিয়েছেন ইডি-র তদন্তকারী আধিকারিকেরা। শুধু তাই নয়, সুজয়কৃষ্ণ নিজেও জানিয়েছেন, তাঁর মোবাইল বাজেয়াপ্ত করেছেন ইডি-র আধিকারিকেরা। এরপরই ইডি সূত্রে খবর, এই সব নথির সূত্রেই সুজয়কৃষ্ণ সিজিও কম্পলেক্সে তলব করা হয়েছে মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১১টা নাগাদ। পাশাপাশি ইডি সূত্রে এও জানানো হয়েছে, এইই মোবাইলেও বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গিয়েছে।
সুজয়কৃষ্ণর পাশাপাশি দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা পরিষেদর সদস্য জ্ঞানানন্দ সামন্ত ও রাহুল বেরা নামের এক সিভিক ভলান্টিয়ারকেও সিজিও কম্পলেক্সে তলব করা হয়েছে বলে ইডি সূত্রে খবর।
এদিকে নিয়োগ দুর্নীতির তদন্ত শুরু হওয়ার পর থেকে ইডি-সিবিআইয়ের মতো কেন্দ্রীয় সংস্থার গুলির স্ক্যানারে রয়েছে সুজয়কৃষ্ণ। নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে সদ্য বহিষ্কৃত হুগলির যুব তৃণমূল নেতা কুন্তল ঘোষের গ্রেপ্তারির পরই প্রথম সংবাদে শিরোনামে আসেন এই সুজয়কৃষ্ণ ওরফে ‘কালীঘাটের কাকু’। গোপাল দলপতির মুখেও এই নাম শোনা যায়। সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে গোপাল জানান, ‘কালীঘাটের কাকু’-কে টাকা দিতে হবে বলে তাঁকে একাধিকবার জানান কুন্তল। নিয়োগ দুর্নীতিতে ধৃত তাপস মণ্ডলও ‘কালীঘাটের কাকু’ হিসেবে সুজয় কৃষ্ণের নাম বলেন। এরপরই তাঁকে একাধিকবার তলব করে সিবিআই। কেন্দ্রীয় সংস্থার তলবের মুখে নিজাম প্যালেসে হাজিরাও দিতে দেখা যায় সুজয়কৃষ্ণকে। যদিও প্রথম থেকে নিয়োগ দুর্নীতিতে জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেছেন সুজয়কৃষ্ণ। তাঁর দাবি, নিয়োগ দুর্নীতিতে যুক্ত থাকলে তিনি নিজের দাদার মেয়ের চাকরির বন্দোবস্ত করে দিতেন। শাসকদলের এক শীর্ষনেতাকে হেনস্থা করার জন্য তাঁকে এই সবের মধ্যে জড়ানো হচ্ছে বলেও দাবি করেন সুজয়কৃষ্ণ।
এদিকে আবার কুন্তল জানাচ্ছেন, ‘কালীঘাটের কাকু’ সুজয়কৃষ্ণ নন। ‘কালীঘাটের কাকু’ বলে কাউকে তিনি চেনেন না বলেও দাবি করেন নিয়োগ দুর্নীতিতে ধৃত বহিষ্কৃত এই তৃণমূল নেতা। ফলে সব মিলিয়ে তৈরি হয়েছে এক ধোঁয়াশা।