লালবাজারের তৈরি করা হল ‘ইনভেস্টিগেশন ফান্ড’। ফলে এবার আর ভিন রাজ্যে পাড়ি দিতে হলে ভাবতে হবে না কলকাতা পুলিশের তদন্তকারী আধিকারিকদের। তদন্তের প্রয়োজনে ব্যবহারের জন্য ফান্ড বাবদ পর্যাপ্ত পরিমাণ টাকা আগেই পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে প্রত্যেক ডেপুটি-কমিশনার অফ পুলিশ পদমর্যাদার আধিকারিকদের কাছে। ফান্ড শেষ হলে লালবাজারের থেকে পুনরায় ফান্ড দেওয়া হবে বলে লালবাজার সূত্রে খবর।
কারণ, চুরি ডাকাতি খুন বা প্রতারণার ঘটনায় তদন্তের স্বার্থে ভিন রাজ্যে পাড়ি দিতে হয় কলকাতা পুলিশকে। একাধিক মামলায় অপরাধীর ডেরার সন্ধান পেতে ভিন রাজ্যে গিয়ে তল্লাশি ও চালাতে হয় কলকাতা পুলিশের বিভিন্ন থানার তদন্তকারী দলদের। খুনের ঘটনা হোক কিংবা কোনও প্রতারণার চক্রের হদিশ পেতে প্রায়ই ভিন রাজ্যে পাড়ি দিতে হয়েছে কলকাতা পুলিশের থানার আধিকারিকদের। কিন্তু ভিন রাজ্যে পাড়ি দেওয়ার জন্য অথবা সেখানে গিয়ে তল্লাশি বা তদন্ত করার জন্যে কলকাতা পুলিশের বিভিন্ন থানার আধিকারিকদের খরচের জন্য একটি মোটা টাকার প্রয়োজন হয়। আর তাতে টান পড়ায় ভিন রাজ্যে পাড়ি দেওয়ার ক্ষেত্রে একাধিক সমস্যাতেও পড়তে হয় পুলিশ আধিকারিকদের। এদিকে লালবাজার সূত্রে খবর, কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা দপ্তরে আধিকারিকদের জন্য ভিন্ন রাজ্যে যাওয়ার ফান্ড বরাদ্দ থাকলেও থানার তদন্তকারী দলের ভিন্ন রাজ্যে যাওয়ার জন্য কোনও ফান্ড বরাদ্দ থাকত না। থানার আধিকারিকরা বাইরে গেলে খরচ বাবদ যে সামান্য টাকা বরাদ্দ অনুযায়ী পাওয়ার কথা, ফিরে এসে তা হাতে পেতেও বিস্তর কাঠ-খড় পোড়াতে হতো। ফলে যে কোনও অভিযানে ভিন রাজ্যে যাওয়ার প্রয়োজন হলেই দুশ্চিন্তায় পড়তেন রাজ্য পুলিশের মতই কলকতার পুলিশের আধিকারিকেরাও। থাকা-খাওয়া, এমনকি ভিন রাজ্যে পৌঁছে এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় যাওয়ার খরচ কোথা থেকে আসবে, কী ভাবে আসবে, এ সব নিয়ে বেশ ভাবনা চিন্তা করতে হত। কলকাতায় ফিরে এসে বিল জমা করলে কত দিনে খরচের টাকা পকেটে ফিরবে, কতটা ফিরবে, পুলিশ অফিসারদের তা নিয়েও ছিল দুঃচিন্তা। হাই প্রোফাইল কেস হলে, এত ভাবারও অবকাশ থাকত না। গাঁটের কড়ি খরচ করেই ভিন রাজ্যে যেতে হতো আধিকারিকদের।
শুধু তাই নয়, অনেক ক্ষেত্রে তদন্তকারী দলের মধ্যে থাকা পুলিশ কর্মীদের পদমর্যাদা অনুযায়ী বৈষম্য থাকার কারণেও সমস্যা দেখা দিত। এর পাশাপাশি ছিল আরও নানা ধরনের সমস্যা। এ সব ঝক্কি এড়াতে অনেক সময় সহজ উপায় হিসাবে অভিযোগকারীদের কাছেই অর্থের যোগান দেওয়ার জন্য সাহায্য চাওয়া হয়, এমন অভিযোগও বিভিন্ন সময়ে সামনে উঠে এসেছে। তবে এবার এই সমস্যার সমাধান হতে চলেছে বলে মনে করছেন কলকাতা পুলিশের একাংশ।