বিদ্যুৎ সংযোগ দিয়ে নার্সারির ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে নেওয়া হচ্ছে হাজার হাজার টাকা, অভিযোগের আঙুল তৃণমূলের দিকেই

শহরতলির গুরুত্বপূর্ণ রাস্তার পাশে চওড়া ফুটপাতে দিনের পর দিন চলছে প্রায় ১৬টি নার্সারি। দক্ষিণ শহরতলির পাটুলির ১১০ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত ইস্টার্ন মেট্রোপলিটন বাইপাস লাগোয়া বৈষ্ণবঘাটা দমকল কেন্দ্রের অদূরে এই ধরনের কারবার চলে আসছে দীর্ঘদিন ধরে। এরপর স্বাভাবিকভাবে প্রশ্ন উঠেছে, এই সব নার্সারি বিদ্যুৎ সংযোগ পাচ্ছে কোন সূত্রে। আর এখানেই আঙুল উঠেছে এলাকা সংলগ্ন তৃণমূল কার্যালয়ের দিকে। অভিযোগ, ইউনিট প্রতি ২৫ টাকার বিনিময়ে এই বিদ্যুৎ সংযোগ দিচ্ছে শাসকদলের লোকজন। অর্থাৎ কাঁচা হিসেবে যা দাঁড়ায় তা হল, প্রতি দিন তিন থেকে চার ইউনিট ওঠে নার্সারিগুলি থেকে। অর্থাৎ প্রতিদিন দোকান পিছু ৭৫ টাকা থেকে ১০০ টাকা। মাসে প্রায় ২৫০০ টাকা থেকে ৩০০০ টাকা দোকান পিছু। যা ১৬টি দোকান ধরলে মাসিক ৫০ হাজার টাকার কাছাকাছি। এখানেই শেষ নয়, অভিযোগ, বাড়তি টাকা আদায় করা হচ্ছে বিভিন্ন উপায়ে। এমনকি মাঝে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল এই নার্সারিগুলিতে যে গাছ রয়েছে, সেখানে জল দেওয়ার জন্য আলাদা করে বসানো হয়েছে মিটার। লাগোয়া পুকুর থেকে যে জল তোলা হবে তা মোটর দিয়ে এই গাছগুলিতে জল দেওয়া হবে। সেই মোটরের জন্য পৃথকভাবে মিটার বক্স বসানোর সিদ্ধান্ত কার্যত পাকা হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু পরবর্তীকালে বিতর্ক হতে পারে এই আশঙ্কা করে তা স্থগিত হয়ে যায়। পাশাপাশি এও শোনা যাচ্ছে, তৃণমূলের তরফেই ওই নার্সারিগুলিতে বসিয়ে দেওয়া হয়েছে সাব মিটারও। তবে তা কার অনুমতিতে বা কিসের অনুমতিতে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতেই মুখে কুলুপ এঁটেছেন কার্যালয়ে শাসকদলের কর্মীরাও।
প্রশ্ন উঠছে, আদৌ সিইএসসি থেকে অনুমতি নেওয়া হয়েছে কি না এই বিদ্যুৎ সংযোগের ব্যাপারে। পাশাপাশি এ প্রশ্নও উঠছে যেখানে পেটের দায় ব্যবসা করছেন ওই নার্সারির ব্যবসায়ীরা সেকানে বিদ্যুতের জন্য এতো টাকা কী ভাবে গুণতে হচ্ছে ব্যবসায়ীদের তা নিয়েও।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ফুটপাতে চলাচলের জায়গা রেখেই ছোট গাছ থেকে বড় গাছ, একাধিক রকমের টব, বৃক্ষরোপণের একাধিক যন্ত্রপাতি রাখা হয়েছে ফুটপাতজুড়ে। তাঁরা জানান, নিরুপায় হয়ে এই বিপুল টাকা গুণতে হচ্ছে।
এখানেই বিরোধী শিবিরের প্রশ্ন, যে টাকা এভাবে আয় করছে তার মধ্যে কত টাকা সিইএসসির কাছে যাচ্ছে তা নিয়ে। এদিকে এই ঘটনা কিভাবে পুলিশের নজর এড়িয়ে যাচ্ছে তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। এমনকি, প্রধান মিটার বক্স থেকে সাবমিটার নেওয়ার ব্যাপারে যে ধরনের প্রয়োজনীয় নিরাপত্তাবিধি মানা হয়, তা আদৌ মানা হচ্ছে কিনা সেটাও প্রশ্নচিহ্নের মুখে দাঁড়িয়ে গিয়েছে।
বিরোধীরা শাসকদলের দিকে হাজারো প্রশ্ন তুললেও বিষয়টি জানেন না বলেই দাবি যাদবপুরের তৃণমূল বিধায়ক দেবব্রত মজুমদারের। তিনি বলেন, ‘কারা কীভাবে দিচ্ছে সেটা খোঁজ নিয়ে দেখতে হবে। যে নার্সারিগুলি ওখানে আছে সিইএসসির-ই তো সোজাসুজি কানেকশন দিয়ে দিতে পারে। তবে এর সঙ্গে দলের কোনও সম্পর্কই নেই।‘

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

two × 1 =