দেশের অন্যতম প্রাচীন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে গত সাত মাস ধরে নেই স্থায়ী উপাচার্য। এদিকে গত প্রায় এক মাস নেই অস্থায়ী উপাচার্যও। এ ছাড়া বহু প্রশাসনিক পদে স্থায়ী নিয়োগ হচ্ছে না। সব মিলিয়ে এক অভূতপূর্ব পরিস্থিতি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে, এমনটাই অভিযোগ এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি অর্থাৎ ‘কুটা’-র। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সনাতন চট্টোপাধ্যায় জানান, পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌঁছেছে যে, গত শুক্রবার থেকে রাজাবাজার সায়েন্স কলেজে ইন্টারনেট পরিষেবা বিঘ্নিত। ওই পরিষেবা স্বাভাবিক করার জন্য যে টাকা প্রয়োজন, তা নিয়ে কে সিদ্ধান্ত নেবেন, সে ব্যাপারেও কেউ সিদ্ধান্ত নিতে পারছেন না। ঠিক সময়ে হিসাব জমা দিতে পারা যাবে না, এই আশঙ্কায় আনা যাচ্ছে না বিভিন্ন গবেষণা প্রকল্প। একইসঙ্গে কুটার তরফ থেকে এ অভিযোগও তোলা হয়, প্রায় পাঁচ বছর এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক পদে নিয়োগ হয়নি। অথচ যে শিক্ষকেরা রয়েছেন, তাঁদের মধ্যে থেকেই প্রশাসনিক পদ পূরণ করা হচ্ছে। রাজ্যপালের প্রতিনিধি না থাকায় শিক্ষকদের নিয়োগ ও পদোন্নতির বিষয়গুলিও এগোচ্ছে না।
এরই পাশাপাশি কুটার তরফ থেকে এও জানানো হয়, এই বিষয়গুলি নিয়ে রাজ্যপালের সঙ্গে তিন বার কথা বলতে চেয়ে চিঠি দিয়েও সাড়া মেলেনি। একইসঙ্গে এ অভিযোগও তোলা হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সেনেট, সিন্ডিকেটের কার্যক্রমও গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে হচ্ছে না।
অন্যদিকে, বেহাল অবস্থা যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়েও। আর্থিক ও অন্যান্য অবস্থা নিয়ে সব শিক্ষককে ইতিমধ্যেই ইমেল পাঠানো হয়েছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি অর্থাৎ জুটা-র তরফ থেকে। জানানো হয়েছে, ২০২২-’২৩ শিক্ষাবর্ষে বেতন ছাড়া অন্যান্য খরচের অঙ্ক প্রায় ৪৭ কোটি টাকা। কিন্তু সরকারের কাছ থেকে মিলেছে মাত্র ২২ কোটি। সমিতির অভিযোগ, এমন চলতে থাকলে বিশ্ববিদ্যালয়কে বাজার থেকে ঋণ নিতে হবে। কিছু দিন আগেই উপাচার্য প্রাক্তনীদের কাছে সাহায্যের জন্য আবেদন জানালে রাজ্যের উচ্চশিক্ষা দপ্তর থেকে বলা হয়েছিল, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়কে ছ’কোটি টাকা দেওয়া হচ্ছে। এই প্রসঙ্গে জুটার সাধারণ সম্পাদক পার্থপ্রতিম রায় জানান, আদতে অতিরিক্ত কোনও টাকাই দেওয়া হয়নি। ওই টাকা বাজেটের ভিতরেই ছিল। শিক্ষকদের পদোন্নতি ও নিয়োগে যে আচার্যের প্রতিনিধি প্রয়োজন, তা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় উচ্চশিক্ষা দপ্তরকে জানালেও সেই চিঠি আচার্যের দফতরে কেন পৌঁছচ্ছে না, সেই বিষয়েও প্রশ্ন তুলেছে জুটা।