প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নিজে সিনেমাটির ভূয়সী প্রশংসা করলেও ইতিমধ্যেই, পশ্চিমবঙ্গে ‘দ্য কেরালা স্টোরি’ সিনেমাটির প্রদর্শন নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এরই পাশাপাশি তামিলনাড়ুর হল মালিকরা সিনেমাটির প্রদর্শন বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে ‘ দ্য কেরালা স্টোরি’ বিতর্কের আঁচ এবার পৌঁছে গেল ব্রিটেনেও।
সূত্রে খবর, ব্রিটেনের সিনেমা হলগুলিতেও বাতিল করা হয়েছে ‘দ্য কেরালা স্টোরি’র শো। সিনেমাটি দেখতে চেয়ে আগে থেকে যারা টিকিট কেটেছিলেন, তাঁদের টিকিটের মূল্য ফিরিয়ে দিচ্ছে ব্রিটেনের হলগুলি। এই নিয়ে সিনেমাপ্রেমীদের মধ্যে ক্ষোভ-অসন্তোষও তৈরি হয়েছে।
ব্রিটেনের সংবাদমাধ্যমগুলির প্রতিবেদন অনুযায়ী, ব্রিটিশ বোর্ড অব ফিল্ম সার্টিফিকেশনের পক্ষ থেকে ফিল্মটিকে এখনও সংশায়িত করা হয়নি। আর সেই কারণেই ব্রিটেনে ফিল্মটির মুক্তি পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। জানা গিয়েছে, যাঁরা অ্যাডভান্সড টিকিট কেটেছিলেন, তাঁদের এই বিষয়ে ই-মেল করে জানানো হয়। ই-মেলে জানানো হয়েছে, ‘বিবিএফসি-র পক্ষ থেকে দ্য কেরালা স্টোরি ফিল্মটির বয়সের শংসাপত্র এখনও দেওয়া হয়নি। তাই আপনারা যে বুকিং করেছেন, তা বাতিল করতে হয়েছে। আমরা টিকিটের পুরো দাম ফেরত দেব। এই সমস্যার জন্য আমরা ক্ষমাপ্রার্থী।’
এরই পাশাপাশি বিবিএফসির পক্ষ থেকেও এও জানানো হয়েছে যে, ‘কেরালা স্টোরি’ ফিল্মটি নিয়ে অনেকগুলি শ্রেণিবদ্ধকরণ প্রক্রিয়া চলছে। বিবিএফসি-র পক্ষ থেকে ‘এজ রেটিং’ সার্টিফিকেট এবং কনটেন্ট অ্যাডভাইস দেওয়ার পরই ব্রিটেনের হলগুলিতে ‘কেরালা স্টোরি’ মুক্তির কোনও বাধা থাকবে না।’
সুদীপ্ত সেন পরিচালিত ‘দ্য কেরালা স্টোরি’ ফিল্মটির ট্রেলার প্রকাশিত হয়েছিল ২০২২ সালের ডিসেম্বরে। তারপর থেকেই এই চলচ্চিত্র ঘিরে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। ৫ মে ছবিটি ভারতে মুক্তি পায়। এর নয় দিনের মধ্যেই সিনেমাটি ১০০ কোটি টাকার বেশি ব্যবসাও করে। তবে, এর পাশাপাশি সিনেমাটি নিয়ে শুরু হয় রাজনৈতিক বিতর্কও। কংগ্রেস-সহ বিরোধী শিবির থেকে দাবি করা হয়, ফিল্মটিতে একটি বিশেষ সম্প্রদায়কে নিশানা করা হয়েছে। পাশাপাশি সিনেমাটি প্রদর্শিত হলে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট হতে পারে বলেও দাবি করেন বিরোধীরা।
প্রসঙ্গত, কেরালা স্টোরি ফিল্মটি, কেরলের তিন মহিলার কাহিনি। ফিল্মে দাবি করা হয়েছে, লাভ জিহাদের ফাঁদে ফেলে তাদের ধর্মান্তরিত করা হয়েছিল। তারপর, তাদের সিরিয়া-ইরাকে আইএসআইএস জঙ্গি সংগঠনের যৌনদাসীতে পরিণত করা হয়েছিল। আইআইএস জঙ্গি সংগঠনে মহিলাদের উপর কীভাবে অত্যাচার করা হয়, তা বিশদে দেখানো হয়েছে এই ফিল্মে। একই সঙ্গে দাবি করা হয়েছে, এই ঘটনা কোনও ব্যতিক্রমী ঘটনা নয়। গত কয়েক বছরে কেরালার অন্তত ৩২০০০ মহিলার একই পরিণতি হয়েছে। যদিও, ফিল্ম নির্মাতারা এই তথ্য কোথা থেকে পেয়েছেন তা জানাতে পারেননি।