৩৬ হাজার শিক্ষক-শিক্ষিকার চাকরি বাতিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে শুক্রবার। হাইকোর্টের সেই রায়ের ২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় শুরু হয়েছে বিক্ষোভ। কিসের ভিত্তিতে চাকরি বাতিল করা হল সেই প্রশ্ন তুলে পথে নেমেছেন অনেকেই। এমনকী অ্যাপ্টিটিউট টেস্ট না নেওয়ার যে অভিযোগ উঠেছিল, সেটাও খারিজ করে দিচ্ছে চাকরিহারাদের একটা বড় অংশ। শুক্রবারের এই রায়ের পরই শনিবার সকালেই সল্টলেকে এপিসি ভবনে অর্থাৎ প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের অফিসে পৌঁছে যান অনেকেই। পর্ষদের চেয়ারম্য়ান গৌতম পালের সঙ্গে দেখা করেন তাঁরা।
পর্ষদের অফিস থেকে বেরিয়ে শিক্ষক-শিক্ষিকারা জানান,‘আমাদের অ্যাপ্টিটিউট টেস্ট হয়েছে। না হলে ১০ নম্বরের ইন্টারভিউ-র প্রক্রিয়াটা সম্পূর্ণ হল কীভাবে? আমাদের কল লেটারই সেই অ্যাপ্টিটিউট টেস্টের প্রমাণ।’ একইসঙ্গে তাঁরা এ দাবিও করেন, ইন্টারভিউয়াররা কীভাবে পরীক্ষা নেবেন, তা তাঁদের এক্তিয়ারের মধ্যে পড়ে না। ওই শিক্ষক-শিক্ষিকারা আরও জানিয়েছেন, পর্ষদের তরফ থেকে এখনও কোনও বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়নি, তাই চাকরি বাতিলের কথা মানতে নারাজ তাঁরা। তবে এদিন পর্ষদ সভাপতির সঙ্গে কথা বলে সন্তুষ্ট হতে দেখা যায় বিক্ষোভকারীদের। তাঁদের তরফ থেকে এও জানানো হয়, ‘বোর্ড না বললে আমরা মানতে পারব না।‘ পাশাপাশি এও জানান, ‘পর্ষদ শিক্ষকদের পাশে থাকবে বলেই আশ্বাস দিয়েছেন গৌতম পাল। চাকরিহারাদের জন্য যথাযোগ্য ব্যবস্থা নেবে।’
তবে ৩৬ হাজার নিয়োগ বাতিল হয়ে গেলে রাজ্যের প্রাথমিক স্কুলগুলি বিড়ম্বনায় পড়বে এটাই স্বাভাবিক। তবে এই প্রসঙ্গে পর্ষদ সভাপতির সোজাসাপ্টা বক্তব্য, ‘রাজ্যের প্রাথমিক শিক্ষাব্যবস্থা এখন গোটা দেশের মধ্যে এক নম্বরে। বিশেষ করে বড় রাজ্যগুলির মধ্যে। অধিকাংশ স্কুলে আরটিই নিয়ম অনুযায়ী পড়ুয়া ও শিক্ষক অনুপাত বজায় রাখা হচ্ছে। কিছু জায়গায় ঘাটতি রয়েছে। সেখানে নতুন নিয়োগ করে ঘাটতি পূরণ করার চেষ্টা চলছে। এখন ৩৬ হাজার শিক্ষকের চাকরি যদি বাতিল হয়, তাহলে শিক্ষাক্ষেত্রের সামগ্রিক ব্যবস্থায় একটি চরম ধাক্কাই কেবল নয়, একটি বিশৃঙ্খলা তৈরি হবে আগামী দিনে।’
একই ছবি দেখা গিয়েছে, শিলিগুড়িতে। সেখানেও বহু শিক্ষক শিক্ষিরা রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন। তাঁরা বলছেন, বোর্ড-চক নিয়ে অ্যাপ্টিটিউট টেস্ট হয়নি ঠিকই, তবে অ্যাপ্টিটিউট টেস্ট হয়েছে অন্যভাবে। এক শিক্ষক জানান, প্রশ্নোত্তরের মাধ্যমে অ্যাপ্টিটিউট টেস্ট নেওয়া হয়েছিল।