কর্নাটক সরকার গঠনে কংগ্রেস এগিয়ে থাকার পরেই শুরু হয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর পদ নিয়ে টানাটানি। কর্নাটকের স্বার্থে প্রশাসনিক প্রধানের পদে সিদ্দারামাইয়াকে চাইছেন ছেলে যথীন্দ্র। আক্ষরিক অর্থে ‘ঝোপ বুঝে কোপ।‘ প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর ছেলের এইরকম এক দাবির পরে কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী পদ দিয়ে শিবকুমার-সিদ্দারামাইয়ার লড়াই নতুন মাত্রা পেতে পারে বলে আশঙ্কা রাজনৈতিক মহলের।
এবার প্রথম থেকে কর্নাটকে নির্বাচনী দৌড়ে এগিয়ে ছিল কংগ্রেস। আর এটা আঁচ করে কয়েকদিন আগেও মুখ্যমন্ত্রীত্বের দৌড়ে নিজেকে এগিয়ে রেখেছিলেন কর্নাটকের প্রাক্তন কংগ্রেসী মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া। এখানে বলে রাখা শ্রেয়, রাজনৈতিক জীবনে এটাই তাঁর শেষ নির্বাচনী প্রতিদ্বন্দ্বিতা বলে ঘোষণা করেছিলেন তিনি।
কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্ব তাঁকেই মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে বেছে নেবেন বলে আশা প্রকাশও করেছিলেন কংগ্রেসের বর্ষীয়ান এই নেতা। শনিবার কর্নাটক বিধানসভার নির্বাচনের ভোটগণনার প্রাথমিক ট্রেন্ডে কংগ্রেস ফেরার ইঙ্গিত মিলতেই, সুকৌশলে সিদ্দারামাইয়ার নামে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে হাওয়ায় ভাসিয়ে দেন ছেলে যথীন্দ্র। কর্নাটকের স্বার্থে তাঁর বাবারই মুখ্যমন্ত্রী হওয়া উচিত বলে দাবি করেছেন তিনি। বিজেপিকে ক্ষমতাচ্যুত করতে কংগ্রেস সবরকমের প্রস্তুতি নিয়েছে বলেও ভোটগণনা শুরুর আগে জানান তিনি। কর্নাটকের পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে সিদ্দারামাইয়াকে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে যথিন্দ্র দাবি করলেও, তা আদৌও সহজ হবে না বলে মনে করছেন রাজনৈতিক মহলের একাংশ। কারণ, সেক্ষেত্রে প্রধান বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেন ডিকে শিবকুমার। তিনি আবার প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতিও। মুখ্যমন্ত্রী ইস্যুতে কংগ্রেসের নির্বাচিত বিধায়করা দুই ভাগে বিভক্ত হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচন নিয়ে জটিলতা তৈরি হলেও, সেক্ষেত্রে রাজস্থানের ফর্মুলা গ্রহণ করতে পারে কংগ্রেস হাইকম্যান্ড। সিদ্দারামাইয়াকে মুখ্যমন্ত্রী এবং শিবকুমারকে উপ-মুখ্যমন্ত্রী করা হতে পারে ‘হাত’ শিবিরের অন্দরে খবর। তবে, এই ফর্মুলা শিবকুমার এবং তাঁর শিবিরের বিধায়করা মেনে নেবেন কিনা, তা নিয়েও প্রশ্ন রয়েই যাচ্ছে।
এবারের কর্নাটক বিধানসভা নির্বাচন সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ ছিল কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গের কাছে। কারণ, কর্নাটক কংগ্রেস সভাপতির গড়। এখানে হারলে, খাড়গের নেতৃত্ব নিয়ে কংগ্রেসের অন্দরে তৈরি হত প্রশ্ন। বিশেষ করে প্রচারের সময় খাড়গে ও তাঁর ছেলের নমোকে নিয়ে মন্তব্য, কংগ্রেসের একাংশ ভালো মনে মেনে নিতে পারেননি। আপাতত সেই লড়াইয়ে শেষ হাসি হাসলেন কংগ্রেস সভাপতিই। মুখ্যমন্ত্রীত্বের দাবিদার নিয়ে সিদ্দারামাইয়া ও শিবকুমারের বিরোধ কিভাবে মেটান, এখন সেটাই খাড়গের কাছে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।