শুধু গরু পাচার-ই নয়, আরও নানা সূত্রে অর্থ আসতো অুব্রতর কোষাগারে, দাবি ইডির

শুধু যে গরু পাচারের টাকাতেই অনুব্রতর লক্ষ্মীলাভ ঘটতো এমনটা নয় বলেই দাবি ইডি-র।টাকা আসতো নানা সূত্র ধরে। আর তাতেই উপছে পড়তো অনুব্রত মণ্ডলের কোষাগার। ইডি-র তরফ থেকে যে সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট দায়ের করা হয়েছে তাতে এমনটাই উল্লেখ করা আছে বলে সূত্রে খবর। অনুব্রতর বিরুদ্ধে ইডির চার্জশিটে এমনই চাঞ্চল্যকর অভিযোগ নিয়ে আনা হয়েছে।পাশাপাশি এও দাবি করা হয়েছে যে, দেহরক্ষী সায়গল হোসেনের মাধ্যমে এই সব টাকা তোলা হত।
ইডি সূত্রে দাবি, সরকারি কাজে বরাত পাইয়ে দেওয়া থেকে জেলা পরিষদের বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা পাইয়ে দিয়ে বছরের পর পর কখনও মোটা টাকা আবার কখনও কমিশন বাবদ টাকা জমা পড়েছে অনুব্রত ভাণ্ডারে। এরপর সেই টাকা পরে পৌঁছে গেছে ঘনিষ্টদের নামে খোলা অ্যাকাউন্টে। এই প্রসঙ্গে ৩ নভেম্বর ২০২২ সালে বীরভূমের এক চাল কল ব্যবসায়ীর বয়ান রেকর্ড করেছে ইডি। সেই তথ্যও তুলে ধরা হয়েছে ইডির এই সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিটে।
চার্জশিটে উল্লেখ করা রয়েছে, ওই চালকল ব্যবসায়ী জানিয়েছেন, ২০০৮ থেকে তিনি অনুব্রত মণ্ডলকে চিনতেন। ২০১১ সালে তৃণমূল কংগ্রেস ক্ষমতায় আসার পর থেকে ঘনিষ্ঠতা বাড়ে। ২০১৪ সাল থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত অনুব্রতর চাল কল ব্যবসা তিনি দেখতেন। ওই ব্যবসায়ী ইডির কাছে দেওয়া বয়ানে তিনি পাশাপাশি এও জানান, জেলা পরিষদের বিভিন্ন প্রকল্পের বরাত পাইয়ে দেওয়া এবং সুযোগ সুবিধা পাইয়ে দিয়ে সায়গল হোসেন টাকা তুলত। অনুব্রত মণ্ডলের নির্দেশে এই টাকা তোলা হয়েছে বলে এমন দাবিও ইডির কাছে করেছেন ওই চাল কল ব্যবসায়ী। একইসঙ্গে এও জানিয়েছেন, কমিশন বাবদ টাকা নেওয়া হয়েছে। আর এই টাকা তুলে অনুব্রতর কাছে পৌঁছে দেওযার কাজ করতেন সায়গল।
পাশাপাশি ইডি-র তরফ থেক এও জানানো হয়েছে যে, শুধু এই ব্যবসায়ী নন, ২০২২ সালের ১২ ডিসেম্বর বীরভূমের এক কন্ট্রাক্টরও একই রকম বয়ান দিয়েছেন ইডির কাছে। তারও উল্লেখ রয়েছে এই সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিটে। তিনি ২০১০ সাল থেকে অনুব্রত মণ্ডলকে চিনতেন। বয়ানে তিনি জানিয়েছেন, সরকারি কাজের বরাত পেতে অনুব্রত মণ্ডলকে কমিশন বাবদ টাকা দিতেন। কাজের ভিত্তিতে ১ থেকে ৫ শতাংশ হারে কমিশন তুলে দিয়েছেন সায়গলের হাতে। এই ব্যবসায়ীও জানিয়েছেন, এই সমস্ত টাকা তোলার দায়িত্ব ছিল অনুব্রত মণ্ডলের দেহরক্ষী সায়গল হোসেনের ওপর।
ইডি সূত্রে দাবি, নগদে এই টাকা নেওয়া হত। পরে অনুব্রতর ঘনিষ্ঠদের নামে খোলা ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ফেলা হত টাকা। যা পরে সরিয়ে নেওয়া হয় সুকন্যার নামে থাকা ফিক্সড ডিপোজিটে। যা থেকেই ইডির দাবি অনুব্রত মণ্ডল যে টাকা তুলতেন তাতে লাভবান হয়েছেন পরিবারের সদস্যরাও।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

fourteen − 5 =